Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে পানিবদ্ধতায় ধান-ভুট্টার ব্যাপক ক্ষতি

বি এম হান্নান, চাঁদপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ২১ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে কয়েকদিনের ঝড় বৃষ্টিতে পানিবদ্ধতায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে। কৃষকের পাকা ও কাঁচা ধান এবং ভ্ুট্টার ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া দেরিতে ভুট্টার আবাদকারী কৃষকের স্বপ্ন ভেঙ্গে গেছে। এ যেন পাকা ধানের মই। কৃষকের চোখে মুখে শুধুই হতাশার ছাপ। কষ্টের সোনালী ফসল ঘরে তোলার চিন্তায় তারা দিশেহারা। ঝড় বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় নষ্ট হচ্ছে মাড়াই করা ধান। চোখের সামনে এ ক্ষতি কৃষক কিছুতেই মানতে পারছে না। পানিবদ্ধতায় কৃষক নৌকা দিয়ে জমিতে গিয়ে ধান কেটে উঁচু স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। এতে শ্রমিক ও পরিশ্রম দুটোই বেশি লাগছে। চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি প্রকৃৃতিক বিরুপ প্রভাবে মলিন হয়ে গেছে। সা¤প্রতি সেচ প্রকল্পের ব্রাহ্মনচক, মরাধন, হানিরপাড়, তালতলী, মিঠুরকান্দি, অলিপুর, রুহিতারপাড়, কালীপুর, সুজাতপুর, কৃষ্ণপুর, ঠাকুরচর বিলে দেখা গেছে বৃষ্টিতে পানিবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। কৃষক পাকা ও আধা পাকা ধান কেটে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও ছোট ঝিনাইয়া, তালতলী, বৈদ্যনাথ পুর, হরিনা, ঘাসির চর, নিশ্চিন্তপুর, সুজাতপুর এলাকার ভুট্টার ফলনসহ গাছ মরে গেছে। এতে কৃষকের পুরোদমে লোকসান গুনতে হবে। বিরাট আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানায়, চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৯শ’ হেক্টর জমিতে ভুট্টা এবং ৯ হাজার ১শ’ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। তালতলী গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান বেপারী (৪৮) বলেন, ‘পানিবদ্ধতার কারণে নৌকা দিয়ে জমিতে ধান কেটে ডাঙ্গায় নিয়ে যাই। এতে আমাদের পরিশ্রম ও ব্যয় বেশি লাগছে।’ ঘনিয়ারপাড় গ্রামের ভুট্টা চাষি রহিম উদ্দিন মোল্লা (৪০) জানান, দুলাল কান্দি বিলে তিনি ১শ’ ১০ শতক জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছেন। বৃষ্টিতে পানিবদ্ধতায় জমির ভুট্টা গাছ ও ফলন নষ্ট হয়ে গেছে। এতে তার প্রায় ৫০ হাজার টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। মরাধন বিলে কথা হয় আরিফ উল্যাহ মাস্টারের সাথে। তিনি জানান, তার ১৩ শতক জমিতে ধান হয়েছে মাত্র ১০ কেজি। অলিপুর নয়াকান্দি গ্রামের শাহআলম লস্কর (৫৫) জানান, পানিবদ্ধতার কারণে তারা বাধ্য হয়ে আধা পাকা ধান কাটছেন। তিনি জানান, ধান যদি না পাই গো-খাদ্য তো হবে। মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের পানি ব্যবস্থাপনা এসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক সরকার আলাউদ্দিন জানান, কালীপুর, উদ্দমদী পাম্প মেশিনগুলো দিন রাত পানি টানছে। তবে ঝড়ের কারণে বিদ্যুৎ চলে গেলে পাম্প মেশিন বন্ধ থাকে। মেঘনা ধনাগোদা (পওর) বিভাগ উপ-সহকারি প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অকারণে পাম্প মেশিন বন্ধ থাকে না। ঝড় বৃষ্টি হলে বিদ্যুৎ না থাকলে হয়তো বন্ধ থাকতে পারে। মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, এ মৌসুমে বোরোর ফলন ভালো বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। তিনি জানান, বোরোর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩৫ হাজার ৮শ’ ২৯ মেট্রিক টন। ভুট্টার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১৩ হাজার ৩শ’ মেট্রিক টন। মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার বলেন, চলতি মৌসুমে বোরোর ফলন ভালো হয়েছে। কৃষক ঠিকমতো সোনালী ধান ঘরে তুলতে পারলে ন্যায্য মূল্য পাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