ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড কোম্পানিটি অবসায়ন বা অবলুপ্তি করার কেন নির্দেশ দেয়া হবে তা জানতে চেয়ে হাইকোর্টের শোকজ নোটিশ আরও চার সপ্তাহ স্থগিত থাকবে।
এ সময়ের মধ্যে আবেদনকারীদের সিপি (লিভ টু আপিল) করতে বলা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ আজ এ আদেশ দেয়।
আদালতে ডেসটিনির পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন এ কে এম বদরুদ্দোজা।
এডভোকেট বদরুদ্দোজা বলেন, হাইকোর্টের আদেশের ওপর চেম্বার জজ আদালতের দেয়া স্থগিতাদেশ আরও চার সপ্তাহ বজায় থাকবে। এ সময়ের মধ্যে আবেদনকারীদের সিপি (লিভ টু আপিল) করতে বলেছে আপিল বিভাগ।
ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডকে অবসায়ন বা অবলুপ্তি প্রশ্নে হাইকোর্টের দেয়া আদেশের বিরুদ্ধে গতকাল রোববার আপিল শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশের জন্য আজ সোমবার দিন ধার্য করে দিয়েছিল সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।
ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড কোম্পানিটি অবসায়ন বা অবলুপ্তি করার প্রশ্নে গত ১৫ মে হাইকোর্ট শোকজ নোটিশ দেয়। হাইকোর্টের এ আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে আবেদন করেন ওই কোম্পানির পরিচালক লে জে (অব.) এম হারুন-অর-রশীদ ও ৫ শেয়ার হোল্ডার। ২১ মে চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে ২৭ মে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠায়। সে অনুযায়ি রোববার শুনানি হয়।
ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড কোম্পানির সাত পরিচালকের মধ্যে দুজন কারাগারে, চারজন পলাতক এবং একজন শর্ত সাপেক্ষে (এম হারুন-অর-রশীদ)জামিনে আছে। এছাড়া এ কোম্পানির সকল সম্পত্তি, ব্যাংক হিসাব দুদকের কাছে জব্দ রয়েছে।
জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের পক্ষে আইনজীবী বদরুদ্দোজা বলেন, আইন অনুসারে প্রতি ইংরেজি পঞ্জিকা বৎসরে বার্ষিক সাধারণ সভা করতে হয়। এতে ব্যর্থ হলে কোম্পানির যেকোনো সদস্যের আবেদনক্রমে, আদালত উক্ত কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা আহ্বান করতে অথবা আহ্বান করার নির্দেশ দিতে পারবে এবং আদালত উক্ত সভা আহ্বান অনুষ্ঠান ও পরিচালনার জন্য যেরূপ সমীচীন বলে বিবেচনা করবে সেরূপ অনুবর্তী ও আনুসাঙ্গিক আদেশ দিতে পারবে৷
এ আইন অনুসারে তারা হাইকোর্টে আবেদন করেন। কিন্তু যে ছয়জন আবেদন করেছেন তাদের মধ্যে ডেসটিনির প্রেসিডেন্ট ও প্রাক্তন সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশীদ শর্তসাপেক্ষে জামিনপ্রাপ্ত। জামিনের শর্ত ছিল- তদন্ত পর্যন্ত তিনি এ কোম্পানির কোনো কার্যক্রমের সাথে কোনো রকম সম্পর্ক রাখবেন না। আবেদনে তদন্ত শেষ হয়েছে কি না সে বিষয়ে কিছু বলা নাই। ফলে তিনি আবেদন করতে পারেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। এছাড়া তাদের এজিএমের আবেদনে উল্লেখ আছে, ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কোম্পানির কোনো অডিট নেই।
এ আইনজীবী আরো বলেন, আবেদনে তারা বলেছে, দুদকের মামলায় সমস্ত সম্পদ জব্দকৃত। সে সম্পদ তত্ত্বাবধানে তত্ত্বাবধায়কও নিয়োজিত আছেন। ফলে কোম্পানি হিসেবে এর কোনো কর্মকান্ড নেই। এ ছাড়া সাত পরিচালকের মধ্যে ২০১২ সালের অক্টোবর থেকে কোম্পানির পরিচালক রফিকুল আমীন ও মোহাম্মদ হোসেন জেলে আছেন। চারজন পলাতক। এছাড়া তদন্ত চলাকালে অপর পরিচালক হারুন-অর-রশীদ এ কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করবেন না, এমন শর্তে হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন। দুদকের কারণে ছয় বছর ধরে কোম্পানির কার্যক্রম প্রায় বন্ধ। এখন পরিচালক ছাড়া এজিএম হবে কীভাবে?
এ কারণে আদালত এজিএমের বিষয়ে আদেশ না দিয়ে কোম্পানিটি অবসায়ন করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের প্রতি শোকজ নোটিশ জারি করে বলে জানান আইনজীবী এ কে এম বদরুদ্দোজা।