Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বরিশাল নগর ভবন হিসাব শাখা অবরুদ্ধ : বকেয়া বেতন-ভাতা নিয়ে আন্দোলনে ফের উত্তপ্ত

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১২ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ঈদকে সামনে রেখে বকেয়া বেতন ভাতা ও উৎসব ভাতা প্রাদনের দাবিতে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আবারও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বকেয়া ৪ মাসের বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবীতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রোববার নগর ভবনে বিক্ষোভ করেন। এক পর্যায়ে তারা মেয়র আহসান হাবিব কামালকে অবরুদ্ধ এবং হিসাব শাখায় গিয়ে বেতন-ভাতার চেক প্রস্তুত করান। তবে মেয়র কামাল ওই চেকে স্বাক্ষর করেননি। মেয়র কামাল একমাসের বেতন ও ঈদ বোনাস দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে। গতকালও কর্মকর্তা-কর্মচারীগন একইভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
বকেয়া বেতন ও আসন্ন ঈদ উৎসব ভাতা নিয়ে রোববার থেকে নগর ভবন উত্তপ্ত রয়েছে। হট্টগোলের খবর পেয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা নগর ভবনে গেলে তাদের সাথে অনেকটাই অসৌজন্যমূলক আচরন করেন মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী । গতকালও নগর ভবনের হিসাব শাখা ঘেরাও করে রাখেন বেতন বঞ্চিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অপরদিকে উদ্বুত পরিস্থিতি নিয়ে মেয়র গত দুদিনই নগর ভবনে ও তার বাইরেও কাউন্সিলদের নিয়ে একাধীক সভা করেচেন বলে জানা গেছে। যেকেন উপায়েই আজ-কালের মধ্যে একমাসের বকেয়াবেতন ও একটি উৎসব ভাতা দেয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে নগর ভবন কতৃপক্ষ ।
নগর ভবন সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন প্রকল্পের বাবদ সম্প্রতি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে স¤প্রতি ৫৭ কোটি টাকার বরাদ্দ এসেছে। ওই টাকার একটি অংশ দিয়ে বকেয়া ৪ মাসের বেতন, ২২ মাসের প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং ঈদ বোনাস দেবার জন্য দাবি করেন কর্মকর্তা কর্মচারীরা। অপরদিকে বিধি মোতাবেক এটা দেয়া সম্ভব নয় বলে জানালে ক্ষুব্ধ হন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের অভিযোগ, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বঞ্চিত রেখে মেয়র কামাল ২৫ ভাগ কমিশনের বিনিময়ে ঠিকাদারদের বিল দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। এসব উন্নয়ন কাজের বেশীরভাগের নেপথ্যের ঠিকাদার হলেন সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলররা।
আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদের অন্যতম কর শাখার কর্মকর্তা কাজী মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন, প্রভিডেন্ট ফান্ড ও ঈদ বোনাস এবং কাউন্সিলদের বকেয়া সম্মানী দেবার জন্য প্রয়োজন ৮ কোটি টাকা। তারা দাবী করেছিলেন বরাদ্দ হিসাবে পাওয়া ৫৭ কোটি টাকা থেকে ৮ কোটি টাকা এই খাতে ব্যয় করার জন্য। কিন্তু মেয়র ও তার ঘনিষ্ট কাউন্সিলরা এ প্রস্তাবে রাজী না হয়ে পুরো টাকাই ঠিকাদারদের বিল পরিশোধে উদ্যোগ নেন। সাধারন কর্মচারীরা তা টের পেয়ে হিসাব শাখায় গিয়ে ঠিকাদারদের বিল প্রদানের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বাধ্য করেন। কাজী মোয়াজ্জেম বলেন, তারা হিসাব শাখার কর্মচারীদের চাপ প্রয়োগ করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যাবতীয় বকেয়া পরিশোধের চেক প্রস্তুত করালেও মেয়র কামাল চেকে স্বাক্ষর না করায় বেতনবঞ্চিতরা হিসাব শাখা ঘেরাও করে রাখেন।
সিটি মেয়র আহসান হাবিব কামাল এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, নগর ভবনের কাংখিত রাজস্ব আদায় হচ্ছে না। তহবিলে অর্থ নেই। এ অবস্থায় মানবিক দিক বিবেচনায় অন্য তহবিল থেকে টাকা ধার করে ঈদের পূর্ব মুহূর্তে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এক মাসের বকেয়া বেতন এবং ঈদ বোনাস দেয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ৪ মাসের বকেয়া বেতন ও ২২ মাসের প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং ঈদ বোনাস এক সঙ্গে চাইলে কোনটাই দেওয়া যাবেনা। তারা ঝামেলা করলে অন্য তহবিল থেকে ধার করে আনা টাকা ফেরত দিয়ে দেবেন বলেও জানান মেয়র।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