বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার ছত্রাজিতপুর ইউনিয়নের রশিকনগর শিরোটোলা গ্রামে শ্যামলী খাতুনকে (১৬) হত্যার অভিযোগে তিনদিনের ব্যবধানে ৪ জনকে জনতা আটক করে পুলিশে সোর্পদ করেছে। আটককৃতরা হলো- একই এলাকার মফিজুলের ছেলে নিহতের মামাতো ভাই টুটুল আলী (২২), নাজমুল হকের ছেলে নিহতের চাচা দুরুল (২৩), রশিকনগর উচুডিহির বিলায়েতের ছেলে মুকুল (২৭) ও বিনোদপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে সোহাগ (২৫)। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুধবার ভোর ৩টার দিকে মফিজুলের ছেলে টুটুল নিহতের বাড়ির সামনে ঘোরাঘুরির সময় সাজেমান আলী নামে একজন তাকে আটক করে। এসময় পার্শ্ববর্তী ২-৩ জন যুবক উপস্থিত হয়ে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার এক পর্যায়ে সে শ্যামলী খাতুন হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তার দেয়া তথ্যমতে, এলাকার আরো কয়েকজন যুবক একত্রিত হয়ে দুরুল, মুকুল ও সোহাগকে আটক করে ঘটনাস্থলের পাশের একটি বাড়িতে আটকিয়ে রাখে। আটকের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শত শত মানুষ জমায়েত হয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশকে খবর দেয়া হলে শিবগঞ্জ থানার এসআই জুলহাস মৃধা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উত্তেজিত জনতাকে সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক (অপারেশ) কবির হোসেন অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে জনতা কর্তৃক আটক চারজনকে থানায় নিয়ে আসে। এদিকে এলাকাবাসী জানিয়েছে- আটককৃতরা বেশকিছু দিন ধরে পার্শ্ববর্তী গ্রামে বিভিন্ন ধরণের দোকান পাট ও বাড়ি ঘরে চুরি করে আসছিল। এছাড়া আটককৃতরা গেল বছরে রশিকনগরে আশরাফুলের বাড়িতে প্রবেশ করে তার স্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা করছিল বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, গত রোববার দিবাগত গভীর রাতে একদল সন্ত্রাসী কবির হোসেনের বাড়িতে প্রবেশ করে। প্রথমে কবির হোসেনের স্ত্রী আলিয়ারা বেগম, বড় মেয়ে চাম্পা খাতুন ও শ্যামলী খাতুনের ঘরে প্রবেশ করেই আলিয়ারা বেগম ও চাম্পার মুখে রুমাল দিয়ে অজ্ঞান করে। এরপর তাদের গলায় থাকা তিনটি চেইন ও দুটি টাচ্ মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। যাবার সময় শ্যামলী খাতুন সন্ত্রাসীদের চিনে ফেলায় সন্ত্রাসীরা শ্যামলীকে জোর করে পাশের রুমে নিয়ে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার করে যাবার সময় বাড়ির প্রধান ফটকে শিকল আটকিয়ে পালিয়ে যায়। নিহত শ্যামলী খাতুন ওই এলাকার কবির হোসেনের কনিষ্ঠ কন্যা ও পারঘোড়াপাখিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। পরে রাত সাড়ে তিনটার দিকে পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশিরা সেহেরী খাওয়ার জন্য ডাকতে গেলে বাইরে শিকল দেখে সন্দেহ হলে তারা আত্মচিৎকার করতে থাকে। তাদের আত্মচিৎকারে প্রতিবেশিরা ছুটে আসে এবং ঘরে প্রবেশ করে আলিয়ারা ও চাম্পাকে অচেতন অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছে। পরে পার্শ্ববর্তী রুমে শ্যামলীকে বিছানায় গলায় ওড়না পেচিয়ে পড়ে থাকতে দেখে থানা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এঘটনায় নিহতের মা আলিয়ারা বেগম বাড়ি হয়ে শিবগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
এদিকে শ্যামলী খাতুন হত্যার প্রতিবাদে ও হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে এলাকাবাসী। বুধবার সকালে এলাকাবাসীর ব্যানারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ মহাসড়কের বহলাবাড়ি মোড়ের ছাইতন তলায় এ সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচিতে রশিকনগর গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী গ্রামের পাচঁ শতাধিক নারী-পুরুষেরা অংশ নেয়। একই সঙ্গে সড়কে কাঠ ফেলে মহাসড়ক অবরোধ করে। ঘণ্টব্যাপি অবরোধ ও মানববন্ধনের কারণে উভয় দিকে প্রায় দেড় কিলোমিটার জুড়ে বিভিন্ন প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মানববন্ধনে নিহতের আত্মীয়স্বজনরা হত্যাকারী ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান ও বক্তব্য রাখেন। পরে খবর পেয়ে শিবগঞ্জ থানার এসআই ইকবাল ঘটনাস্থলে পৌঁছে সড়ক থেকে কাঠ সরিয়ে ফেলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।