পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ব্যাংকিংখাতে পুঁঞ্জিভূত সোয়া লাখ কোটি টাকার বেশি খেলাপী ঋণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সফররত দাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মনোনীত কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ সরকারের চাহিদার প্রেক্ষিতে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতির বিপরীতে ডিসেম্বর নাগাদ প্রথম কিস্তি ছাড়ে প্রাথমিক সম্মতি রয়েছে সংস্থাটির। তবে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে আইএমএফএর নিয়ম অনুযায়ী নানারকম শর্তাদি প্রতিপালন বিষয়ে বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনায় ব্যাংকিং খাত নিয়েই সংস্থাটির প্রতিনিধিদের নজর বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে।
দায়িত্বশীল সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, আইএমএফের বাংলাদেশ মিশন প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদল গতকাল রোববার সকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর ও প্রধান অর্থনীতিবিদসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের মতো বৈঠক করে। দুপুরে অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহর সঙ্গে পৃথক বৈঠক করে। খাতসংশ্লিষ্ট ইস্যুতে একই ধরনের শর্তযুক্ত আলোচনা নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গেও একই দিন আরেকটি বৈঠক করে আইএমএফ মিশনের প্রতিনিধিরা।
জানা গেছে, দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইএমএফ প্রতিনিধিদের আলোচনায় ব্যাংকিংখাতের খেলাপী ঋণ কমিয়ে আনা সহ নানারকম সংস্কার ও সুশাসন নিশ্চিত করার ইস্যুটি গুরুত্ব পায়। এছাড়া অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলায় তামাকজাত পণ্যে শুল্ক বাড়ানোর পাশাপাশি প্রান্তিক করদাতার উপর করের হার বৃদ্ধি ও রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য শুল্কের হার কমানো হবে কিনা জানতে চেয়েছে আইএমএফ। তবে বিদ্যমান অর্থনৈতিক সঙ্কট, মুদ্রাস্ফীতি ও জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় করের বোঝা না বাড়িয়ে করজাল বাড়ানোর কথা আইএমএফকে জানিয়েছে রাজস্ব বোর্ড।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে বৈঠকে ব্যাংকিংখাতে বাংলাদেশের খেলাপী ঋণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলে দাবি করেছে আইএমএফ মিশনের প্রতিনিধিরা। তারা বলেছে, মাত্রাহীন খেলাপী ঋণ যেকোনো উন্নয়নশীল দেশের আর্থিক সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার বড় অন্তরায়। এটা ভবিষ্যতে আরো বাড়তে দেয়া মানে বাংলাদেশের স্থিতিশীল ও সম্ভাবনাময় অর্থনীতির বিকাশে টুঁটি চেপে ধরা। আবার খেলাপী ঋণ কমাতে হলে আর্থিকখাতে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও সুশাসন নিশ্চিত করা জরুরি। সেখানে রাজনৈতিক অঙ্গীকারের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হিসাবে কাজ করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যথেষ্ট স্বাধীনতা দিতে হবে। থাকতে হবে স্বায়ত্বশাসন ব্যবস্থাও। যা সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠানগুলোকে মুলধন ভর্তুকি দেয়ার পরিমাণও কমিয়ে আনতে বলেছে সংস্থাটি।
অপরদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকে খেলাপি ঋণ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেয়া পদক্ষেপের কথা জানতে চেয়েছে ঋণদাতা সংস্থাটি। একই সঙ্গে দৃষ্টান্ত হিসাবে এখন পর্যন্ত ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা সে বিষয়টিও জানতে চেয়েছে।
