পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পুনর্বাসনে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ৪০ কোটি ডলার অনুদান আশা করছে বাংলাদেশ। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ দাঁড়াবে তিন হাজার ২শ কোটি টাকা। বাংলাদেশ এই অনুদানের অর্থ কোন কোন খাতে ব্যয় করবে তার পরিকল্পনা জানতে চেয়েছে বিশ্বব্যাংক। সম্প্রতি সংস্থাটির এক প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে এসে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে এক বৈঠকে তারা এসব বিষয়ে জানতে চায়। এই অবস্থায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর কাছে অর্থ ব্যয়ের পরিকল্পনা চেয়ে চিঠি দিয়েছে ইআরডি। চিঠির জবাব পেলেই সরকারের কর্ম পরিকল্পনা বিশ্বব্যাংকে জানানো হবে বলে জানা গেছে।
ইআরডি সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ বসন্তকালীন সভায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তায় এক অনুদান প্রস্তাব অনুমোদন পায়। যদিও প্রথম দিকে এটি ঋণ হিসাবে দিতে চেয়েছিল সংস্থাটি। কিন্তু বাংলাদেশে এই ইস্যুতে ঋণ নিতে রাজি হয়নি। এই অবস্থায় বিশ্বব্যাংকের এই অর্থ অনুদান হিসাবে পাওয়া যাবে বলে আশা করছে ইআরডি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইআরডির অতিরিক্ত সচিব মাহমুদা বেগম বলেন, রোহিঙ্গাদের মানবিক সংকট কাটাতে অনুদান হিসাবে ৪০ কোটি ডলার সমপরিমাণ অনুদান সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক। এক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের খাদ্য সংকট লাঘব, বাসস্থানের মান উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন এবং পরিবেশ উন্নয়নে বিশেষ জোর দিতে চায় সংস্থাটি। তিনি বলেন, এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে অনুদান সংক্রান্ত একটি চিঠিও ইআরডিতে পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে তিনটি বিষয়ে গুরুত্বারোপ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এগুলো হলো-রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য, নিরাপদ পানি এবং তাদের বসবাসের জায়গা নিরাপদ করা।
বিষয়টি নিয়ে তাদের সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে জানিয়ে তিনি জানান, এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোতে আমরা চিঠি দিয়েছি। তাদেরকে অর্থ ব্যায়ের পরিকল্পনা ও চাহিদাপত্র পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। মন্ত্রণালয়গুলো থেকে যত দ্রæত এই ডিমান্ড নোটিশ আসবে, তত দ্রæত আমরা এগুলো নিয়ে তাদের সঙ্গে নেগোশিয়েশনে যেতে পারব।
গত বছরের নভেম্বরে নোয়াখালীর ভাষানচরে এক লাখ রোহিঙ্গাকে পুনর্বাসনের জন্য দুই হাজার ৩১২ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতায় নৌবাহিনীর তত্তাবধানে প্রকল্পটি ২০১৯ সালের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের ব্যয়ের দুই হাজার ৩১২ কোটি ১৫ লাখ টাকার মধ্যে চলতি অর্থবছরেই দুই হাজার ৭১ কোটি টাকা চেয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। বাকি অর্থ ব্যয় হবে আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে।
পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় স্থানীয় অধিবাসী রয়েছে পাঁচ লাখ ৭০ হাজার। কিন্তু মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা নতুন ও পুরাতন সব মিলিয়ে বর্তমানে ১০ থেকে ১২ লাখ রোহিঙ্গা সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন। ফলে সামাজিক ও পরিবেশগত নানাবিধ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এই অবস্থায় তাদের জন্য আরও অর্থ সহায়তা প্রয়োজন। বাংলাদেশের একার পক্ষে সেটা করা কঠিন।
উল্লেখ, গত বছরের ২৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর দমন-পীড়ন শুরুর পর জীবন ও সভ্রম বাঁচাতে রাখাইন থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢল শুরু হয়। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে ১০ লাখ ৩০ হাজার জনের নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হলেও তাতে খুব বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে না মিয়ানমার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।