রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
ঠাকুরগাঁওয়ে গমের বীজ সংগ্রহে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে জেলার বিএডিসি কলেজপাড়া কন্ট্রাক্ট গ্রোয়ার্স ও বীজ সংরক্ষনাগার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। অভিযোগ থাকলেও তদারকির অভাবে দিন দিন অনিয়মের মাত্রা আরো বাড়ছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। দেশের খাদ্য ঘাটতি পুরন ও বিদেশে খাদ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে কৃষকরা ভুমিকা পালন করে আসলেও ঠাকুরগাঁও জেলার কৃষকরা ভাল মানের বীজ সরবরাহের অভাবে ফসল উৎপাদনে হিমশিম খাচ্ছে। ফলে সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা।
ঠাকুরগাঁও জেলা শীতার্ত এলাকা হওয়ায় সারাদেশে যে পরিমান গম উৎপাদন হয় তার ৫ ভাগের ৩ ভাগ গম উৎপাদন হয় এ জেলা থেকে। আর এ কারনে সরকারিভাবে বিএডিসি এর মাধ্যমে তালিকাভুক্ত কৃষকদের কাছ থেকে ভাল বীজ সংরক্ষনের উদ্যোগ নেয়া হয়। আর এসব সংরক্ষিত বীজ সারাদেশের কৃষকদের মাঝে পরে তা বিক্রয় করা হয়। এমন উদ্যোগে সরকারের সফলতা আসলেও এখন তা কমতে শুরু করেছে। আর জেলার কৃষি সংশ্লিস্টরা বলছেন এক অফিসে একই কর্মকর্তা দীর্ঘ দিন থাকায় এমন অনিয়ম করার সুযোগ তেরি হচ্ছে। ফলে ক্ষতির শিকার হচ্ছে জেলার কৃষকরা। এ অবস্থায় বীজ সংরক্ষনের বিষয়ে দ্রæত ব্যবস্থা নেয়া না হলে কৃষকরা লোকসানের পাশাপাশি চাষাবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার আশংঙ্কা রয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ১৬-১৭ বছরে গম আবাদ হয়েছে ৬৭ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে। আর গেল মৌসুমে গম আবাদ হয়েছে ৬১ হাজার হেক্টর জমিতে।
সদর উপজেলার আকঁচা ইউনিয়নের কৃষক মংলু বর্মন, পানু রাম, রমনী, আইয়ুব আলীসহ বেশ কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করে বলেন, জেলা শহরের কলেজপাড়া বিএডিসি কন্ট্রাক্ট গ্রোয়ার্সের আওতায় এ ইউনিয়নে হাতে গোনা কয়েকজন কৃষক গম চাষ করে। দেখা গেছে তারা সামান্য জমিতে গম উৎপাদন করলেও কর্র্তৃপক্ষের যোগশাজসে বাজার থেকে গ্রম ক্রয় করে বীজের জন্য সংগ্রহ করছে। ফলে ভাল মানের বীজ তো দুরের কথা সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থ লোপাট হচ্ছে। আর আমরা প্রকৃত কৃষকরা ভাল মানের বীজ না পেয়ে লোকসান গুনছি। এতে ফলন কমে যাওয়ার পাশাপাশি আবাদও কমে কমছে। গেল বছর এক বিঘা জমিতে গম আবাদ করে গম উৎপাদন হয়েছিল ১৭-১৯ মন। আর এবার বিঘা প্রতি ১৩-১৪ মন গম। আমরা সব সময় বিএডিসি থেকে বীজ ক্রয় করে আবাদ করি। আমরা চাই সরকারের পক্ষ থেকে ভাল বীজ সরবরাহ করবেন।
কলেজপাড়া বিএডিসি কন্ট্রাক্ট গোয়ার্স ও বীজ প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্র এলাকা ঘুরে দেখা গেছে শ্রমিকরা বিভিন্ন জায়গা থেকে আনা গম বস্তা বন্দি করছেন। এসময় কলেজপাড়া ভিক্তি বীজ খামার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কাছে কার কাছ থেকে এসব গম এসেছে প্রশ্ন করা হলে। তিনি বলেন, কৃষকের চেয়ে ব্যবসায়ীর সংখ্যা বেশি। আর সব গম মিলিত করে বস্তা বন্দি হচ্ছে। আমরা শ্রমিক অফিসাররা যা নির্দেশ দেন আমরা তাই পালন করি।
শহরের কলেজপাড়া বিএডিসি বীজ উৎপাদন কন্ট্রাক্ট গ্রোয়ার্স জোন ঠাকুরগাঁও এর উপ-পরিচালক মাসুদ সুলতান জানান, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও দিনাজপুরের বীরগঞ্জের ৮৫৩ জন চাষি কন্ট্রাক্ট গ্রোয়ার্সের তালিকাভুক্ত তারা এবার ৩৫-৩৮ টাকা কেজি দরে গম সরবরাহ করছে। এ পর্যন্ত ৫ শতাধিক চাষির কাছ থেকে ৩১শ ২৪ মেঃ টন গম গ্রহন করা হয়েছে। আমরা চাষিদের মাধ্যমেই গম সংগ্রহ করে বীজ প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেই। চাষিরা যদি কারো সাথে হাত মিলিয়ে গম আমাদের দেয় সেটা আমাদের জানা নেই বলে এড়িয়ে যান।
আর কলেজপাড়া বিএডিসি বীজ প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, বীজ প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রে জেলার চাষিদের মাধ্যমে সংগ্রহকৃত ৩ অফিসের গম প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রে আসে। কে কিভাবে গম নিচ্ছে তা আমার জানার কথা নয়। সেটা নিজ নিজ অফিস সংশ্লিস্টদের ব্যাপার। এ মৌসুমে প্রায় ১শ মেঃ টন গম বীজ সংরক্ষনের লাখ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আফতাব হোসেন জানান, ভাল বীজ সংরক্ষন কিভাবে করতে হবে বিএডিসি কর্তৃপক্ষ ভাল জানেন। তবে বীজের মান নিয়ে ইতোমধ্যে অনেক কৃষক মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন আমি বিষয়টি সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষকে জানাবো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।