নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
কাজানে ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনার মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে আজ শুরু হচ্ছে ২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপ রাশিয়ার নক-আউট পর্বের লড়াই। ফেভারিট হিসেবে আসর শুরু করা সাবেক দুই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দলের যে কোন একটিকে আজ বিদায় নিতেই হচ্ছে।
দুই দলই তারকা সমৃদ্ধ খেলোয়াড়ে ভরপুর। আর্জেন্টিনা দলে লিওনেল মেসি, অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়াদের আলাদা করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার দরকার হয় না। তেমনি ফ্রান্স দলে রয়েছেন পল পগবা, অঁতোয়ান গ্রিজম্যান, কিলিয়ান এমবাপেদের মত তারকারা। নক-আউট পর্বের শুরুতেই তাই জমজমাট ম্যাচের প্রত্যাশা করতেই পারে ফুটবলপ্রেমীরা।
ফেভারিট তকমা গায়ে মাখলেও কোন দলই এখন পর্যন্ত প্রত্যাশামত খেলা উপহার দিতে পারেনি; কোন তারকাও সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি নিজেকে। দুটি জয় ও এক ড্রয়ে ‘সি’ গ্রæপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলয় নাম লেখায় ফ্রান্স। যদিও এই পর্বে কঠিন কোন প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হতে হয়নি তাদের; এরপরও দিদিয়ের দেশমের দল সেভাবে নিজেদের মেলে ধরতে পারেনি। আসরের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাদের জয় ছিল অনেকটা ভাগ্যপ্রসুত। গ্রিজম্যানের পেনাল্টি ও প্রতিপক্ষের আত্মঘাতি গোলে তারা জয় পায় ২-১ ব্যবধানের। পেরুর বিপক্ষে জয়টিও ছিল নূন্যতম (১-০) ব্যবধানের। আর গ্রæপের রানার্স আপ হওয়া ডেনমার্কের ম্যাচে তো তারা জালই খুঁজে পায়নি। সেই হিসেবে আজই বিশ্বকাপের আসল পরীক্ষা ১৯৯৮ চ্যাম্পিয়নদের সামনে।
আর্জেন্টিনার দশা অবশ্য তাদের চেয়েও খারাপ। খাঁদের কিনার থেকে ঘুঁরে কোন রকম ৪ পয়েন্ট নিয়ে রানার্স আপ হয়ে শেষ ষোলয় জায়গা করে নেয় লা আলবিসেলেস্তেরা। আরেকটু হলে ব্রাজিল বিশ্বকাপের দুই ফাইনালিস্ট দলেরই বরণ করতে হত একই ভাগ্য। বিশ্বকাপে অভিষিক্ত আইসল্যান্ডের সঙ্গে হোঁচট ও ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে মুখ থুবড়ে পড়ার পর নাইজেরিয়ার বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে নিজেকে বিশ্ববাসীর কাছে আবারো জানান দেন মেসি। বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়ের উপস্থিতিতে বিশ্বকাপও ধরে রাখে রোমাঞ্চ। এই রোমাঞ্চ ধরে রাখতে আজও জিততে হবে মেসির আর্জেন্টিনাকে।
