রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
কলারোয়ায় গুরুতর অনিয়ম ও সীমাহীন দুর্নীতির মাধমে আধুনিক চাষাবাদ সম্প্রসারণে প্রদর্শনী খামারে বরাদ্ধ রাজস্ব খাতের হাজার হাজার টাকা লোপাট করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, খাদ্যে স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে সরকারি সহায়তায় কৃষি গবেষণাগারে উচ্চ ফলনশীল জাতের খাদ্য শস্যের নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন করা হচ্ছে। এসব উচ্চ ফলনশীল জাত চাষাবাদে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ কৃষকদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করে। প্রশিক্ষণ লুদ্ধ জ্ঞান বাস্তবে প্রয়োগের জন্য কৃষকদের সংশ্লিষ্ট ফসলের প্রদর্শনী খামার স্থপানে আর্থিক সহায়তা করা হয়। ফসল ভেদে প্রদর্শনী খামার ৫০ শতক বা ৩৩ শতক বা ২.৪৭ শতক হয়ে থাকে। প্রদর্শনী খামারে বীজ, বিভিন্ন প্রকার সার, পরিচর্যা, পরিবহন, বীজ সংরক্ষণসহ নগদে আনুসঙ্গিক খরচ প্রদান করে থাকে। তবে ফসল ভেদে এই খরচের হার ভিন্ন হয়ে থাকে। কলারোয়ায় দূর্নীতিবাজ কৃষি কর্মকর্তারা চাষীদের প্রদর্শনী স্থাপনের জন্য প্রদত্ত সরকারি অর্থ বিভিন্ন অপকৌশলে লোপাট করছে।
সরেজমিনে ১নং জয়নগর ইউনিয়নের গাজনা মাঠে দেখা যায়, ওফাপুর গ্রামের মহম্মদ ফকিরের পুত্র মশিয়ার ফকির ২৯ শতক মুগ ডাল চাষ করেছে। আর এই ক্ষেতে গাজনা গ্রামের গোলাম সরোয়ারের নামে ৫০ শতক মুগ চাষের কৃষি বিভাগের সাইন বোর্ড ঝুলানো রয়েছে। মশিয়ার ফকির জানায়, গোলাম সরোয়ার তাকে ৪ কেজি মুগ বীজ ও কয়েক কেজি সার ছাড়া তাকে কোন টাকা প্রদান করেনি। বোয়ালিয়া মাঠে একটি ৭শতক জমিতে মুগ চাষ করা হয়েছে। সেই জমিতে শাহিদা বেগমের নামে ৫০ শতকে মুগ চাষের কৃষি বিভাগের সাইন বোর্ড ঝুলানো হয়েছে। বোয়ালিয়া গ্রামের মেম্বর নজরুল জানায়, ৪০’শতক জমিতে মুগ বোনার ১/২ দিন পরে বৃষ্টিপাতে তার ক্ষেতে কোন চারা গজায় নি। তাকে ৮ কেজি বীজ, ২০ কেজি সার ও দেড় হাজার টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু স্থানীয়রা জানায়, নজরুল মেম্বর মুগ চাষ করেনি এবং চাষের সময় কোন বৃষ্টিপাত হয়নি। এরকম বিভিন্ন কৌশলে মুগ চাষে প্রতি ৫০ শতকের প্রদর্শনীতে আর্থিক সহায়তার ৪,৬৪০ টাকা লোপাট হয়ে গেছে। সোনাবাড়িয়া গ্রামের রশিদ জানায়, কলারোয়া হাসপাতালের সাবেক ক্যাশিয়ার মুনছুর আলী সোনাবাড়িয়া হাইস্কুলের জমি লীজ নিয়ে ভূট্টা চাষ করেছে। মুনছুর ক্যাশিয়ারের কেয়ার টেকার সৈয়দ আলীর ভাই শওকাত, পাশবর্তী ইব্রাহিম এবং তার কাছ থেকে ছবি, আইডি কার্ডের ফটোকপি ও ব্যাংক একাউণ্ট নাম্বার চেয়ে নেওয়া হয়। পরে ভুট্টা ক্ষেতে তাদের নামের সাইন বোর্ড দেখে তেমন সন্দেহ করেনি। কিন্তু মুনছুর ক্যাশিয়ারের কেয়ার টেকার সৈয়দ আলী তাদের একাউণ্ট থেকে টাকা তুলে দেওয়ার কথা বললে তাদের সন্দেহ হয়। একই গ্রামের ইব্রাহিম জানায়, গত ২ বছর এই জমিতে মুনছুর ক্যাশিয়ার ভূট্টা চাষ করছে আর ক্ষেতে কামলা খাটার সুবাদে তাদের নামে ভূট্টা চাষের সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে সরকারি সাহায্য আত্মসাত করা হয়েছে। কেয়ার টেকার সৈয়দ আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানায়, ক্যাশিয়ারের কথা মত সে কাজ করেছে। এদিকে বোয়ালিয়া মাঠের ভূট্টা চাষী শাহাপুর গ্রামের সোহান জানায়, ভূট্টা চাষে কৃষি বিভাগ ৮০ কেজি ইউরিয়া, ৪০ কেজি ফসপেট, ৩২ কেজি পটাশ, ২ কেজি দস্তা, ২ কেজি বোরন, ৮ কেজি সালফার এবং ১৫০০ টাকা দিয়েছে। তবে কোন মাঠ দিবসে তাকে ডাকা হয়নি। কিন্তু সোহানকে প্রদত্ত সার সরকারি বরাদ্দের সংগে সংগতি বিহীন কেন তার কোন জবাব দিতে পারেনি। কৃষি বিভাগের একটি স্বার্থন্বেষী মহলএভাবে পিয়াজ, সরিষা, ভুট্টা, মুগসহ বিভিন্ন প্রদর্শনী খামারে বরাদ্ধ হাজার হাজর টাকা লোপাট করেছে বলে সুত্র জানায়। কলারোয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহসিন আলী বলেন, বিষয়টি না দেখে বুঝে কোন মন্তব্য দেওয়া সম্ভব নয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।