Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মানবিজে কুর্দিবিরোধী নতুন অভিযান

| প্রকাশের সময় : ২০ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম


ইনকিলাব ডেস্ক : সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় আলেপ্পো প্রদেশের মানবিজ শহরের উপকন্ঠজুড়ে টহল দেয়া শুরু করেছে তুর্কি বাহিনী। চলতি মাসের শুরুর দিকে তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী মানবিজ থেকে কুর্দি যোদ্ধাদের প্রত্যাহারের বিষয়ে সম্মত হয়েছিল। এরপর, সোমবার টহল শুরু করার ঘোষণা শোনা যায়। প্রসঙ্গত, তুরস্ক কুর্দি যোদ্ধাদের সন্ত্রাসী হিসেবে বিবেচনা করে। খবরে বলা হয়, সোমবার মানবিজ ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় কুর্দি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে নতুন অভিযান শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে তুর্কি সেনাবাহিনী। গত দুই বছরে সিরিয়ায় চালানো বিভিন্ন অভিযানে এই অঞ্চলগুলোতে বেশ প্রভাব সৃষ্টি করেছে তুরস্ক। এক টুইটে সেনাবাহিনী জানায়, পূর্বে সম্মত হওয়া মানবিজ রোডম্যাপ এন্ড প্রিন্সিপালস অনুসারে, তুর্কি সশস্ত্র বাহিনী ও মার্কিন সশস্ত্র বাহিনীর সেনারা মানবিজ ও (তুরস্ক- নিয়ন্ত্রিত) এলাকার মধ্যকার রেখায় স্বাধীনভাবে টহল কার্যক্রম শুরু করেছে। এ বিষয়ে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এক সমাবেশে দেয়া ভাষণে বলেন, আমরা আগেই বলেছি যে, ওই সন্ত্রাসী সংগঠনটি মানবিজ ছেড়ে যাবে। আমরা মানবিজে টহল অভিযান শুরু করা নিয়ে কথা বলেছি। তুর্কি মানবিজ ও তুরস্ক-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ১৯০জন সেনা মোতায়েন করেছে। ৫ জুলাইয়ের মধ্যে সেখানে আরো সেনা মোতায়েন করা হবে। অপর এক খবরে বলা হয়, পূর্ব সিরিয়ায় সরকারপন্থী সেনাঘাঁটিতে এক বিমান হামলায় অন্তত ৫০ জন সেনা নিহত হয়েছে। নিহত সেনাদের বেশির ভাগই বিদেশি বলে জানা গেছে। দামেস্ক এ হামলার পেছনে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের প্রতি অভিযোগের তীর নিক্ষেপ করলেও তারা এ হামলা চালানোর কথা অস্বীকার করেছে। পূর্বাঞ্চলীয় আল হারি শহরটি বাশার সমর্থক আঞ্চলিক মিলিশিয়াদের নিয়ন্ত্রণে ছিল, সেখানে হামলাটি পরিচালিত হয়। ব্রিটেনভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা দ্য সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, সা¤প্রতিক সময়ের সবচেয়ে ভয়াবহ এ হামলায় অন্তত ৫২ জন সরকার সমর্থক সেনা নিহত হয়েছে। সংস্থাটির প্রধান রামি আবদেল রাহমান বার্তা সংস্থাকে জানান, ‘নিহতদের মধ্যে রয়েছে অন্তত ৩০ জন ইরাকি ও ১৬ জন সিরীয় সেনা। এছাড়া রয়েছে সরকার অনুগত মিলিশিয়া সদস্য ও তাদের সেনারা।’ নিহত অপর ছয় সেনার জাতীয়তা নিশ্চিত করা যায়নি বলে জানান সিরিয়ান অবজারভেটরি প্রধান। শহরটিতে ইরাকি, ইরানি, লেবাননি, এমনকি আফগান যোদ্ধারা দায়িত্ব পালন করছিল। আবদেল রাহমান আরো জানান, কিছু আহত যোদ্ধাকে নিকটস্থ আলবু কামাল শহরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং কিছু সেনা ইরাক সীমান্ত পার হয়েছে। দেইর এজজোহরের একটি সামরিক সূত্র এএফপিকে বলেন, যুদ্ধবিমানগুলো ‘আল-হারির যৌথ ইরাকি-সিরীয় অবস্থানে’ হামলা চালিয়েছে। হামলা বিষয়ে মার্কিন জোটের প্রেস অফিস জানায়, তারা জেনেছে যে শহরটিতে বিমান হামলায় সেনারা হতাহত হয়েছে। তবে হামলায় সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি তারা অস্বীকার করেছে। মানবিজ ২০১৬ সালের আগ পর্যন্ত আইএসের নিয়ন্ত্রণে ছিল । তবে ২০১৬ সালে মার্কিন সমর্থিত সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্স (এসডিএফ) আইএসের কাছ থেকে শহরটি পুনর্দখল করে। সেসময় এসডিএফের একটি বড় অংশ ছিল-কুর্দিশ পিপল’স প্রটেকশন ইউনিটসের(ওয়াইপিজি)- সদস্য দিয়ে তৈরি। মানবিজ থেকে কুর্দি যোদ্ধাদের সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে সম্মত হওয়ার ঘোষণা দেন তবে তুরস্ক ওয়াইপিজি’কে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার’স পার্টি (পিকেকে) সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে। উল্লেখ্য, তুরস্কে পিকেকে’কে একটি অবৈধ দল হিসেবে ঘোষিত। দেশটিতে পিকেকে ও ওয়াইপিজি, উভয় সংগঠনকেই সন্ত্রাসী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু কুর্দি যোদ্ধাদের প্রতি মার্কিন সমর্থন থাকার বিষয়টিতে ক্ষুব্ধ হয় তুর্কি। তারা সিরিয়ার আফরিনে অভিযান চালানোর হুমকি দেয়। এতে করে সেখানে অবস্থানরত মার্কিন সেনাদের সঙ্গে তাদের সংঘাতে জড়ানোর সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। তবে ৪ই জুন উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে এক বৈঠক শেষে তারা ঘোষণা দেয় যে, মানবিজ থেকে কুর্দি যোদ্ধাদের সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে তারা সম্মত হয়েছে। এর একদিন পরেই মানবিজ থেকে তাদের সামরিক উপদেষ্টাদের সরিয়ে নেবার ঘোষণা দেয় ওয়াইপিজি। এএফপি, আল-জাজিরা।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