পাশাপাশি ঋণ পুন:তফসিলিকরণ ও পুর্নগঠন সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের মাস্টার সার্কুলার প্রসঙ্গেও জানতে চেয়েছে আইএমএফ। চলতি বছরের ৩০ জুন শেষে দেশে ব্যাংকিংখাতে খেলাপী ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৮ কোটি। এর মধ্যে রাস্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোর খেলাপীর পরিমাণ ৫৫ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ৬২ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা। বিদেশি ব্যাংকের ২ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর খেলাপী ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা।
বৈঠক প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র জী এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, আগের দিনের আলোচনার প্রেক্ষিতে আজও আইএমএফের সাথে ফলপ্রসু বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আইএমএফ মিশনের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের আলোচনা আরো কয়েকদিন চলবে। তিনি বলেন, এক্সটেন্ডেন্ট ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি, র্যাপিড ফাইন্যান্সিং ইনস্ট্রুমেন্ট ও র্যাপিড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি-এই তিনটি স্কীমের আওতায় দেড় বিলিয়ন করে মোট সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলারের ঋণ চাওয়া হয়েছে আইএমেএফের কাছে। ঋণ পাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক আশাবাদী। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই এই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, খেলাপি ঋণ ছাড়াও মুদ্রানীতি, বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি, ঋণের সুদ ও মুদ্রার বিনিময় হার, সঞ্চয়পত্রের সুদহার, বন্ড ব্যবস্থাপনাসহ বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এসব আলোচনায় আইএমএফের বিভিন্ন প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছে।
মুদ্রানীতি বিষয়ক বৈঠকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে সে বিষয়ে জানতে চেয়েছে আইএমএফ। তারা বছরে চারবার মুদ্রানীতি প্রণয়নের পরামর্শ দেয়। এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বছরে চারবার মুদ্রানীতি প্রণয়ন সম্ভব নয়। কেননা মুদ্রানীতিতে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সূচক বছরে একবার বা দু’বারই প্রকাশ করে থাকে। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকও এখন থেকে বছরে দু’বার মুদ্রানীতি প্রণয়ন করবে বলে আইএমএফকে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, আইএমএফ সুনির্দিষ্ট করে কোনো শর্ত দেয়নি। তবে আর্থিক খাতের সংস্কার, নীতি ও ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা চায় সংস্থাটি। বৈঠকে ডলার তথা বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আইএমএফ প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ডলারের ভিন্ন ভিন্ন রেট সম্পর্কে জানতে চায়। জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের রেট ৯৭ টাকা আর বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর রেট বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির বিভিন্ন চলক, সাম্প্রতিক মনিটরি পলিসির হালনাগাদ তথ্য, অর্থনীতির বিভিন্য চ্যালেঞ্জ ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের বিভিন্ন নীতি সংস্কার নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সংস্কার প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে মুখপাত্র বলেন, সংস্কার হচ্ছে বাংলাদেশের নিজস্ব বিষয়। যা অর্থমন্ত্রী আগেই প্রস্তাব রেখেছিলেন। তার সাথে বাংলাদেশ ব্যাংক এই সংস্কারকাজ সম্মিলিতভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আগামী ২ ও ৮ নভেম্বর আবারও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আইএমএফ প্রতিনিধি দলের বৈঠক হবে।
