Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিশ্বভিক্ষুক বলে অবহেলিত হয়েছি আজ সফল -মুহিত

বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা আমাকে বিস্মিত ও স্বপ্নচারী করে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০১৮, ৮:৫৪ পিএম

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তার বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, ব্যক্তিগতভাবে আমার গর্বের বিষয় হলো যে, বিগত শতাব্দীর ৭০ ও ৮০’র দশকে আমি ‘বিশ্ব ভিক্ষুক’ বলে অবহেলিত হয়ে আজকে সফল একজন অর্থমন্ত্রীর স্থান পাচ্ছি। তিনি বলেন, দ্রুততম সময়ে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের রূপরেখা বাস্তবায়নে আমাদের সরকারের ঈর্ষণীয় সক্ষমতা ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। এটি শুধু আমাদের দাবি নয়, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সত্য।
মুহিত বলেন, ‘তলাবিহীন ঝুঁড়ি’ বলে একদিন যে দেশকে অবজ্ঞা করা হয়েছে, সে দেশ বিশ্ববাসীর কাছে এখন এক ‘উন্নয়ন-বিস্ময়’; বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রযাত্রা এখন বিশ্বের রোল মডেল।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী অর্থবছরের বাজেট পেশ করতে গিয়ে দেশবাসীর কাছে বিগত দশ বছরে আমাদের অর্জন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, কিছু ভাবনা আর কিছু স্বপ্ন তুলে ধরলাম। বলা বাহুল্য, আমাদের বিশাল কর্মযজ্ঞের বিস্তৃত উপাখ্যান তুলে ধরার সুযোগ এখানে তেমন থাকেনা; কিছুটা আভাস দেয়া যায় মাত্র। আমার বিরূদ্ধে অভিযোগ হলো যে, আমি লম্বা ও বিস্তৃত বাজেট বক্তৃতা দেই। সেটা ঠিক বটে, তবে এ বক্তব্য দেয়ার উদ্দেশ্য হলো জনগণের দৃষ্টি বাজেটের প্রতি নিবদ্ধ করা। সেক্ষেত্রে যথেষ্ট সাফল্য এসেছে বলে আমার মনে হয়। বাজেট বক্তৃতা জনগণ শুনেন অথবা সময়ে সময়ে পাঠ করেন। জটিল বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন। বাজেট প্রস্তাব বুঝতে সক্ষম হন। বাজেটে আগ্রহ এখন সারা দেশব্যপী বিস্তৃত। অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা আমাকে বিস্মিত ও স্বপ্নচারী করে। আমি অবাক বিস্ময়ে দেখি কতটা আঘাত সহ্য করে ঘুরে দাঁড়াতে পারে এদেশের জনগণ, স্বল্প সম্পদ ও সীমাহীন সীমাবদ্ধতার মাঝে ‘বাসকেট কেস’ এর অপবাদ কাটিয়ে একটি দেশ কিভাবে ‘উন্নয়ন বিস্ময়’ হয়ে উঠে। যে দেশের শ্রম বাজারে আছে দুই কোটিরও অধিক সম্ভাবনাময় তরুণ-তরুণী, যে দেশের ডিজিটাল অবকাঠামো প্রত্যন্ত গ্রাম-পাড়া-মহল্লা এমনি দুর্গম পার্বত্য এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত, যেখানে এখনও অনাবিষ্কৃত রয়েছে অমিত সমুদ্র সম্পদ, প্রতিনিয়ত যেখানে উন্মোচিত হচ্ছে নতুন সম্ভাবনার দ্বার এবং যে দেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি ১৬ কোটি স্বতঃস্ফূর্ত জনগণ সে দেশের অগ্রযাত্রাকে প্রতিহত বা প্রতিরোধ করার সাধ্য কারো নেই। এখন প্রয়োজন কেবল সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার মাধ্যমে এসব কিছুর সুসমন্বয় এবং সঠিক ও সুযোগ্য নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা। সমৃদ্ধ আগামীর পথে বাংলাদেশের অভিযাত্রার ‘রূপকল্প-২০৪১’ প্রণয়নে আমি বয়সের কারণেই হয়ত তেমন ভূমিকা রাখতে পারবো না; তবে, কাজ যে শুরু হয়েছে তাতে আমি খুবই তৃপ্ত ও নিশ্চিত। অবশ্যই সে উদ্যোগের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার চেষ্টা করবো। মুহিত বলেন, আমরা এখন মজবুত ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-৪১ প্রণয়নের কাজ শুরু করেছি। একটি সমন্বিত দীর্ঘমেয়াদী বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’র খসড়াও প্রণয়ন করেছি। সারা পৃথিবী আমাদের সফল উন্নয়ন কৌশল ও কার্যক্রমের স্বীকৃতি এরইমধ্যে দিয়েছে। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাসহ দেশের শাসন কাঠামোর ঢালাও সংস্কার দাবি জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, জনসংখ্যায় ও এলাকায় আমাদের এক একটি জেলা পৃথিবীর প্রায় ৬০টি দেশের চেয়ে বড়। আমরা এখন উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনে প্রস্তুত। এটি করতে হলে শাসন কাঠামো ঢেলে সাজাতে হবে। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। মুহিত বলেন, সংবিধানের ধারা অনুযায়ী, শাসনতান্ত্রিক সংস্কার করতে হলে আমাদের ৬৪টি জেলা ও ৯টি মহানগরে স্বশাসিত ও স্বয়ম্ভর সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ সরকারগুলোর জন্য তাদের নিজস্ব আমলাতন্ত্র বহাল করতে হবে। তাদের দায়িত্ব ও কাজের তালিকা করতে হবে। কিছু বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ও জেলা সরকারের যৌথ দায়িত্ব ও এর সমন্বয়ের প্রক্রিয়া নির্ধারণ করতে হবে। এ কাজটি করতে পারলে সহজেই জেলা সরকারের গঠন প্রক্রিয়া স্থির করা যাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুহিত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