Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

তিন সিটিতে ভোটের হাওয়া

প্রকাশের সময় : ২ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৩ এএম, ২ জুন, ২০১৮

মধ্য রমজানেই ভোটের হাওয়ায় রীতিমত সরগরম হয়ে উঠেছে রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকা। আসছে ৩০ জুলাই এই তিন সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীরা এসব সিটিতে আগামী ১৩ জুন থেকে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণায় নামতে পারবেন। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বৃহত্তম দল বিএনপি এখনো তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করেনি। নির্বাচন কমিশন তারিখ ঘোষণার পর থেকেই দলের মনোনয়ন পেতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নানামুখী কর্মতৎপরতায় এসব সিটিতে নির্বাচনী উত্তাপ ছড়াচ্ছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা ঘরোয়া আলোচনা, ইফতার মাহফিল আয়োজনের মাধ্যমে প্রচারণা নেমে পড়েছেন। ভোটাররাও নির্বাচন নিয়ে বেশ আগ্রহী হয়ে উঠছেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস আগে বড় তিন সিটির এই নির্বাচন। দলীয় প্রতীক নিয়ে এবারই প্রথম এই তিন সিটিতে মেয়র নির্বাচন হবে। তাই জাতীয় রাজনীতিতেও এ নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।


রাজশাহীতে প্রচারে আ.লীগ সঙ্কেতের অপেক্ষায় বিএনপি
রেজাউল করিম রাজু, রাজশাহী থেকে :


রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরও এনিয়ে তেমন আগ্রহ নেই নগর বিএনপির। অন্যদিকে তফসিল ঘোষণার পর প্রচারনার মাত্রায় গতি বাড়িয়েছে আওয়ামী লীগ। দলের মনোনীত প্রার্থী সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামীলীগ সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বেশ জোড়েসোরে প্রচারণা শুরু করেছেন। অন্যদিকে বর্তমান মেয়র ও নগর বিএনপি সভাপতি মো: মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল নগর ভবন সামলানো, দলীয় কর্মকান্ড আর আদালতে হাজিরা দেয়া নিয়ে বেশ দৌড়ের উপর রয়েছেন। প্রায় বছর খানেক ধরে নির্বাচনী ময়দান চষে ফিরছেন সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের নগর সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। নির্বাচন তফসিল ঘোষণা আগেই নির্বাচনের সব রকমের প্রস্তুতি প্রায় সেরে ফেলেছেন। নগরীর এমন কোন মহল্লা নেই যেখানে নেই রাজশাহীকে বদলে দেবার জন্য আবার লিটনকে মেয়র নির্বাচিত করার আহবান সম্বলিত ব্যানার ফেস্টুন, লিফলেট স্টীকার। মহল্লায় মহল্লায় হচ্ছে সভা, উঠান বৈঠক, নির্বাচনী অফিস , পোলিং এজেন্ট সবঠিক। অঙ্গ সংগঠন, আওয়ামী ঘারানার বুদ্ধিজীবী সবাই মাঠে। লক্ষ্য আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিজয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আর নগর পিতার আসনটি অন্যের দখলে তা তারা দেখতে নারাজ। ইতোমধ্যে বিপুল পরিমান লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। যাতে মোটা দাগে রয়েছে পঞ্চাশ হাজার লোকের কর্মসংস্থান, রাজশাহীর উন্নয়নের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা সরকারের নিকট থেকে বরাদ্দ আনা, বাড়ি বাড়ি ফের গ্যাস সংযোগ, আলেমদের সম্মানীত করা, শিক্ষা নগরী হিসাবে গড়তে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন। আর তার ধারাবাহিকতা রক্ষা। প্রতিদিনই মহল্লায় বাজারে ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে লিফলেট বিতরণ চলছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সিটি নির্বাচনের মাঠে একাই রাজা।
নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটনের কথা হলো রাজশাহীকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখছি তা বাস্তবায়নের জন্য বিগত নির্বাচনের পর থেকে মাঠে রয়েছি। আশাকরছি নগরবাসী উন্নয়নের স্বার্থে এবার কোন ভুল সিদ্ধান্ত নেবেনা। আমরা নির্বাচনের সব প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছি। এখানকার রাজনীতির মাঠে সক্রিয় ওয়াকার্স পাটি। আগে ভাগেই ফজলে হোসেন বাদশা এমপি কাজ শুরু করেছেন লিটনের পক্ষে।
অন্যদিকে বর্তমান মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল নির্বাচনে পঞ্চাশ হাজার ভোটের ব্যবধানে লিটনকে হারিয়ে তার যাত্রা খুব একটা সুখকর হয়নি। পাঁচ বছরের অর্ধেকের বেশীদিন বসতে পারেননি নগর পিতার চেয়ারে। হত্যা মামলায় আসামী হয়ে কারাগারে আর মেয়র পদ ফিরে পাবার জন্য আদালত পাড়ায় কাটিয়েছেন বেশীরভাগ সময়। আদালতের আদেশে চেয়ার ফেরত পেলেও মেলেনি কাঙ্খিত বরাদ্দ। কর্পোরেশনের রাজস্ব আয় নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মত। এর মাঝেও নগরবাসীর জন্য কিছু কাজ করছেন। পাশাপাশি দল বিশেষ করে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন নিয়ে রাজপথে সরব। অন্যদিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে নির্বাচন নিয়ে অতি উৎসাহী ভাব নেই। গত ৩০ মে জিয়াউর রহমানের শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজন ছিল দোয়া মাহফিলের। সেখানে উপস্থিত অনেক নেতাকর্মীর সাথে আলাপকালে তারা বলেন অপেক্ষায় রয়েছেন হাইকমাÐের নির্দেশের। তাছাড়া লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। খুলনার বির্তকিত নির্বাচন তাদের হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে। তাদের দাবি সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এবারো বিএনপি প্রার্থীই জিতবে। নজর গাজীপুরের দিকেও। নির্বাচনের ব্যাপারে বর্তমান মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, নগরবাসীর সাথে আছি। এখন আমরা দলীয়ভাবে ব্যস্ত বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আর গণতন্ত্র পূন:প্রতিষ্ঠার দাবি নিয়ে। নির্বাচনের সুষ্ঠ পরিবেশ আর নগরবাসীর নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ না থাকলে নির্বাচন করবো কিনা তা নিয়ে ভেবে দেখতে হবে। রাতের আঁধারে তার ব্যানার সরিয়ে ফেলায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। নির্বাচন নিয়ে হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সবকিছু হবে। খুলনা মার্কা কলঙ্কিত নির্বাচন নগরবাসী চায় না। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ব্যালট বিপ্লব ঘটবে এতো জানা কথা।
বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল এটি নিশ্চিত হলেও মহল বিশেষ প্রচারনা চালাচ্ছে সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনুকে নিয়ে। তিনি প্রার্থী হতে পারেন বলে। এ ব্যাপারে মিজানুর রহমান মিনু বিষয়টা সরাসরি নাকচ করে দিয়ে বলেন এবার বর্তমান মেয়র বুলবুলই প্রার্থী হবেন। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তিনি ফের নির্বাচিত হবেন। কিন্তু মনে হয় না নির্বাচন কমিশন ও সরকার অবাধ নির্বাচন করবে। খুলনায় তারা কলঙ্কিত হয়েছেন। এখন নজর গাজীপুরের দিকে। এখানে তাদের কি ভূমিকা হয় দেখার অপেক্ষায়। এরপর হয়তো হাইকমান্ড নির্বাচনের ব্যাপারে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। বিএনপি একটি উদার গণতান্ত্রিক দল। এ সরকার অনির্বাচিত হলেও গণতান্ত্রিক দল হিসাবে বিএনপি এ সরকারের অধীনে সবকটি স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। কিন্তু জনগণ দেখছে নির্বাচন নিয়ে এরা কি তামাশা করছে।
অন্যদিকে জামায়াত মহানগর সেক্রেটারী অধ্যক্ষ মো: সিদ্দিক হোসাইন বেশ কিছুদিন আগে নগরবাসীর দোয়া চেয়ে পোস্টার লাগান। এতে করে মনে করা হচ্ছে তিনি জামায়াতের প্রার্থী হবেন। আরেক প্রার্থী নায়েবে আমীর আবু ইউসুফ মো: সেলিম পোস্টার লাগিয়েছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন জামায়াত নিবন্ধন হারানো কারনে দলীয়ভাবে অংশ নিতে পারবেনা। স্বতন্ত্র হিসাবে প্রার্থী হতে হবে। এখানে তাদের একটা ভোট ব্যাংক রয়েছে। তাদের প্রার্থী হবার ঘোষণা রাজনৈতিক কৌশল। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সাথে দর কষাকষি।
জাতীয় পাটি নির্বাচনে তাদের প্রার্থী হিসাবে যুব সংহতি নেতা ওয়াসিউর রহমান দোলনের নাম সুপারিশ করেছে কেন্দ্রের কাছে। মেয়র নির্বাচনের মধ্যদিয়ে তাদের জনপ্রিয়তা পরখ করে দেখতে চায়। এক সময় ডাকসাইটে ছাত্রনেতা রাগিব আহসান মুন্না সিপিবির পক্ষ থেকে মেয়র প্রার্থী হতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে। বিগত নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করেছিলেন নাগরিক ভাবনার আহবায়ক মো: হাবিবুর রহমান। এবারো প্রার্থী হবেন এমনটি এ প্রতিবেদকের কাছে নিশ্চিত করেছেন। ভেতরে ভেতরে বেশ কিছুদিন ধরে প্রস্তুতি ও যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। চমক লাগানো প্রচারপত্র তৈরী করছেন।
এদিকে নির্বাচনের আগেই উত্তাপ ছড়াচ্ছে। গত ২১ মে রমজানের উপলক্ষে নগরীর আরডিএ মার্কেটের সামনের ওভারব্রীজে সবুজ নগরী গড়ার, পরিচ্ছন্ন রাখার আহবান জানিয়ে মেয়র বুলবুলের বানী ও ছবি সম্বলিত ব্যানার সরিয়ে সেখানে লিটনের ব্যানার টানিয়ে দেয়া হয়। এনিয়ে দু’পক্ষের অবস্থান উত্তেজনা ছড়ায়। বুলবুল রাজপথে বসে এর প্রতিবাদ জানান। তফসীল ঘোষণার পর মেয়র বুলবুলের ঈদ শুভেচ্ছাসহ বেশকিছু প্লাকার্ড রাতের আঁধারে সরিয়ে তা পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। এখন নগরজুড়ে শুধুই শোভা পাচ্ছে লিটনের ব্যানার ফেস্টুন। এনিয়ে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। নগরবাসী বিষয়টাকে ভাল চোখে দেখছেনা। তারা চান শান্তির নগরী শান্ত থাকুক। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠ যেন হয়। তারা তাদের ভোটাধিকার যেন নির্বিঘে প্রয়োগ করতে পারেন। এখন সবাই রমজান ও ঈদের কেনাকাটা নিয়ে ব্যাস্ত। এর ফাঁকে ফাঁকে শুরু হয়েছে আলোচনা। ঈদের পর জমে উঠবে পুরোপুরি নির্বাচনী হাওয়া।


বরিশালে শুরু হয়েছে হিসাব-নিকাশ
বিশেষ সংবাদদাতা :

বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রত্যাশিত ৪র্থ নির্বাচনের তারিখ ঘোষনার সাথে সাথেই প্রধান দুটি দলে নানামুখি তৎপরতার পাশাপাশি মেয়র প্রার্থী নিয়েও দল ভোটারদের মধ্যে হিসেব নিকেশ শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ছাড়াও এরশাদের জাতীয় পার্টি এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। তবে জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এ নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা তাও যথেষ্ঠ বিবেচ্য বিষয়। ছোট দলগুলোর এ নির্বাচনে অংশ গ্রহন প্রধান দুটি দলেরই ভোটের অংক কিছুটা পরিবর্তন করতে পারে। যা মেয়র পদের ফলাফলে যথেষ্ঠ প্রভাব ফেলতে পারে। তবে আওয়ামী লীগের একটি মহল জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী আন্দোলন সিটি নির্বাচনে আসুক এমন প্রত্যাশা রয়েছে বলে একাধিক ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে। পাশাপাশি দলটির পক্ষ থেকে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মেয়র আহসান হাবীব কামালকে ফেবারিট প্রার্থী হিসেবেও বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
তবে দলের প্রার্থী চুড়ান্ত করনের পাশাপাশি প্রতিপক্ষ দলের পক্ষে-বিপক্ষের শক্তিকে এ নির্বাচনে আনা না আনার বিষয়টিও যথেষ্ঠ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে দুটি প্রধান দলই। সর্বশেষ ২০১৩-এর ১৫মে বরিশাল সিটি করপোরেশনের তৃতীয় নির্বাচনে বিএনপি সহ ২০দলীয় জোট প্রার্থী আহসান হাবীব কামাল প্রায় ১৮হাজার ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগ সহ মহাজোট প্রার্থী শওকত হোসেন হিরনকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন। ঐ বছরই ২৪ অক্টোবর নব নির্বাচিত নগর পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। ফলে আগামী ২৩ অক্টোবর এ নগর পরিষদের মেয়াদ শেষ হবে। সে হিসেবে গত ২৭ এপ্রিল থেকে এ নগরীর নির্বাচনের ক্ষন গননা শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। ২০০৮-এর মধ্যভাগে ১/১১সরকারের অধীনে বরিশাল সিটির ২য় নির্বয়াচনে শওকত হোসেন হিরন ৬৭৫ ভোটে তৎকালীন নির্দলীয় প্রার্থী সরফুদ্দিন সান্টুকে পরাজিত করেছিলেন। ২০০৩ সালে বরিশাল সিটির প্রথম নির্বাচনে মুজিবুর রহমান সারোয়ার আওয়ামী লীগ সহ জোট প্রার্থী এ্যডভোকেট এনায়েত পীর খানকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে এ নগরীর প্রথম মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। আগামী ৩০ জুলাই বরিশাল সিটি নির্বাচনে মোট ভোটার ২ লাখ ৪৪ হাজার ১০১ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ২১ হাজার ৮৭৮। সংরক্ষিত ১০টি মহিলা আসন ছাড়া সাধারন ওয়ার্ড রয়েছে ৩০টি।
মেয়র পদে প্রার্থী হবার লক্ষে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী গত কয়েক বছর ধরেই নানামুখি তৎপরতায় রয়েছেন। কিন্তু চুড়ান্ত সিদ্ধান্তটি যে দলের শীর্ষ পর্যায় থেকেই হচ্ছে তা নিয়ে কোন মহলেই সংশয় নেই। আওয়ামী লীগের তরফ থেকে ইতোমধ্যেই দলীয় মনেনয়ন আনুষ্ঠানিকভাবে চুড়ান্তকরনের সময়সূচীও ঘোষনা করা হয়েছে। বিএনপি’র তরফ থেকে অবশ্য এখনো সে ধরনের কোন ঘোষনা অসেনি। তবে উভয় দলের সম্ভাব্য প্রার্থীগন মাঠ পর্যায়ের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় পর্যায়েও তৎপড়তা অব্যাহত রেখেছেন। বিএনপি চেয়ারপার্সন কারান্তরীন থাকায় তাদের পক্ষ থেকে চুড়ান্ত প্রার্থী বাছাই দেশের বাইরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের তরফ থেকেও হতে পারে। সেক্ষেত্রে স্থানীয় পর্যায়ের পরিবেশ পরিস্থিতি এবং ভোটারদের মনোভাব বিবেচনায় নিয়ে মনোনয়ন চুড়ান্তকরন কতটুকু সম্ভব হবে, সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে।
