Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১, ২৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ড্রাগন চাষে আশার আলো!

ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

গুটি কয়েক ফসল চাষাবাদের বৃত্ত ভেঙ্গে ভিন্ন ফসল চাষে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার যে কয়েকজন চাষি ঝুঁকি নিয়ে চাষ শুরু করেছেন সুরত আলী তাদের একজন। দেশের আবহাওয়া ও মাটিতে বিদেশি ফসল চাষে লোকসানের আশঙ্কা থাকলেও গাছে ফল আসতে শুরু করায় হতাশা কাটিয়ে আশার আলো দেখছেন তিনি। ইতিমধ্যে চারা বিক্রির মাধ্যমে আয় শুরু হয়েছে এবং ফল বিক্রি করে এবছরেই চাষে লগ্নি করা টাকার অর্ধেক টাকা উঠে আসবে বলে তিনি ধারণা করছেন।
সুরত আলী জানান, প্রায় ১২ একর জমিতে বিদেশি বিভিন্ন ফলের চাষ শুরু করেছেন। এর মধ্যে ৩ একর জমি নিজের এবং বাকি জমি লিজ নেয়া। বিঘা (৩৩শতাংশ) প্রতি বছরে ১০ হাজার টাকা করে ৯ একর জমি ১০ বছরের জন্য লিজ নিয়ে এ কৃষি ফার্মটি গড়ে তুলেছেন।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার শিবনগর দাস পাড়ার মাঠে এ কৃষি ফার্মটির অবস্থান।
তিনি জানান, দেশি ফসল চাষে খরচ কম এবং স্বল্প সময়ে খরচের টাকা উঠে লাভের মূখ দেখা যায়। কিন্তু বিদেশি এ ধরনের ফসল চাষে সময় লাগে বেশি এবং খরচ হয় বেশি । এক প্রকার ঝুঁকি নিয়েই চাষ শুরু করলেও গাছে ফল আসতে শুরু করায় এখন তিনি আশাবাদি।
২০১৬ সালের শেষের দিকে নিজের বাড়ির পতিত জমি, শিবনগর ভাটা সংলগ্ন মাঠ ও দাস পাড়ার মাঠের ৪ একর জমিতে পেয়ারা, ৫একর জমিতে ড্রাগন, দেড় একর জমিতে আম, প্রায় ২ বিঘা জমিতে লিচু এবং বাকি জমিতে রামবোতান, লটকন, খেজুর ও নারিকেল গাছ ও কলার চাষ করেছেন। ১২ একর জমিতে বিভিন্ন ধরনের এ ফল চাষে তার প্রায় ৪০লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ফার্মে এখন প্রতিদিন ৭/৮জন শ্রমিক প্রতিনিয়ত কাজ করে। সুরত আলী জানান, তার ভাগ্নে কৃষিবীদ ড.রুস্তম আলী ঢাকার একটি নার্সারী থেকে বিদেশি জাতের এ ফলের চারা তাকে সরবরাহ করেছেন। ব্যাতিক্রমি এ ফলের চাষ সম্পর্কিত সকল প্রকারের সহযোগিতা (আর্থিকসহ) ও পরামর্শ তিনিই দিচ্ছেন। দেড় বছর বয়সে তার লাগানো গাছে ফল আসতে শুরু করেছে। জুলাই আগষ্টের মধ্যে ফল পাকতে শুরু করে। সাধরণত ফুল আসার ৪০ থেকে ৪৫দিনের মাথায় ফল পেকে যায়। একটি পরিপুষ্ট পাকা ফলের ওজন প্রায় ৩’শ থেকে ৪’শ গ্রাম হয়। বছরে একাধারে প্রায় ৩ থেকে ৪ মাস ফল সংগ্রহ করা যায়। ড্রাগন গাছ একবার লাগালে ওই গাছ থেকে কমপক্ষে দশ বছর ফল পাওয়া যায়। স্থানীয় বাজারে ড্রাগন কেজি প্রতি ৩’শ থেকে সাড়ে ৩’শ টাকায় বিক্রি করা যায়। ঢাকার বাজারেও এ ফলের ব্যাপক চাহিদা।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুল করিম জানান, বাংলাদেশে ড্রাগন ফলের চাষ এখনও সেভাবে শুরু হয়নি। কালীগঞ্জ উপজেলায় কয়েকজন চাষী ক্যাটকাস প্রজাতির এ ফলের চাষ শুরু করেছেন। উপজেলায় বর্তমানে প্রায় ১২ একর জমিতে ড্রাগন চাষ হচ্ছে। ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমানে ক্যারটিন (ভিটামিন এ) ও আয়রন আছে। অধিক পুষ্টি গুন সম্পন্ন এ ফল চোখকে সুস্থ্য রাখে, শরীরের চর্বি কমায়, রক্তের কোলেস্টেরল কমায়, উচ্চ রক্তচাপ কমানোসহ রোগ প্রতিরোধ করে। তিনি জানান কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস ড্রাগন চাষীদের প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে এবং নিয়মিত খোঁজ খবর রাখছে।



 

Show all comments
  • খুরশিদ আলম ২ জুন, ২০১৮, ১:৫৯ এএম says : 0
    খুব ভালো খবর
    Total Reply(1) Reply
  • SHAUKAUT ২ জুন, ২০১৮, ১০:৪৬ পিএম says : 0
    desher jonno vhalo jobe jodi venezuelar motobangladeshe chokolater jonno cacao gacher chara ropon kora jay ar salader jonno aguakate er chara ropon korle bangalider unnoto maner pusthi jogate shajayyo korbe dhonnobad.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ড্রাগন চাষে
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