বড় ধরনের বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়ে ক্রমাগত চলতি হিসাবের ঘাটতি বাড়ছে বাংলাদেশের। এতে রিজার্ভের উপরও চাপ সৃষ্টি হয়েছে। তাতে প্রতিনিয়ত ডলারের বিপরীতে কমে যাচেছ বাংলাদেশের টাকার মান। রিজার্ভ ধরে রাখতে আমদানিতে লাগাম টানায় শিল্পের উৎপাদন কমছে প্রতিনিয়ত। সর্বশেষ তার প্রভাবে জ্বালানী সঙ্কটের মুখে পড়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। এমন প্রেক্ষাপটে ডলার সাশ্রয়ে অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি বিদেশি উৎস থেকেও অর্থায়ন পাওয়ার চেষ্টা করছে সরকার। সরকার বৈদেশিক মুদ্রার সহায়তা নিতে আইএ্মএফ এর কাছেও ঋণ পেতে আবেদন করেছে।
এদিকে দেশের জনসংখ্যা ও সক্ষমতার বিপরীতে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব পরিস্থিতির দৈন্য চিত্রে বিস্ময় প্রকাশ করেছে আইএমএফ মিশনের প্রতিনিধিরা। তারা বলেছে, বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকারের সঙ্গে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি মোটেও সন্তোষজনক নয়। উন্নয়নশীল দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি বাড়াতে হবে। এর জন্য প্রয়োজনীয় রাজস্ব সংগ্রহে রাজস্ব সহায়ক নীতি প্রনয়ন জরুরি। এক্ষেত্রে ভ্যাট খাতের সংস্কার প্রয়োজন। বিশেষ করে একস্তরের ভ্যাট কাঠামো প্রবর্তন করা হলে ভ্যাট আদায় বাড়বে। একই সঙ্গে কর কাঠামোর সংস্কার সহ রাজস্ব আদায়কারী ও নীতি প্রনয়ন বিভাগ পৃথক হওয়া দরকার।
তবে রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা বলেন, বর্তমান অর্থনৈতিক চাপ এবং মুদ্রাস্ফীতির চাপের মধ্যে প্রান্তিক করদাতাদের করের হার বাড়ানোর সুযোগ নেই, বরং আমরা কর ফাঁকি কমিয়ে জিডিপিতে কর বাড়াতে এবং ফাঁকি কমানোর জন্য কর ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করছি। পরিবেশ যাতে করদাতারা স্বেচ্ছায় কর প্রদান করে। এছাড়া এনবিআরের সম্প্রসারণ নীতি এবং বর্তমান রাজস্ব প্রবৃদ্ধিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে আইএমএফ।
দাতা সংস্থাটি রাজস্ব কর্মকর্তাদের সাথে জিডিপি অনুপাতের কর বৃদ্ধি, কর ও ভ্যাট থেকে অব্যাহতি, তামাকের উপর করের হার বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে শুল্ক হ্রাস, ডিজিটালাইজেশন, শুল্ক আইন, কর আইনসহ প্রায় ডজনখানেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে।
সূত্র জানায়, এনবিআরের আয়কর নীতি, ভ্যাট নীতি ও বাস্তবায়ন এবং কাস্টম নীতির সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করেন আইএমএফের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। বৈঠকে আয়কর বাড়ানোর বিষয়ে এনবিআরের পরিকল্পনা জানতে চান আইএমএফের কর্মকর্তারা। জবাবে এনবিআর কর্মকর্তারা করহার না বাড়িয়ে কর ফাঁকি বন্ধে জোর দেয়া হয়েছে বলে জানান। এতে আয়কর খাতে সর্বশেষ তিন মাসে রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশের কোটায় রয়েছে বলেও আইএমএফ কর্মকর্তাদের অবহিত করেন এনবিআর কর্মকর্তারা। কর হার না বাড়িয়ে আয়কর আদায় কিভাবে বাড়ানো হবে আইএমএফের এমন প্রশ্নে জবাবে এনবিআরের আয়কর কর্মকর্তারা বলেন, কর জাল বাড়াতে ইতোমধ্যে জোন এক্সপানশনসহ বেশকিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কর ফাঁকি বন্ধ করে সেই সঙ্গে করের আওতা বাড়ালে আয়কর আরো অনেক বাড়বে বলেও আইএমএফ কর্মকর্তাদের জানান এনবিআর কর্মকর্তারা। আর কর অব্যহতি কমানোর বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআর কর্মকর্তারা বলেন, প্রতি বাজেটে বিভিন্ন খাতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কর ছাড় কমানো হয়েছে। আর নতুন নতুন খাতকে করের আওতায় নিয়ে এসে আয়কর খাতে অব্যাহতি আরো কমানো হবে বলেও জানান এনবিআর কর্মকর্তারা।