বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
স্টাফ রিপোর্টার : অসুস্থ খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সরকার ‘সময়ক্ষেপন’ করছে অভিযোগ করে বিএনপি বলেছে, ‘ইউনাইটেড হাসপাতালেই তার চিকিৎসার ব্যবস্থা নিন।’ সন্ধ্যায় এক ইফতার অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের প্রতি এই আহবান জানান। তিনি বলেন, দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইউনাইটেড হাসপাতালে তার চিকিৎসা ব্যবস্থা হলে যাবতীয় খরচ দল বহন করবে। পরিবার থেকে বলা হয়েছে তার চিকিৎসার সব ব্যয় পরিবার থেকে বহন করা হবে। এক্ষেত্রে বিলম্ব করার অর্থই হচ্ছে যে, দেশনেত্রীর জীবন একটা হুমকির সম্মুখীন হওয়া। ‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ইউনাইটেড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহন করবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমইউ) চিকিৎসা নিতে খালেদা জিয়ার অনাগ্রহের পর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালে বক্তব্যের নাকচ করে দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা খুব সুনির্দিষ্টভাবে বলেছি, যিনি রোগী তার আস্থার ব্যাপার আছে। আমরা পরিস্কার করে বলতে চাই, জেলকোডের কোথাও বলা নেই যে, শুধুমাত্র সরকারি হাসপাতালেই চিকিৎসা করতে হবে। সেজন্য দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ইউনাইটেড হাসপাতালে দেশনেত্রী চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।’ দেশের বর্তমান অবস্থাকে ‘ভয়াবহ দুঃসময়’ অভিহিত করে এ থেকে উত্তরণে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে সকল গণতান্ত্রিক দল ও শক্তির এক হওয়ার আহবান জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, দেশনেত্রী কারাগারে যাওয়ার আগে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছিলেন। সেই জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। এজন্য সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও সকল মানুষকে এক করে এই ঐক্য গড়ে তুলে হবে। ‘ আমি বলতে চাই, দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে হলে, দেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হলে আজকে জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নাই। এই ঐক্য সৃষ্টি করে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদের বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের বুকের ওপর চেপে বসা দানবকে সরাতে হবে।’
ফখরুল বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া কোনো কিছুই সম্ভব নয়। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাকে মুক্ত করে এদেশের আমরা অবশ্যই একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে পারবো ইনশালাহ। যেখানে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সেই নির্বাচন হবে। ‘নির্বাচন কমিশন পূনর্গঠন করতে হবে, যে সংসদ আছে তা ভেঙে দিতে হবে এবং নির্বাচনের সময়ে সেনা বাহিনী মোতায়েন করতে হবে।’ মাদক বিরোধী অভিযানের নামে দেশে বিচারবর্হিভুত হত্যার কঠোর সমালোচনা করেন তিনি। থাইল্যান্ডের ব্যাংককে নিজের চিকিৎসা ও লন্ডনে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে দেখা করে মঙ্গলবার দেশে ফেরেন বিএনপি মহাসচিব। বিজয় নগরে হোটেল অরনেটে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক লেবার পার্টির আয়োজনে কারাবন্দি জোট নেত্রী অসুস্থ খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় এই ইফতার মাহফিল হয়। সংগঠনের চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান সভাপতিত্বে ইফতারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর এমাজউদ্দিন আহমেদ, বিএনপির মির্জা আব্বাস, জামায়াতে ইসলামীর আবদুল হালিম বক্তব্য রাখেন। ইফতারে বিএনপির আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, বরকত উল্লাহ বুলু, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, জহিরুল হক শাহজাদা মিয়া, হায়দার আলী, সুজাউদ্দিন, সুকোমল বড়ুয়া, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, আহসান হাবিব লিংকন, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম, জামায়াতে ইসলামীর আবদুল হালিম, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, জাগপার খোন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, খেলাফত মজলিশের মাওলানা শফিউদ্দিন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। লেবার পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফরিদ উদ্দিন, সহ-সভাপতি মো. ফারুক রহমান. মোসলেম উদ্দিন, আমিনুল ইসলাম রাজু, মাহবুবুল ইসলাম খালেদ, আমিনুল ইসলাম, এসএম ই্উসুফ আলী, তানভীর হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা ইফতারে অংশ নেন। ইফতার শুরুর আগে কারাগারে অসুস্থ খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় বিশেষ মোনাজাত হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।