পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সৈয়দ মাহাবুব আহামদ, রাঙামাটি থেকে : চারদিনের টানা বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পার্বত্য জেলা রাঙামাটির জন জীবন। বৃষ্টির তৃতীয় দিনে দুর্গম নানিয়ারচর উপজেলায় পাহাড় ধসে ১১জন নিহত হয়েছে, এর মধ্যে বেশির ভাগ নারী। নিখোঁজ রয়েছে আরো তিনজন। মঙ্গলবার (১২জুন) সকালে নানিয়ারচর উপজেলার পৃথক ৫টি গ্রামে এ পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। গ্রামগুলো হলো-নানিয়ারচর উপজেলার বুড়ীঘাট, ধরমপাশা, আমতলী, বড়পুল ও ছড়াইপাড়া গ্রাম। রাঙামাটি জেলাপ্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ ৮ জন মারা যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকায় রাঙামাটিতে আরো পাহাড় ধসের আশঙ্কা করছে প্রশাসন। গত সোমবার রাতে রাঙামাটি শহরের উন্নয়ন বোর্ড, কাঠালতলী, চম্পক নগর, শিমুলতলী ও আনসার ক্যাম্প এলাকায় পাহাড় ও দেয়ালধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে কোন হতাহত না হলেও বেশ কিছু বসত ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আতঙ্ক দেখা দিয়েছে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত লোকজনদের মধ্যে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে নানিয়ারচরে নিহতরা হলো-বড়পুল পাড়া এলাকায় একই পরিবারের সুরেন্দ্র লাল চাকমা (৪৮), তার স্ত্রী রাজ্য দেবী চাকমা (৪৫) ও মেয়ে সোনালী চাকমা (০৯), হাতিমারা গ্রামের রুমেল চাকমা (১২), ফুল দেবী চাকমা (৩২), ইতি চাকমা (২৪) রীতা চাকমা (১৭) ও রিতান চাকমা (২৫)। অবশিষ্ট তিনজনের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি এর মধ্যে একজন শিশু। তবে তারা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র। এ দিকে স্থানীয় সূত্রগুলো দাবি করেছে আরো তিনজন নিখোঁজ আছে, তারা মাটি চাপা পড়ে থাকতে পারে বলে স্থানীয়দের ধারনা।
রাঙামাটির ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জেন ডাঃ নিহার রঞ্জন জানান, নানিয়ারচর উপজেলায় পাহাড় ধসের ১১জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। কয়েকজনকে উপজেলা স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়েছে। এখনো উদ্ধার তৎপরতা চলছে। রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক দিদারুল আলম জানান, আমরা উদ্ধারকাজে অংশ নিতে দু’টি টিম ঘটনাস্থলে রওনা করেছি। পাহাড় ধ্বসের কারণে রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা।
রোবার থেকেই রাঙামাটির সাথে চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ির সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে প্রসিদ্ধ সাজেকের উপজেলা বাঘাইছড়ির বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ছোটখাট পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে জেলার কাউখালী, বরকল, কাপ্তাই ও জুরাছড়ি উপজেলায়। রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অন্ততঃ তিনটি স্থান পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় ওই পথ দিয়ে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া গত পাহাড় ধসের পর মেরামত করা বেশ কয়েকটি স্থানে গাছের খুঁটির দেয়া বাঁধ ধসে গেছে। গত দু’দিনে সড়কটির অন্তত ১৬টি স্থানে মাটি ধসে পড়ায় ব্যহত হচ্ছে সড়ক যোগাযোগ। এই পরিস্থিতিতে শহরের ঝুঁকিপূর্ণ বসতি এলাকার লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষে এমন নিদের্শনা জানিয়ে সোমবার সকাল থেকেই মাইকিং করা হচ্ছে। প্রাণহানিসহ ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ঝুঁকিপূর্ন এলাকায় নির্মান করা হয়েছে অস্থায়ী তাবু ও আশ্রয় কেন্দ্র। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে কাউখালী, কাপ্তাই, নানিয়ারচর, জুরাছড়িসহ জেলা সদরে মিলিয়ে মোট ২৭টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান কোয়ালিটি চাকমা জানান, রাতে ভারি বৃষ্টিতে পাহাড় ভেঙ্গে মাটিচাপা পড়ে বুড়িঘাট ইউনিয়নে ছয়জন ও নানিয়ারচর ইউনিয়নে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া টানা বর্ষণে নানিয়ারচর উপজেলার ইসলামপুরে-৪৫টি, বগাছড়িতে-৪২ ও বুড়িঘাটে-একটি স্থানে পাহাড় ধস হয়েছে। এসব এলাকায় মানুষের বাড়ি-ঘরের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে বলে জানান এ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান।
এদিকে কক্সবাজারের মহেশখালীতে পাহাড় ধসে মাটিচাপা পড়ে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে মহেশখালী উপজেলার পানিরছড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম বাদশা মিয়া (৩৫)।
মহেশখালী থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাস জানিয়েছেন, ‘কয়েকদিন ধরে ভারি বর্ষণের কারণে পাহাড় ধসে পড়ে। পাহাড়ের মাটি বাদশা মিয়ার ঘরের ওপর পড়ে। এ সময় ঘটনাস্থলেই বাদশা মারা যান। তবে তার পরিবারের আর কেউ হতাহত হননি।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।