বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা বিনিময়ে দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন জোরালো করার তাগিদ দিয়েছেন বিএনপি নেতারা। কর্মীরা চান দেশনেত্রীর মুক্তির দাবিতে জোরদার আন্দোলন। নেতারাও বললেন প্রস্তুতি নিন, সময় হলে আন্দোলনের ডাক আসবে। চেয়ারপার্সন কারাগারে এ কারণে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ে জমকালো আয়োজন ছিলনা। তবে নেতাদের বাসাবাড়িতে কমতি ছিলনা নেতাকর্মী আর সমর্থকদের। আপ্যায়নের ব্যবস্থা ছিল সবার জন্য। ঈদের দিন থেকে শুরু করে নেতাদের বাসাবাড়িতে নেতাকর্মীরা দলে দলে ভিড় করছেন। এ সুযোগে নেতারাও আগামী দিনের আন্দোলন এবং নির্বাচন সম্পর্কে দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। নেতাদের কেউ কেউ নিজ নিজ এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন করছেন গণসংযোগ। এতে করে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হচ্ছেন, সুদৃঢ় হচ্ছে সাংগঠনিক ভিত্তি।
ঈদের পরদিন ঐতিহ্যবাহী মেজবানের আয়োজন করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা চট্টগ্রামের বিএনপি নেতাদের দীর্ঘদিনের রীতি। তবে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দি থাকায় এবার সেই রীতিতে কিছুটা হলেও ভিন্নতা এসেছে। আয়োজন থাকলেও ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ে প্রাধান্য পেয়েছে খালেদা জিয়ার কারামুক্তির ইস্যু। নেতারা কর্মীদের কাছে পেয়ে চেয়ারপার্সনের কারামুক্তির আন্দোলন জোরালো করার তাগিদ দিয়েছেন, দিকনির্দেশনাও দিয়েছেন। ঈদের পরদিন বিএনপি নেতাদের বাসায় খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজনও করা হয়।
ঈদুল ফিতরের পরদিন নেতাকর্মী, সমর্থকদের ভিড় লেগে যায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নগরীর মেহেদিবাগের বাসায়। নগরীর কাট্টলীর পিত্রালয়ে ঈদের দিনটি কাটিয়ে পরদিন মেহেদিবাগের বাসায় আসেন তিনি। নেতার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে প্রতিবছরের মতো এবারও লোকে লোকারণ্য হয় তার বাসভবন। সেখানে নেতাকর্মীদের জন্য আপ্যায়নের ব্যবস্থা ছিল। এ প্রসঙ্গে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এটা আমার দীর্ঘদিনের পারিবারিক ট্র্যাডিশন। কাউকে বলতে হয় না। সবাই ঈদের পরদিন বাসায় চলে আসেন। এবার নেতাকর্মীদের আসাটা আমার কাছে বেশি গুরুত্ববহ। কারণ আমাদের নেত্রী জেলে। সরকার বিএনপি নেত্রীকে জেলে রেখে একটা নির্বাচন করে ফেলতে চাইছে। যদিও আমাদের নেতাকর্মীরা কখনোই সেই নির্বাচন হতে দেবে না, তবুও তাদের সংগঠিত করে দিকনির্দেশনা দেওয়ার একটা সুযোগ পেয়েছি। নেত্রীকে মুক্ত করতে হবে। আরেকটি ৫ জানুয়ারি মার্কা নির্বাচন হতে দেওয়া যাবে না। এসব বিষয়ে কর্মীদের মনোভাবও জানতে পারছি।
দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের ভিআইপি টাওয়ারের বাসায়ও ছিল নেতাকর্মীদের ভিড়। প্রতিবার তিনি মেজবানের আয়োজন করলেও এবার তা বাদ দিয়ে চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির জন্য দোয়া মাহফিল ও এতিমদের জন্য খাবার বিতরণ করেছেন। তবে বাসায় যারা এসেছেন তাদের কাউকেই খালিমুখে যেতে দেননি তিনি। সবার জন্য ছিল আপ্যায়নের ব্যবস্থা। আবদুল্লাহ আল নোমান সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের নেত্রী জেলে। নেতাকর্মীদের মন ভালো নেই। এই অবস্থায় মেজবানের আয়োজন করতে মন সায় দেয়নি। তারপরও নেতাকর্মীরা বাসায় আসছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলছি। নেত্রীকে মুক্ত করতে হলে রাজপথের বিকল্প নেই, সেটা তাদের বলছি।
বেগম জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল হয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের চট্টশ্বেরী রোডস্থ বাসভবন ডালিয়া কুঞ্জ প্রাঙ্গণে। ঈদ পুনর্মিলনীর অনুষ্ঠানের পরিবর্তে এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সকাল থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধিগণ, শিক্ষক, শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মী, বুদ্ধিজীবি, ব্যবসায়ী, সমাজকর্মী, ওলামা মাশায়েখসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ আসেন। মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, সরকার আদালত ও প্রশাসনকে ব্যবহার করে বেগম খালেদা জিয়ার কারামুক্তিকে বিলম্বিত করছে। হাইকোর্টের জামিন দেওয়ার পরেও সুপ্রিমকোর্টের ৭৫ উর্ধ্ব একজন মহিলার জামিন বাতিল নজিরবিহীন বেগম গুরুত্বরও অসুস্থ থাকা স্বত্তেও তাঁকে নুনতম চিকিৎসা সেবা নিতে দিচ্ছে না। কারাগারে অন্তরীন রেখে মানসিক নির্যাতন চালানে হচ্ছে। মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন এবার ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের বদলে বেগম খালেদা জিয়ার কারা ও রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল এবং মেজবানের আয়োজন করেন। সেখানে মহানগর বিএনপি, অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শরিক হন। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দি হয়ে আছেন। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক। বেদনা নিয়েই আমরা ঈদের নানা অনুষ্ঠান পালন করছি। একইসঙ্গে আমরা শপথ নিচ্ছি, দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে আমরা আমাদের নেত্রী গণতন্ত্রের মাকে কারামুক্ত করব। নগরীর বাটালি রোডে নিজ বাসায় ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের আয়োজন করেছেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।