Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় সামাজিক বনায়নের গাছ লুট

প্রকাশের সময় : ২৫ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শরণখোলা (বাগেরহাট) উপজেলা সংবাদদাতা : বাগেরহাটের শরণখোলার সোনতলা এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫/১ পোল্ডারের বেড়িবাঁধের দুই পাশে রোপণকৃত সামাজিক বনায়নের গাছ লুটে নিচ্ছে দুর্বৃত্তরা। রাতের আঁধারে বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় গাছ কেটে পাচার করা হচ্ছে। স্থানীয় একটি পাচারকারী চক্র এ গাছ পাচারে জড়িত বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে। স্থানীয় বাসিন্দা সামাজিক বনায়ন রক্ষার কাজে নিয়োজিত আবুল হারেজসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনসংলগ্ন দাসের ভারানী থেকে শরণখোলা রেঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকার রাস্তার উভয় পাশের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লুট করছে। ওই চক্রটি এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পারছে না। তারা গভীররাতে নির্বিচারে গাছ কেটে বনায়ন উজাড় করে চলেছে। বনায়নের গাছ চেরাই করে নৌকা ও ট্রলার তৈরির কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এমনকি এলাকার বাইরেও ট্রলার বোঝাই করে পাচার হয়ে যাচ্ছে বনায়নের এসব গাছ। মাঝে মধ্যে দু-একজন পাচারকারী ধরা পড়লেও প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না বনবিভাগ। সামাজিক বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৯০এর দশকে বেড়িবাঁধ রক্ষার জন্য বাঁধের উভয় পাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপণ করা হয়। ২০-২৫ বছরে ওই চারা পরিপূর্ণ গাছে পরিণত হয়। ঝড় জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে বাঁধসহ এলাকা ভাঙনের হাত থেকে গাছগুলো এলাকাবাসীকে রক্ষা করে চলেছে। কিন্তু স্থানীয় একটি পাচারকারী চক্র রাতের আঁধারে তা কেটে নিয়ে যাচ্ছে। বনায়ন রক্ষা কমিটির স্থানীয় সভাপতি মো. আব্দুস সাত্তার খান বলেন, দুবৃত্তরা যেভাবে গাছ লুট শুরু করেছে তাতে কিছুদিনের মধ্যে বনায়ন ধ্বংস হয়ে যাবে। স্থানীয় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বনায়নের গাছ লুটকারীরা সকলেই স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাদের চিহ্নত করে প্রশাসন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বনায়ন রক্ষা পাবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, এলাকার প্রভাবশালী জাকির হোসেনের নেতৃত্বে একটি চক্র ওই গাছ পাচারের সাথে জড়িত। ওই চক্রটি রাতের আঁধারে বনায়নের চাম্বল, মেহগিনি, রেইনট্রি, শিশুসহ বিভিন্ন প্রজাতির পরিপক্ক গাছ কেটে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এলাকা বিক্রি করে আসছে। জাকির নিজে সুন্দরবনের গোপন স্থানে ওই গাছ দিয়ে নৌকা ও ট্রলার তৈরি করছে বলে জানিয়েছেন তারা। উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান পারভেজ বলেন, সোনতলা এলাকার ওই চক্রটি নির্বিচারে বনায়নের গাছ পাচার করে চলেছে। এদেরকে প্রতিরোধ করা না গেলে বন উজাড় হয়ে যাবে। ফলে বেড়িবাঁধ ও এলাকাবাসী মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এ ব্যাপারে জাকির হোসেন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেছেন। উপজেলা সামাজিক বনায়নের কর্মকর্তা মো. ফোরকানুল আলম গাছ লুটের কথা স্বীকার করে বলেন, গত ১৯ জানুয়ারি সোনতলা এলাকা থেকে দুবৃত্তদের ফেলে যাওয়া দুটি গাছ জব্দ করা হয়েছে। বিষয়টির তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় সামাজিক বনায়নের গাছ লুট
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