বিশ্বকাপের ইতিহাস বলছে ফ্রান্সের কাছে কখনো হারেনি আর্জেন্টিনা। দুইবারের (১৯৩০ ও ১৯৭৮) সাক্ষাতে প্রতিবারই ফরাসিদের হারিয়ে ফাইনাল পর্বে ওঠে আর্জেন্টিনা। ১৯৭৮ সালে ভগ্নদশায় টুর্নামেন্ট শুরু করা আজেন্টিনার হাতে ওঠে প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা। সব মিলে দুই দেশ মুখোমুখি হয়েছে ১১বার; ছয়বার জিতেছে আর্জেন্টিনা, দুবার ফ্রান্স, বাকি তিনটি ড্র। আটবারই কোন গোল করতে পারেনি ফ্রান্স। বিশ্বকাপে গত ৪০ বছরে আটবার লাতিন দলের মুখোমুখি হয়ে কোনবারই হারেনি ফ্রান্স। তাছাড়া দক্ষিণ আমেরিকান দলের বিপক্ষে ৭৫৭ মিনিট ধরে কোন গোলও খায়নি ফরাসিরা।
ডেনমার্কের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে বেশ ক’জন তারকা খেলোয়াড়কে বিশ্রাম দিয়েছিলেন দেশম। তিনিসহ দলের সকলেই ভালো করেই জানেন আর্জেন্টিনার বিপক্ষে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে তার দরকে। বিশেষ নজর রাখতে হবে মেসির দিকে। ডেনমার্কের ম্যাচে বিশ্রামে থাকা দলের সেন্টার ব্যাক উমতিতি এই ম্যাচে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে। উমতিতি আবার মেসির বার্সেলোনা সতীর্থ। ফুটবল জাদুকরের নাড়ি নক্ষত্র ভালোই জানা তার। তিনিও জানেন আর্জেন্টিনাকে আটকাতে হলে মেসিকে আটকাতে হবে। বার্সা সতীর্থ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি তাকে (মেসিকে) প্রতিদিনই দেখি। তাকে থামানো খুব কঠিন। তার অসাধারণ দক্ষতা আছে। আমরা তাকে থামানোর চেষ্টা করব। তবে এই আর্জেন্টিনা দলে সেই একমাত্র খেলোয়াড় নয়, তাদের আরো স্ট্রাইকার আছে।’ দলের তারকা মিডফিল্ডার পল পগবাও আশাবাদী দলকে নিয়ে, ‘এটা খুবই কঠিন, কিন্তু আমরা এটা করে দেখাবো।’
আজেন্টিনার সামনে তারকা খেলোয়াড়দের বিশ্রামে রাখার সুযোগ ছিল না। আজকের ম্যাচেও জটিল কিছু হিসাব নিয়েও ভাবতে হবে কোচ হোর্হে সাম্পাওলিকে। মেসিসহ দলের অধিকাংশ তারকা খেলোয়াড়দের নামের পাশে যুক্ত হয়েছে হলুদ কার্ড। এই ম্যাচে আবারো একই দন্ডের মুখোমুখি হলে কোয়ার্টার ফাইনালে তারা খেলতে পারবেন না। মেসির সঙ্গে এই তালিকায় রয়েছে বানেগা, মাচেরানো, মার্কাদো ও ওটোমেন্ডির নাম। ফিফার নতুন নিয়ম অনুযায়ী কোয়ার্টার ফাইনালের আগে কোন খেলোয়াড় দুবার হলুদ কার্ড পেলে তারপরের ম্যাচে তাকে বেঞ্চে বসে থাকতে হবে। এ নিয়ম চলবে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত। এই পর্ব থেকে আবার নতুন হিসাব।
দলের ভিতরে ও বাইরে কঠিন সময় পার করেছে আর্জেন্টিনা। তবে এই ম্যাচেই তাদের হবে আসল পরীক্ষা। দলের মিডফিল্ডার জিওভানি লো সেলসো মনে করেন এই বিষয়গুলোই দলকে সুসংগঠিত হতে ও আরো শক্তিশালী হতে উদ্বুদ্ধ করবে, ‘অনেক ভোগান্তির পর, আমি বিশ্বাস করি দলের মধ্যে একতা আরো বাড়বে যা আমাদের করবে আরো শক্তিশালী। ফ্রান্সের বিপক্ষে কঠিন ম্যাচে যা আমাদের ভিন্নভাবে সাহায্য করবে।’
ফ্রান্সের হয়ে আজ সর্বোচ্চ (৮০) ম্যাচ পরিচালনার রেকর্ড গড়বেন দেশম। দিনটা রাঙিয়ে রাখার দারুণ সুযাগ ফরাসি কোচের সামনে। শেষে আরো একটি পরিসংখ্যান জানিয়ে রাখিÑ বিশ্বকাপের নক-আউট পর্বে কোন গোল নেই মেসির। ফ্রান্সের জন্য এটা ভালো নাকি মন্দ খবর তা সময়ই বলে দেবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।