পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : আসন্ন অর্থবছরের (২০১৮-১৯) বিশাল রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের প্রধান উৎস হিসেবে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাটকে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। রাজস্ব আয়ের তিনটি খাত ভ্যাট, আয়কর ও শুল্ক। আয়কর ও শুল্কে তেমন সাফল্য না আসায় অন্যান্য অর্থবছরের ন্যয় এবারো তাই ভ্যাটকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বরাবরের মতো ভ্যাট লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও ভ্যাটের আওতা বাড়াতে বাজেটে থাকছে বেশ কিছু নির্দেশনা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোÑ ইসিআর ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা, ভ্যাটযোগ্য প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাটের আওতায় নিয়ে আসা। তবে প্রতিবছরই ভ্যাট খাতে অতিরিক্ত লক্ষ্যমাত্রা ও নির্দেশনা থাকলেও তার বেশিরভাগই বাস্তবায়িত হয় না। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এনবিআর সূত্র মতে, আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নিয়ন্ত্রিত সম্ভাব্য রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় দুই লাখ ৯১ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে ভ্যাটকে রাজস্ব আয়ের প্রধান খাত ধরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় এক লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা বেশি। ভ্যাটের পর আয়কর খাতে লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৯৮ হাজার কোটি টাকা এবং শুল্ক খাতে প্রায় ৮৩ হাজার কোটি টাকা। তবে ভ্যাট খাতে বিশাল লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাজেটে থাকবে একগুচ্ছ প্রস্তাব।
সূত্র মতে, ১৯৯১ সালে দেশে প্রথমবারের মতো ভ্যাট আইন চালু হয়। বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় ১৬০টি দেশে ভ্যাট ব্যবস্থা চালু রয়েছে। তাছাড়া এসডিজি বাস্তবায়নে অভ্যন্তরীণ সম্পদ অর্জনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সে লক্ষ্যেই সরকার প্রতিবছর রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ভ্যাটনির্ভর হয়ে উঠছে। নব্বইয়ের দশকের আগে রাজস্ব আয়ের প্রধান খাত ছিল শুল্ক, কিন্তু মুক্তবাজার অর্থনীতির কারণে প্রতিবছর শুল্কনির্ভরতা কমে আসছে।
নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিকে ভ্যাটকে রাজস্ব আয়ের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে বাজেট প্রণয়ন করে সরকার। এরপর প্রতিবছর পরোক্ষ এ কর হয়ে উঠে রাজস্ব আদায়ের প্রধান হাতিয়ার। যদিও পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই রাজস্ব আদায়ের প্রধান উৎস হচ্ছে প্রত্যক্ষ কর বা আয়কর। কিন্তু বাংলাদেশে আয়কর খাতে সাফল্য খুব কম। কয়েক বছর ধরেই ভ্যাট থেকে বেশি রাজস্ব আদায় করছে সরকার। সেই বাস্তবতা থেকেই গত দুই অর্থবছর সরকার ভ্যাট থেকে রাজস্ব আয়ের বেশি লক্ষ্যমাত্রা ধরছে। নতুন নতুন পণ্য বাছাই করে তাতে বসানো হচ্ছে ভ্যাট। আওতা বাড়াতে নেওয়া হচ্ছে পদক্ষেপ।
সূত্র জানায়, ২০১৪-১৫ অর্থবছর ভ্যাট খাতে প্রায় ৫৫ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা, ২০১৫-১৬ অর্থবছর ৪৪ হাজার কোটি টাকা, ২০১৬-১৭ অর্থবছর ৮৬ হাজার ৮৬৭ কোটি টাকা ও ২০১৭-১৮ অর্থবছর ৯১ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এসব অর্থবছরে আয়কর খাত থেকে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে প্রতিবছর ভ্যাট খাতে লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়। ভ্যাট খাতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় করে নির্ভরতার সাফল্য পায় সরকার। আগামী অর্থবছর বিশাল এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ভ্যাট অনলাইন ব্যবস্থা কার্যকর করার ঘোষণা আসতে পারে, কারণ সনাতন পদ্ধতিতে ভ্যাট আদায়ের ফলে প্রতিষ্ঠান বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি দেয়। সেজন্য ভ্যাট আদায়কে অনলাইননির্ভর করার কিছু ঘোষণা আসতে পারে।
