দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
জীবন চলার পথে অর্থও সম্পদের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। প্রয়োজনীয় অর্থ ও সম্পদের অভাবে মানব জীবনে নেমে আসে নানারকম দু:খ, বেদনা, অশান্তি ও অনিশ্চয়তা। যা জীবনকে করে তোলে বেদনা ক্লিষ্ট, হতাশাগ্রস্ত ও নিরানন্দে ভরপুর। তাই ইসলাম গরীব মিসকীন ও অভাবগ্রস্ত বিশ্বাসী বান্দাহদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে যাকাতকে অপরিহার্য করেছে। যাতে মুসলিম মিল্লাতের কোথাও যেন অভাবও অনটন জেকে বসতে না পারে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা:) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সা:) ইরশাদ করেছেন : আমি লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধকরার জন্য আদিষ্ট হয়েছি যতক্ষণ না তারা লাইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ এই সাক্ষ্য দিবে, নামাজ কায়েম করবে ও যাকাত আদায় করবে। এই বর্ণনাটির অপর একটি রূপ হলো : যতক্ষণ না লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ সাক্ষ্য দিবে ও আমি যে দ্বীন নিয়ে এসেছি তার প্রতি ঈমান আনবে। এই দু’টি বর্ণনার ভাষাই পরিপূর্ণ দ্বীন ও পরিপূর্ণ শরীয়তের চিত্রকে তুলে ধরেছে এবং এতে ঈমানের সঙ্গে নামাজ ও যাকাত উভয়ই অবিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। এর অর্থ এই দাঁড়ায় যে, যে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর প্রচারিত পূর্ণ দ্বীন বা দ্বীনের কোন অংশ অমান্য বা অস্বীকার করবে, সে প্রকৃতই দ্বীন অমান্যকারী বলে সাব্যস্ত হবে এবং জানমালের নিরাপত্তা লাভের অধিকার হতেও বঞ্চিত হবে। এ জন্যই খলীফাতুল মুসলেমীন হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা:) দৃপ্ত কণ্ঠে বলে ছিলেন : যে লোকই যাকাত দেওয়ার দায়িত্ব হতে অস্বীকৃত ও মুর্তাদ হবে, আল্লাহর শপথ! আমি তার বিরুদ্ধে অবশ্যই যুদ্ধকরব। এর কারণ বিশ্লেষণ করে তিনি নিজেই বলেছেন : যাকাত ধন-মালের হক। অর্থাৎ দৈহিক ইবাদত যেমন নামাজ, রোজা, হজ্জ, তেমনি ধন-মালের ইবাদত হলো যাকাত। মোট কথা, যাকাতকে ইবাদতে মালী হিসেবে অবশ্যই আদায় করতে হবে। আল কুরআনে মহান রাব্বুল আলামীন স্পষ্টত:ই ইরশাদ করেছেন : যারা যাকাত আদায় করার যোগ্য অথচ যাকাত আদায় করে না রোজ কিয়ামতে তাদের ধন-সম্পদকে আগুনের বলয়ে পরিণত করে, তদ্বারা তাদের মুখে বুকে, পিঠে দাগ বা সেকা দেওয়া হবে। আগুনের বলয় হতে আওয়াজ আসবে, আমরাই তোমার সেই মাল-সম্পদ যা তুমি দুনিয়াতে কুক্ষিগত করে রেখেছিলে। বস্তুুত : যাকাত দেওয়া যে কতবড় ফরজ এবং তা না দিলে বা দিতে অস্বীকার করলে ইসলামী রাষ্ট্রকে যে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে হয়, এই হাদীস দ্বয় হতে তা অকাট্যভাবে প্রমাণিত হচ্ছে। সুতরাং মুসলিম মিল্লাতের বিত্তবানদের প্রতি আমাদের সনির্বন্ধ অনুরোধ হচ্ছে এই যে, আপনারা যথাযথভাবে যাকাত আদায় করুন এবং দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ ও মঙ্গল লাভে ধন্য হোন। আমীন ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।