মেয়র পদে আওয়ামী লীগে তিনজন প্রার্থী স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে তৎপড় রয়েছেন। যাদের মধ্যে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদেক আব্দুল্লাহ গত কয়েক বছর ধরে দলের ছাত্র ও যুব কর্মীদের মধ্যে নিজের অবস্থান তৈরী করেছেন। মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাকেই মেয়র পদে মনোনয়ন প্রদানের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত কেন্দ্রে পাঠান হলেও আরো দুজন প্রার্থী স্থানীয় পর্যায়ের চেয়ে দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে বেশী সক্রিয়। এদের মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা জাহিদ ফারুখ শামিম ২০০৮-এর নির্বাচনে একটি বিশেষ মহলের পছন্দের প্রার্থী হিসেবে বরিশাল সদর আসনে আওয়ামী লীগের এমপি প্রার্থী হলেও পরাজিত হন। এর পরে তিনি মাঠ পর্যায়ে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকার পরে স¤প্রতি নগরীতে তার পোষ্টার ও ব্যানার চোখে পড়ছে। তবে নগরীর আমজনতার সাথে তার তেমন কোন সম্পর্ক গড়ে না উঠলেও দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে জাহিদ ফারুখের যথেষ্ঠ নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন বীর বীক্রম ইতোপূর্বে বরিশাল সদর আসন ছাড়াও অধুনালুপ্ত পৌরসভার চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে একাধীকবার নির্বাচন করে পরাজিত হন। এমনকি তিনি পৈত্রিক নিবাস মুন্সিগঞ্জের টংগিবাড়ী নির্বাচনী এলাকায়ও সংসদ নির্বাচন করে বিজয়ী হতে পারেন নি। তিনিও সা¤প্রতিককালে বরিশাল মহানগরীতে নতুন করে পোষ্টার ও ব্যানার ঝুলিয়ে তার ফিরে আসার জানান দিচ্ছেন।
অপরদিকে বিএনপি’র পক্ষ থেকে বর্তমান মেয়র আহসান হাবীব কামাল মেয়র পদে পুনরায় নির্বাচন করার লক্ষে সবসময়ই প্রস্তুত রয়েছেন। ইতোমধ্যে তিনি সামাজিক যোগাযোগও শুরু করেছেন। গতকাল তিনি নগরীর চকবাজারে জামে এবাদুল্লাহ মছজিদে জুমার সবচেয়ে বড় জামাতে নামাজ আদায় করেন। সেখানে মুসুল­ীদের সাথেও তিনি শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। তবে দলীয় কর্মীদের মধ্যে তার অবস্থান কিছুটা নাজুক। কামাল বিদ্রহী প্রার্থী হিসেবে ২০০৩ ও ২০০৮-এর সিটি নির্বাচনে প্রতিদন্ধীতা করে পরাজিত হন। কিন্তু ২০১৩-এর নির্বাচনে ৪দলীয় জোট প্রার্থী হিসেবেই শক্ত প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বিজয়ী হয়েছিলেন। সে নির্বাচনে মূল সমন্বয়কারীর ভূমিকা পালন করেন দলের বর্তমান কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও মহানগর বিএনপি’র সভাপতি মুজিবুর রহমান সারোয়ার।
বরিশালে ২০ দলীয় জোটের একটি বড় অংশ সারোয়ারকে মেয়র প্রার্থী করতে চাইলেও তিনি নিজে এমপি নির্বাচনে অধিক আগ্রহী বলে জানিয়েছেন। তবে দলের প্রয়োজনে যেকোন সিদ্ধান্ত মেনে নিতেও রাজী বলে জানিয়েছেন তিনি। অপরদিকে মেয়র পদে বরিশাল দক্ষিন জেলা বিএনপি’র সভাপতি এবাদুল হক চান ছাড়াও দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিনও প্রার্থী হতে আগ্রহী বলে ইতোমধ্যে ঘোষনা দিয়েছেন।
কিন্তু আসন্ন বরিশাল সিটি নির্বাচনে বিএনপি কতটুকু ভেবে চিন্তে প্রার্থী মনোনয়ন করবে তা মনযোগ দিয়েই দেখছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। কারন আসন্ন তিন সিটির নির্বাচনকে যদি জাতীয় নির্বাচনে জনসমর্থনের মাপকাঠি হিসেবে বিবেচনায় নেয় সরকারী দল, তবে যেকোন ভাবেই তারা বিজয়ী হয়ে জনসমর্থনের জানান দিতে চেষ্টা করতে পারে। সে ক্ষেত্রে খুলনা সিটি মডেলের নির্বাচন হলে তা প্রতিরোধের ক্ষমতা সহ কর্মীদের মাটে রাখার ক্ষমতা কোন প্রার্থীর আছে সে বিষয়টিও বিবেচনায় নিতে পারে দল।
