বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
এ.টি.এম. রফিক/আশরাফুল ইসলাম নূর : দক্ষ সংগঠক, মিশুক সদ্বালাপী নজরুল ইসলাম মঞ্জু আন্দোলন-সংগ্রামে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিয়ে অর্ধযুগেরও বেশি সময়ে খুলনা বিএনপি’র অদ্বিতীয় নেতৃত্বে অধিষ্ঠিত। গত শনিবার নগর বিএনপির এই কাÐারী কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন। গতকাল (রোববার) দলীয় কার্যালয়ে নেতাকর্মী, শুভাকাঙ্খী-হিতাকাঙ্খীদের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন খুলনা-২ আসনের সাবেক ওই সংসদ সদস্য। গঠণতন্ত্রে এক নেতার এক পদ নীতি বাস্তবায়ন করায়; স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে কে হচ্ছেন খুলনা মহানগর বিএনপির পরবর্তী সভাপতি? দলীয় নেতাকর্মীদের পরিসীমা ছাড়িয়ে শুধু রাজনৈতিক অঙ্গন নয়, খুলনার সাধারণ মানুষের মাঝেও কৌতুলের সৃষ্টি হয়েছে; কে হচ্ছে নগর বিএনপির নব পাঞ্জেরী।
দলীয় সূত্রমতে, গত শনিবার নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী যুগ্ম-মহাসচিব পদে ৭জন ও খুলনায় নজরুল ইসলাম মঞ্জুসহ বিভাগীয় পর্যায়ে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ৮জনের নাম ঘোষণা করেন। গত ১৯ মার্চ বিএনপি’র ষষ্ঠ কাউন্সিলে অনুমোদিত সংশোধিত গঠনতন্ত্রে ‘এক নেতার এক পদ’ বিধান সংযুক্তি করা হয়। ফলে অর্ধশতাধিক কেন্দ্রীয় নেতাকে মহানগর ও জেলা কমিটিসহ আরো অনেক পদ ছেড়ে দিতে হবে।
প্রথমেই গত ২ এপ্রিল বিএনপি’র সদ্য পদায়ণ প্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দুই পদ থেকে পদত্যাগ করেন। দলের গঠনতন্ত্রের সংশোধনীতে ‘এক নেতার এক পদ’ সংযুক্তির প্রেক্ষাপটে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বরাবর কৃষক দলের সভাপতি ও ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি’র সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ পত্র জমা দেন তিনি। পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব হওয়ার পর তিনি জানিয়েছিলেন, অচিরেই মূল পদটি রেখে বাকিগুলো ছেড়ে দিবেন। এসময় নবনিযুক্ত মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, আমিই এক নেতার এক পদ বাস্তবায়নের সূচনা করলাম। গঠণতন্ত্র অনুসরণ করে বিএনপি মহাসচিবের দেখা পথে হাঁটলে সদ্য মনোনীত যুগ্ম-মহাসচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদকরাও একক পদে থাকবেন এমনটি প্রতীয়মান। ফলে রাজনৈতিক ও সচেতন সমাজের মধ্যে কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে, বিএনপি অধ্যুষিত জনপদ খ্যাত খুলনা মহানগরীতে কে হচ্ছেন দলটির অভিভাবক?
দলীয় নেতাকর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দল পুর্নগঠিত হলে সংগঠন অবশ্যই শক্তিশালী হবে। আগামী আন্দোলন-সংগ্রামে অপ্রতিরোধ্য শক্তি সঞ্চারিত হবে। ত্যাগী নেতাকর্মীদের কমিটিতে জায়গা হবে, নেতাকর্মীদের কলেবর বড় হবে। বর্তমান সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদায়ণ প্রাপ্ত হওয়ায় নগর বিএনপি’র সভাপতির পদ শূন্য হবে। সে ক্ষেত্রে সৎ, ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতৃত্ব চাইছেন তৃণমুল নেতাকর্মীরা। সে হিসেবে নগর বিএনপির সভাপতি’র পদে আলোচনায় আসছে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি ও সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহারুজ্জামান মোর্ত্তজার নাম। দু’জনই সরকার বিরোধী আন্দোলনে থাকায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় কারাগারে রয়েছেন। দু’জনই বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। কারাবন্দী নেতাদের সাথে এবিষয়ে কথা হয়নি। তবে তাদের ঘনিষ্ঠ সূত্র নিশ্চিত করেছেন, দু’জনই সভাপতি পদ প্রার্থী। এদিকে, নগর বিএনপির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি’র উদ্ধর্তন পদে পদায়ন হলে শূন্য হবে তার পদটিও। সেক্ষেত্রে সাধারণ সম্পাদক পদ প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ এসএম আরিফুর রহমান মিঠু ও আরিফুজ্জামান অপু’র নাম।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালের ২৫ নভেম্বর খুলনা মহানগর বিএনপি’র সর্বশেষ সম্মেলনে নজরুল ইসলাম মঞ্জু সভাপতি এবং মনিরুজ্জামান মনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। গেল বছরের ৯ আগস্ট তৃণমূল পর্যায় থেকে দল পুনর্গঠনে জেলা ও মহানগর সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। চিঠিতে ওই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়া হলেও কার্যত্ব তা সম্ভব হয়নি। তবে সব ব্যর্থতা পিছনে ফেলে নতুন কমিটির নেতৃত্বে নবোদ্যমে আন্দোলন-সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিজয় ছিনিয়ে আনতে চায় খুলনা বিএনপি’র নেতাকর্মীরা।
এ প্রসঙ্গে বিএনপি’র সদ্য মনোনীত সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, সব সময় বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যানের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছি। আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব ভবিষ্যতে যাতে নিষ্ঠার সাথে পালন করতে পারি সে জন্য দোয়া চাই। আগামীর আন্দোলন-সংগ্রামে স্বৈরাশাসক ও বিনাভোটের সরকারকে পিছু হটতে বাধ্য করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।