পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বলিউডের রঙিন দুনিয়া কাঁপানো গø্যামার গার্ল প্রিয়াংকা চোপড়া শুধু সেলুলয়েড ফিতায় বন্দী নেই। যুদ্ধ বিগ্রহ ও যাপিত জীবনের বাস্তবতায় বিশ্বের নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের পাশেও দাঁড়াচ্ছেন।
দীঘ ১২ বছর ধরে ইউনিসেফের বিশেষ দূত প্রিয়াংকা মানবিকতার টানে যেমন ছুটে গিয়েছিলেন জর্ডানে সিরিয়ান যুদ্ধ বিধ্বস্ত শরণার্থী শিশুদের পাশে দাঁড়াতে। তেমনি মিয়ানমার আর্মির নির্যাতনের শিকার বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুঃখ দুর্দশা দেখতে ছুটে এসেছেন বাংলাদেশের কক্সবাজারে। তিনি দু’দিন থেকে বিভিন্ন ক্যাম্প পরিদর্শন করছেন এবং রোহিঙ্গা শিশুদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। রোহিঙ্গা শিশুদের দুর্দশার চিত্র দেখে বিশ্ববাসীকে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়েছেন।
মিয়ানমারে অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মুসলিম রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প পরিদর্শন করছেন ইউনিসেফের বিশেষ শুভেচ্ছাদূত হয়ে আসা বলিউডের গø্যামার গার্ল খ্যাত অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। তিনি বিশ্ববাসীকে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়েছেন। বলিউড ও হলিউডে খ্যাতির তুঙ্গে থাকা ভারতীয় এই অভিনেত্রী গতকাল উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। এর আগে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশের পথ টেকনাফ সীমান্তের হারিয়াখালী এলাকা পরির্দশন করেন। গত সোমবারও তিনি বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে শিশুদের দুঃখদুর্দশার কথা শোনেন; শিশুদের তিনি আদর করেন এবং আবেগাপ্লুত হয়ে তাদের সঙ্গে কিছু সময় কাটান।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে মিয়ানমারের রাখাইনে সুচির আর্মির বর্বরতা ও হত্যাকাÐ শুরু হলে জীবন বাঁচাতে নাফ নদী পেরিয়ে টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়নের হারিয়াখালী ভাঙা নামক সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। তখন থেকে তারা বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে রয়েছেন। জাতিসংঘ, ওআইসি, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ সারাবিশ্ব রোহিঙ্গাদের ওপর এই জুলুমের প্রতিবাদ করলেও মিয়ানমার স্বৈরশাসকরা কারো কথাই কর্ণপাত করছে না। বরং বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির নামে রোহিঙ্গাদের নিতে তালবাহনা করছে।
প্রিয়াঙ্কা চোপড়া কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ দিয়ে ইউনিসেফের গাড়ীতে করে হারিয়াখালী ভাঙা সীমান্তে পৌছান। এরপর তিনি পাচঁ মিনিট হেঁটে রোহিঙ্গা নারী শিশুরা ও বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা কিভাবে নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছেন সরেজমিন ঘুরে দেখেন। পরে সেখান থেকে ফেরত আসার সময় একটি মসজিদের সামনে ১৫ রোহিঙ্গা শিশুর সঙ্গে কথা বলেন। শিশুরা কিভাবে সীমান্ত পাড় হলো এবং মিয়ানমারে তাদের ওপর কিভাবে নির্যাতন করা হয়েছে সেই বর্বরতার চিত্র জানতে চান। তিনি শিশুদের কে কেমন আছে কিভাবে সংসার চলছে তার খোঁজখবর নেন। পরে টেকনাফ ত্যাগ করার সময় নাইট্যং (উচুঁ) পাহাড়ে গাড়ী থামিয়ে নাফ নদী দেখেন। এসময় ইউনিসেফের কর্মকর্তারা ছাড়াও তার সঙ্গে ছিলেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রনজিত কুমার বড়ুয়া। হারিখালী ভাঙা সীমান্তে রোহিঙ্গা শিশুরা প্রিয়াঙ্কা চোপড়াকে দেখে উচ্ছ¡সিত হয়ে ওঠে। প্রিয়াঙ্কা চোপড়াও তাদের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলেন। শিশুদের সঙ্গে তিনি বাংলা ও হিন্দিতে কথা বলেন। তাদের পড়াশুনার খোঁজ-খবর নেন। মুম্বাই সিনেমার এই নায়িকাকে দেখতে কিছুক্ষণ পরপর ছুটে আসে রোহিঙ্গা শিশুরা। তিনি কাউকে বিমুখ করেননি। এ সময় প্রিয়াঙ্কা সবার সঙ্গে কথা বলেন। শিশুরা খেলাধুলা করছে তা মুগ্ধ হয়ে দেখেন। পরে শিশুদের সঙ্গে হাসি-খুশিতে মেতে ওঠেন। পাশপাশি তাদের সঙ্গে ছবি তোলেন। ফেরার পথে শিশুদের প্রিয়াঙ্কা বলে যান, ‘ফির মিলেঙ্গে’ (আবার দেখা হবে)। এরপর টেকনাফের লেদা বিজিবি চৌকির কাছে ইউনিসেফ পরিচালিত শিশুদের খেলাধুলার জন্য তৈরি মাঠ পরিদর্শন করেন। সেখান থেকে বেলা ১১টার দিকে তিনি টেকনাফের লেদা মেকসিফট সেটেলমেন্ট ক্যাম্পে যাওয়ার কথা থাকলেও গাড়ি থেকে তা দেখতে দেখতে বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের দিকে চলে যান। সেখানে তিনি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন। রোহিঙ্গা বেশ কয়েকজন শিশুর খোঁজখবর নেন এবং তাদের সঙ্গে সময় কাটান। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ইউনিসেফের গাড়িতে মেরিন ড্রাইভ হয়ে আবার রয়েল টিউলিপ হোটেলে ফিরে আসেন তিনি।
ইউনিসেফের একটি সূত্র মতে, বুধবার উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন। ৩ দিন কক্সবাজের অবস্থানের পর আগামী বৃহস্পতিবার ঢাকায় ফিরে সংবাদ সম্মেলন করবেন প্রিয়াঙ্কা। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।