উপরন্তু জামাত যদি আলাদা প্রার্থী নিয়ে মাঠে নামে তবে ভোটের ফলাফলে সামান্য কিছু প্রভাব পড়তেও পারে। ইসলামী আন্দোলনও ইতোমধ্যে তাদের প্রার্থী ঠিক করে রেখেছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের মতে, ইসলামীর আন্দোলন এবং জামাত নিজস্ব প্রার্থী নিয়ে বরিশাল সিটি মেয়র পদে প্রতিদন্ধীতা করলে বিএনপি’র ভোটের প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ নাও থাকতে পারে। আর আওয়ামী লীগ এমনই একটি পরিস্থিতির অপেক্ষায় রয়েছে বলে মনে করছেন একাধীক মহল। কারন ১৯৭৩ সালের পরে বরিশাল সদর সংসদীয় আসন সহ এনগরীতে কোন নিরপেক্ষ ভোটে তাদের বিজয় সহজ ছিলনা। তবে জামাত ইসলামী স্থানীয়ভাবে নয় দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের ওপরই কর্মপরিকল্পনা নির্ধারন করবে বলে জানিয়েছে। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত কতটা জোটবদ্ধ ভাবে হবে না শুধু দলীয়ভাবেই হবে তা এখনো পরিস্কার নয়।


সিলেটে প্রার্থী নিয়ে দুই দলে গৃহদাহ
ফয়সাল আমীন :


আগামী ৩০ জুলাই সিলেট সিটি করপোরেশ নির্বাচন। নির্বাচন কমিশনের এমন ঘোষনায় মনোনয়ন রাজনীতি এখন তুঙ্গে। লবিং. গ্রুপিং,দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মহলের মাধ্যমে সমর্থন আদায়ের নিরংকুশচেষ্টা করছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।মেয়র, কাউন্সিলর পদে প্রার্থীদের এখন দীর্ঘ তালিকা। প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে অনুষ্টিত হবে এবারকার নির্বাচন। তাই দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত মানেই বিজয়ের অর্ধেক পথযেন এগিয়ে। সেকারনে প্রতীক টনিকে আদায়ে মরিয়া সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এতে বেকায়দায়-আওয়ামীলীগ বিএনপি। তাই প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে স্থানীয় রাজনীতিতে চলছে দু‘দলের গৃহদাহ। এসবের পরওমেয়র প্রার্থী পদে সাবেকমেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, বর্তমান মেয়র আরিফুল হকচৌধুরীর নাম-যশ-পরিচয়-পরিচিতি অবস্থান অনন্য। তারা যেন এ পদে ব্র্যান্ড। তবে দলীয়ে প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় দলের মধ্যে প্রার্থী হওয়ার খায়েশ আছে অনেকের। তাদের আগে পিছে দলীয় পদ-পদবীর ভারিক্কী থাকলেও জন সম্পৃক্ততায় তাদের গ্রহন যোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ। বিগত ৩বারের নির্বাচন ফলাফল পরিসংখ্যানে দেশের সবচেয়ে ছোট আয়তনের সিটি সিলেটে আা‘লীগ প্রার্থী দু‘বার, বিএনপি প্রার্থী এক বার বিজয়ী হয়েছেন। এবার ভোটার ভোটার বাড়লে, সিটি করপোরেশনের আয়তন বাড়েনি।