ভ্যাটে বিশাল লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ভ্যাট ব্যবস্থাকে অনলাইননির্ভর করে গড়ে তুলতে পুরোনো ভ্যাট আইনের বিধিমালায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। ফলে সনাতনী পদ্ধতির পাশাপাশি অনলাইনে ভ্যাট রিটার্ন দাখিল চালু করা হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ ও ভ্যাট রোধ করা যায় এমন ইসিআর ব্যবহার বিষয়ে নির্দেশনা থাকবে। ইসিআর ব্যবহার না করলে কঠোর শাস্তির ঘোষণা আসতে পারে। সেক্ষেত্রে পরিকল্পনা অনুযায়ী রাজধানী থেকে গ্রামপর্যায় পর্যন্ত ইসিআর ব্যবহারযোগ্য প্রতিষ্ঠান খুঁজে বের করবে এনবিআর।
সূত্র আরও জানায়, বাজেটে প্যাকেজ ভ্যাট বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা থাকবে, কারণ প্যাকেজ ভ্যাটের আড়ালে বহু প্রতিষ্ঠান বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আসছে। গত কয়েক বছর এমন বহু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। প্যাকেজ ভ্যাট আদায় সন্তোষজনক নয়। চলতি অর্থবছর ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত প্যাকেজ ভ্যাট থেকে এনবিআর ১১ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন টাকা আদায় করেছে। এছাড়া ২০১৬-১৭ অর্থবছর ১৮ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ও ২০১৫-১৬ অর্থবছর ২৩ দশমিক ৮১ বিলিয়ন টাকা আদায় করেছে।
আগামী অর্থবছর এ খাত থেকে বড় একটি অঙ্কের রাজস্ব আহরণ করার নির্দেশনা থাকবে। এছাড়া বর্তমানে প্রায় শতাধিক পণ্যের ওপর ট্যারিফ ভ্যালু চালু রয়েছে। উৎপাদন পর্যায়ে ট্যারিফ ভ্যালু আরোপিত পণ্যের ভ্যালু যৌক্তিক করার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ ভ্যাট আদায় করার নির্দেশনা থাকবে। গুগল, ইউটিউব ও ফেসবুকে বিজ্ঞাপনের ওপর থেকে ভ্যাট আহরণে নির্দেশনা থাকবে। ###
প্রসঙ্গ : লাইলাতুল কদর
এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্্শী
লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হযরত আয়েশা (রা:) হতে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সা:) ইরশাদ করেছেন : তোমরা রমজান মাসের শেষ দশকের বেজোড় তারিখে কদর রাত্রির তালাশ কর। (সহীহ বুখারী)
এই হাদীসে দু’টি স্পষ্ট নিদর্শনের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। এক : এই রাত্রিটি রমজান মাসের শেষ দশকের কোন একটি রাত। দুই : এই রাত্রিটি বেজোড় তারিখের হবে, জোড় তারিখের নয়। শেষ দশকের বেজোড় রাত্রি বলতে ২১-২৩-২৫-২৭-২৯ এই তারিখ সমূহ বুঝায়। লাইলাতুল কদর বা কদর রাত্রির অর্থ ও মর্ম বিশ্লেষণ করে আল্লামা বদর উদ্দিন আইনী (রহ:) লিখেছেন : লাইলাতুল কদর অর্থে এমন রাত্রিকে বুঝায়, যাতে যাবতীয় ব্যাপারের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। উহার চূড়ান্ত রূপদান করা হয় এবং একটি বছরের জন্য আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত এই রাত্রে সকল বিধান ও মর্যাদার ফায়সালা করেন। ইমাম যুহরী (রহ:) এই রাতের নাম করণ সম্পর্কে বলেছেন : এই রাতটির নিজস্ব মাহাত্ম্যের জন্যই এর কদর নাম করণ করা হয়েছে। কেননা, ইহা অতীব উচ্চমান ও মাহাত্ম্যের রাত্রি। এ সম্পর্কে মুহাদ্দিস আবু বকর আল ওয়াররাক (রহ:) বলেছেন : এই রাত্রিটির নাম কদর রাত্রি রাখা হয়েছে এ জন্য যে, যে ব্যক্তি মূলত : মান-মর্যাদা সম্পন্ন নয়, সে যদি এই রাত্রির এবাদতে যথাযথভাবে অংশ গ্রহণ করে ও রাত্রি জাগরণ করে আল্লাহর ইবাদত করে, তাহলে সেও সম্মান ও মর্যাদাবান হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করবে।
আবার কোন কোন বিশেষজ্ঞ বলেছেন যে, এই নাম করণের কারণ হলো-এই রাত্রিতে মুমিন ব্যক্তি যে নেক আমল করে, তা’ আল্লাহর নিকট মকবুল হওয়ার কারণে অধিকতর মূল্য ও মর্যাদার অধিকারী হয়ে থাকে।
মহান আল্লাহর মর্যাদাগণ কিতাব কুরআন মাজীদ এই রাত্রিতে নাযিল হয়েছে বলেই-এর নাম কদর রাত্রি রাখা হয়েছে বলে অনেক গুণীজন অভিমত প্রকাশ করেছেন। মুহাদ্দেস সহল ইবনে আবদুল্লাহ বলেন, মহান আল্লাহপাক তাঁর মুমিন বান্দাদের প্রতি রহমত বর্ষনের পরিমাণ এই রাতে নিধারণ করেন বিধায় ইহার উক্ত নাম করণ করা হয়েছে। আবার কেই কেউ এই অভিমত ও ব্যক্ত করেছেন যে, এই রাত্রিতেই আল্লাহ তায়ালা পরবর্তী এক বছর সময়ের নিয়ম-বিধানের চূড়ান্ত ব্যবস্থা করেন। কেননা, আল্লাহ পাক নিজেই ঘোষণা করেছেন : এই মহান রাত্রিতে প্রত্যেকটি গুরুত্ব পূর্ণ কর্মকাÐের চূড়ান্ত ফায়সালা করে দেয়া হয়। অতএব এই রাত্রির প্রকৃত মর্যাদা অনুধাবন করার প্রতি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা একান্ত দরকার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।