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, এনবিআরের শুল্ক খাতের সঙ্গেও কাস্টম এবং বন্ডে বিশাল অংকের রাজস্ব অব্যহতি কমানোর বিষয়েও জানতে চান আইএমএফ কর্মকর্তারা। তারা নতুন শুল্ক আইন কবে নাগাদ বাস্তবায়ন হবে এই বিষয়ে জানতে চান আইএমএফ কর্মকর্তারা। এর জবাবে এনবিআর কর্মকর্তারা বলেন, দেশীয় শিল্প বিকাশের স্বার্থে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ করে আমদানিতে শুল্ক ছাড় দেয়া হচ্ছে। এছাড়া শিল্প বিকাশের স্বার্থে বন্ডে ছাড় অব্যাহত রয়েছে। তবে বাস্তবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে ধীরে ধীরে এসব খাতে কর অব্যাহতি কমানো হচ্ছে। বিশেষ করে বন্ডের কিছু কিছু বিষয়ে নতুন করে করারোপ করা হচ্ছে। প্রতিবছর বাজেটে ভর্তুকি কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। আর কাস্টম আইন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এনবিআর কর্মকর্তারা বলেন, আমরা ইতোমধ্যে কাস্টম আইন প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে এই আইনটি পাশের অপেক্ষায় রয়েছে। কত সময়ের মধ্যে এই আইন পাশ হবে আইএমএফের এমন প্রশ্নের জবাবে এনবিআর কর্মকর্তারা বলেন, জাতীয় সংসদে পাশ হলেই বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে। তবে কবে পাশ হবে তা তারা বলতে পারবেন না বলেও জানান আইএমএফকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৈঠকে উপস্থিত এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আইএমএফের সঙ্গে আমাদের ট্র্যাডিশনাল আলোচনা হয়েছে। তারা বিভিন্ন বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছেন। বিশেষ করে বন্ড কাস্টমস এবং ভ্যাটে অব্যাহতি কমানোর বিষয়ে তারা জানতে চেয়েছেন। কাস্টম আইনের বাস্তবায়ন নিয়েও তারা জানতে চেয়েছে। এছাড়া কর অব্যাহতি কমানোর বিষয়ে তারা জানতে চেয়েছে। আমরা প্রতিবছর বাজেটে একটু একটু করে অব্যাহতি কমানোর চেষ্টা করছি। সামনে অব্যহতি আরো কমবে বলেও আইএমএফকে জানিয়েছি আমরা।
সূত্র আরো জানায়, এনবিআরের সঙ্গে বৈঠকে আইএমএফ ভ্যাট অটোমেশনের ক্ষেত্রে জোর দিয়েছে। অটোমেশনের আওতায় ই-ফাইলিং থেকে শুরু করে ডিজিটাল ব্যবস্থাপনার বিষয়েও জানতে চেয়েছেন আইএমএফ কর্মকর্তারা। জবাবে এনবিআর কর্মকর্তারা, এনবিআরের ভ্যাট অটোমেশনের বিষয়টি তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে ই-ফাইলিংয়ের কাজ শেষ পর্যায়ে এবং ইএফডির অগ্রগতিও তুলে ধরেন। তামাকের করহার বাড়ানোর বিষয়টিও জানতে চান আইএমএফ কর্মকর্তারা। জবাবে এনবিআর কর্মকর্তারা বর্তমানে দেশে তামাকের সর্বোচ্চ করহারের বিষয়টি আইএমএফকে অবহিত করেন। আর ভ্যাট অব্যহতি কমানোর বিষয়ে এনবিআর কর্মকর্তারা বলেন, ইতোমধ্যে নতুন নতুন কিছু পণ্যে ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। বিশেষ করে মোবাইল ফোনে নতুন করে ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। যেখানে আগে ভ্যাট ছিল না। আরো কিছু কিছু খাতকে ভ্যাটের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ভ্যাট অব্যাহতি কমানোর বিষয়ে এনবিআর জোর দিচ্ছে বলেও আইএমএফের প্রতিনিধি দলের সদস্যদের অবহিত করেন এনবিআর কর্মকর্তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।