পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আসলাম পারভেজ, হাটহাজারী থেকে : এশিয়াখ্যাত প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে ব্যাপক দূষণ ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিন ভেসে উঠছে অসংখ্য মরা মাছ আর জলজ প্রাণি। এতে করে মাছের ব্যাংক খ্যাত হালদা মাছ শূণ্য হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্য। টানা ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের সাথে বিভিন্ন কারখানার বর্জ্য মিশে বিভিন্ন শাখা খাল দিয়ে হালদা নদীতে মিশে যাচ্ছে। এতে পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। পানি দূষিত হয়ে নদীর নানা প্রজাতির মাছ মরে ভেসে উঠছে। হাটহাজারী উপজেলা অংশে নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে এসব মরা মাছ ভেসে উঠতে দেখা যায়। এ অবস্থায় হালদার জীব-বৈচিত্র নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন হালদা বিশেষজ্ঞ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরীয়া। এদিকে আজ (শনিবার) উপজেলার মধুনাঘাট এলাকায় ‘হালদা বাঁচাও চট্টগ্রাম বাঁচাও’ এই ¯েøাগানে শিল্পবর্জ্যের আগ্রাসনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ হওয়ার কথা রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, হালদার সাথে সংযুক্ত ছোট বড় ছড়া-খাল গুলোতে দীর্ঘ দিন ধরে জমে থাকা বিভিন্ন কারখানার বর্জ্য, বিষাক্ত পানি ও আর্বজনা পাহাড়ি ঢল ও বন্যার পানির সাথে মিশে হালদায় প্রবেশ করায় নদীতে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। নদী পাড়ের জেলে ও মা-মাছের ডিম সংগ্রহকারীরা বলছেন, কারখানা বর্জ্যে হালদা দূষিত হচ্ছে। মৎস্য ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণে এসব কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য নিষ্কাসনের ব্যবস্থা না করে সরাসরি বিভিন্ন ড্রেন ও খাল গুলোতে ফেলার কারণেই প্রতিনিয়তই হালদা বিপর্যয়ের শিকার হচ্ছে। বন্যার পানির সাথে এই অঞ্চলের বিভিন্ন কারখানার বর্জ্য বিভিন্ন শাখা খাল হয়ে হালদা নদীতে গিয়ে পড়ে। এ কারণে গত কয়েক দিন নদীর বিভিন্ন স্থানে চিংড়ি, কাতাল ও রুই মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মরে ভেসে উঠেছে।
উপজেলার মার্দাশা, রামদাইশ্যা হাট, আমতুয়া, সিপাহীর ঘাট, আজিমের ঘাট ও গড়দুয়ারাসহ নদীর বিভিন্ন মোহনা ও নদীর পাড়ে পাড়ে মরা মাছ ভেসে উঠছে। হালদা নদীর সাথে সংযুক্ত খন্দকিয়া, খাটাখালী, মাদারি খালসহ বিভিন্ন শাখা খাল দিয়ে এসব দূষিত বর্জ্য নদীতে পড়ছে বলে জানা গেছে। তবে হালদা পাড়ের লোকজন বলছেন, হাটহাজারীর নন্দীরহাটের এশিয়ান পেপার মিলস ও একটি টায়ার কারখানার বর্জ্য সবচাইতে বেশি। এসব কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যর কারণে বিভিন্ন এলাকার জমিতে ধান ও শাক-সবজিও চাষ করা যাচ্ছে না। এসব বর্জ্য বিভিন্ন মাধ্যমে হালদা নদীতে পড়ে নদীর পানি দূষিত করছে।
হাটহাজারী উপজেলার গড়দুয়ারা এলাকার মৎস্য চাষী ও প্রতি মৌসুমে ডিম সংগ্রহকারী মোঃ শফি বলেন, গত কয়েকদিন নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে নানা প্রজাতির মাছ মরে ভেসে উঠতে দেখা গেছে। বিভিন্ন কারখানার বর্জ্যর কারণে নদীর পানি দূষিত হয়ে এসব মাছ মারা যাচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
হাটহাজারী উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আজাহার উদ্দিন বলেন, গত কয়েক দিন হালদা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে মাছ মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি এবং আমি নিজে গিয়ে দেখেছি নদীতে মাছ মরে ভেসে উঠছে। তবে কি কারণে নদীর বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মরে ভেসে উঠছে তা তিনি জানাতে পারেনি। তিনি বলেন, আজ শনিবার চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও মৎস্য বিশেষজ্ঞরা এসে হালদা নদীর পানি পরীক্ষা করে দেখবেন।
এদিকে হালদা বিশেষজ্ঞ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরীয়া বলেন, বন্যার পানির সাথে মিশে বিভিন্ন কারখানার বর্জ্য গিয়ে হালদা নদীতে পড়ার কারণে নদীর পানি দূষিত হয়ে এসব মাছ মারা যেতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।