সংশ্লিষ্ট মতে, মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য আ‘লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী চারজন। মহানগর আ’লীগ সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, শিক্ষা-বিষয়ক সম্পাদক ও সিটি কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ এবং বাফুফের কার্যনির্বাহী সদস্য ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহিউদ্দিন আহমদ সেলিম। রাজনীতিতে সরাসরি জড়িত না থাকলেও সেলিম অর্থমন্ত্রীর ঘনিষ্টজন হিসাবে সমাদৃত। তবে দলীয় মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে কামরান যেমন এগিয়ে তেমনি কামরানের বিন¤্র ব্যবহার অতুলনীয়। সিসিকের প্রথম দুই মেয়াদের মেয়র কামরান গত নির্বাচনে বিএনপির হেরেছিলেন আরিফের কাছে । তবে হারের পরও জনবিচ্ছিন্ন হননি তিনি। সভানেত্রীর সংকেত পেয়েই আরো চাঙ্গা এখন সাবেক সিটি মেয়র কামরান। তবে আ’লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী অন্যান্য সম্ভাব্য প্রার্থীরা কামরানকে এখনই মাঠ ছেড়ে দিচ্ছেন না। তারা বলছেন, দলের মনোনয়ন বোর্ডই প্রার্থী ঘোষণা করবে। এর আগে কেউ দলীয় প্রার্থী হতে পারেন না। কামরানের পক্ষে জনগনের সমর্থন থাকলেও দলীয় মনোয়ন প্রত্যাশিরা তাকে চাপে রাখতে বসে নেই।
এ ব্যাপারে বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, ‘ আমাকে নিয়ে মানুষের প্রত্যাশা ও আস্থা অনেক বেশি, দলের সর্বোচ্চ পর্যায় সেই গুরুত্ব বিবেচনায় আমাকে গ্রিন সিগনাল দিয়েছেন, আমিসেই লক্ষ্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ মেয়র পদে নির্বাচনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি, দীর্ঘদিন ধরে। মানুষ পরিবর্তন চায়,তাই ব্যক্তির কর্ম দক্ষতা ও ইমেজ এখন মূখ্য, অন্তত দলীয় প্রতীক প্রাপ্তিতে। দল থেকে এখনও কাউকেই প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি। সবার জন্য সুযোগ রয়েছে।’
আ’লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী আজাদুর রহমান আজাদ ও মাহিউদ্দিন সেলিম বলছেন, দলীয় সভানেত্রী মনোনয়ন দিলে তারা নির্বাচন করতে প্রস্তুত রয়েছেন। মনোনয়ন পেলে নতুন প্রজন্ম কে সাথে বিজয়ের মাধ্যমে অত্যাধুনিক নগরী গড়ে তুলতে তারা কাজ করবেন।
এদিকে, সিসিক নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরাও সক্রিয় রয়েছেন। বিভিন্নভাবে নিজেদের প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। দল থেকে মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে আছেন সিসিকের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন ও সিটি কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদী। তবে এ দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন আরিফই। তার কর্মদক্ষতা সাধারন জনগনের কাছে কল্পনাতীত, কাজের কাজী হিসেবেই তাকে আপন করে নিয়েছে সচেতন মানুষ। নগরীকে প্রকৃত অর্থে জনবান্ধব করতে তার কর্মচাঞ্চল্য সহ পদক্ষেপ সমূহ অসাধারন। যদ্ওি পারিপার্শি¦ক পরিস্থিতি অনুকূল ছিল না আরিফে। অর্থমন্ত্রীর আলোকিত সিলেট গড়ার যেঘোষনা ছিল, মেয়র আরিফকেসেই কাজে লাগানোর সুযোগ দিলে বিশ্বেরযেকোন আধুনিক নগরীর মতো সিলেট হতে পারতো। কিন্তু মেয়র হওয়ার পরও সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হয়ে তাকে প্রায় দুই বছর কারান্তরীণ থাকতে হয়েছে। এজন্য তার প্রতি দলের নেতাকর্মী সহ সচেতন নাগরিকের সহানুভূতি রয়েছে তার প্রতি। এসব বিবেচনায় বিএনপির হাইকমান্ড আগামী নির্বাচনেও আরিফের ওপর আস্থা রাখতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে আরিফের দলীয় মনোনয়ন কঠিন করতে সক্রিয় হয়ে উঠছেন দলের অন্য সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এ ব্যাপারে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমি দলের মনোনয়ন চাইবো। দল নিশ্চয়ই যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবে। এক্ষেত্রে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর আমার কারান্তরীণ হওয়া, মেয়র হিসেবে নগরবাসীর জন্য আমার নিবেদন, কর্মতৎপরতা সবকিছুই বিবেচিত হবে।’সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, ‘দলের নেতাকর্মী, সাধারণ জনতাসহ সবাই চাইছেন আগামী নির্বাচনে আমি প্রার্থী হই। দলের মনোনয়ন চাইবো আমি।’ নগর বিএনপিসাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম ( বর্তমানে ওমরা হজ্বরত)বলেন, ‘১৯৯৫ সালে দল আমাকে মনোনয়ন দিলেও আমি তা গ্রহণ করিনি। এখন আমি মনে করছি, সিটি করপোরেশনে কাজ করার জন্য আমি প্রস্তুত। দলের হাইকমান্ডের কাছে আমি মনোনয়ন প্রত্যাশী। এদিকে, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের গত বছরের ১৫ নভেম্বর আইনজীবীদের সাথে মতবিনিময় সভায়মেয়র পদে প্রার্থিতাঘোষণা করেন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টি, ইসলামি শাসনতন্ত্র আন্দোলন,খেলাফত মজলিসসহ কয়েকটি দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও নিজস্ব অবস্থান থেকে প্রার্থীতা ঘোষনা দিয়েছেন।

সবচেয়ে ছোট সিটি সিলেট :
আয়তনের দিকথেকেদেশের সবচেয়েছোট সিটি করপোরেশন হচ্ছে সিলেট। ২০০২ সালে তৎকালীন সিলেটপৌরসভার ২৬. ৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তন নিয়েই সিলেট সিটি করপোরেশন গঠিত হয়। এই সিটি করপোরেশনে ওয়ার্ড হচ্ছে সাধারণ ২৭টি ও সংরক্ষিত মহিলা ৯টি। সিলেট সিটি করপোরেশনের আয়তন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১৪ সালেমেয়র আরিফুল হকচৌধুরীর প্রচেষ্টায় কার্যক্রম শুরু হলেও চার বছরে এরকোনো অগ্রগতি প্রক্রিয়া ফাইল বন্দি।
বিগত ৩ বার মেয়র পদে নির্বাচন ফলাফল পরিসংখ্যান:
সিলেটপৌরসভা সিটি করপোরেশনে উন্নীত হওয়ার পর ২০০৩ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচনে চারদলীয়জোট প্রার্থী বিএনপিনেতা এম এ হককে পরাজিত করেমেয়র পদে জয়ী হন আ‘লীগের বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় নির্বাচনে কারাগারে বন্দীথেকেও বিপুলভোটে পুনরায় বিজয়ী হন কামরান। তবে ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত তৃতীয় নির্বাচনে চার দলীয়জোট প্রার্থী বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী মেয়র পদে নির্বাচিত হন।

ভোটারবেড়েছে ২৪ হাজার :
এবার সিলেট সিটিতে গত নির্বাচনের চেয়ে ভোটার বেড়েছে ২৪ হাজার ১৮ জন। সিলেট নগরীর সর্বশেষ হালনাগাদকৃতভোটার তালিকা অনুযায়ী নগরীতে বর্তমানে মোট ভোটার ৩ লাখ ১৫ হাজার ৬৪ জন। এর মধ্যে পুরুষভোটার হচ্ছেন ১ লাখ ৬৯ হাজার ২৯১ জন এবং মহিলা ভোটার ১ লাখ ৪৫ হাজার ৭৭৩ জন। সর্বোচ্চভোটার রয়েছেন ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ১৮ হাজার ৩৬৮ জন এবং সর্বনিম্ন ২ নম্বর ওয়ার্ডে ৬ হাজার ৬১০ জন। ২০১৩ সালের ১৫ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনকালে সিলেট নগরীর মোট ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৯১ হাজার ৪৬ জন।



 

Show all comments
  • শামীম ২ জুন, ২০১৮, ২:০৫ এএম says : 1
    আগের মত হলে কোন নির্বাচনের দরকার নেই
    Total Reply(0) Reply
  • নাঈম ২ জুন, ২০১৮, ২:০৬ এএম says : 1
    আদৌ কী মানুষ ভোট দিতে পারবে ?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিটি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