পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মিজানুর রহমান তোতা : নিত্যপণ্যের পাশাপাশি রমজানে সবজির মূল্য বেড়েছে অস্বাভাবিক। অথচ এবারের গ্রীষ্মে সবজি উৎপাদনের রেকর্ড যশোরসহ সারাদেশেই পর্যাপ্ত সবজি উৎপাদন হয়েছে। বাজারে সরবরাহও স্বাভাবিক। বিশেষ করে বাজারে পর্যাপ্ত বেগুন রয়েছে। তবু প্রথম রমজানেই বেগুনে লেগেছে আগুন। মাঠে ২৫/৩০ টাকার বেগুন এখন বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১শ’ টাকা। গতকাল খোঁজ নিয়ে জানা গেছে উৎপাদক চাষি পাচ্ছেন প্রতিকেজি বেগুন ২৫/৩০ টাকা। যশোরের বারীনগরের সবজির পাইকারী বাজারটি শহর থেকে মাত্র ৭ মাইল দুরে অবস্থিত। এক কেজি সবজি পরিবহন খরচ লাভসহ সর্বোচ্চ ৫ টাকা হলেও প্রতিকেজি বেগুন সর্বোচ্চ ৩০/৩৫ টাকা হওয়ার কথা। কিন্তু সেখানে বিক্রি হচ্ছে বেগুন ৭০টাকা। অন্যান্য সবজির মূল্যও বেশ চড়া। সাধারণত ৬০ টাকার নীচে কোন সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। মাঠমূল্য আর বাজার মূল্যের বিরাট এই হেরফের কেন হচ্ছে, চাষীরা কি মূল্য পাচ্ছে আর কোন মূল্যে ভোক্তারা ক্রয় করছে তা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কখনো তদন্ত করে দেখা হয় না বলে অভিযোগ। যার জন্য মধ্যস্বত্বভোগী ও মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্র জানায়, এবারও গ্রীষ্মকালীন প্রচুর সবজি উৎপাদন হয়েছে। রমজানে মূল্য বেড়েছে সিন্ডিকেটের কারনে। একজন কৃষি কর্মকর্তা নামপ্রকাশ করতে নিষেধ করে গতকাল ইনকিলাবকে জানান, ‘বাজার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে। মনিটরিং নামে আছে, কাজে নেই। রমজান এলেই সিন্ডিকেটের দাপট কমাতে অভিযান চলে মনিটরিং সেল মিটিং এর মিটিং করে। কিন্তু দাপট কমানো যায় না। এবারও দাপট থামানো যাচ্ছে না। বরং দাপট বেড়েছে বহুগুণে’।
গতকাল যশোরের বারীনগর বাজারের পাশের গ্রাম হৈবতপুরের লিয়াকত আলীর সাথে কথা হয়। তিনি বললেন, আমরা পরিশ্রম করে সবজি উৎপাদন করে খুব একটা লাভ করতে পারি না। অথচ মধ্যস্বত্বভোগী, পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীরা আমাদের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে ব্যবসা করে বিরাট লাভ করছে। যদি মাঠের মূল্য আর বাজার মূল্যের ফারাক দুর করার উদ্যোগ নেয়া হয় তবে উৎপাদক চাষী ও ভোক্তা উভয়েই উপকৃত হবেন। সূত্র জানায়, উৎপাদনে রেকর্ড সৃষ্টি ও সারাদেশের মোট চাহিদার প্রায় ৬০ ভাগ সবজি সরবরাহকারী যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বছরের বারোমাসই সরকারী লক্ষ্যমাত্রার অনেক বেশী জমিতে সবজি আবাদ ও উৎপাদন হয়ে থাকে। প্রতিদিনই স্থানীয় বাজার ছাড়াও রাজধানী ঢাকার কারওয়ানবাজারের পাইকারী আড়তে বিপুল পরিমাণ সবজি সরবরাহ হয়। বারীনগরের লিয়াকত ও চুড়ামনকাঠির জয়নাল আবেদীনসহ বেশ কয়েকজন সবজি উৎপাদক জানান, আমরা সবজি উৎপাদনের পর উপযুক্ত মূল্য পাচ্ছি না, আবার ভোক্তারাও ক্রয় করছে অতিরিক্ত মূল্যে। সবজি বাজারে ফড়িয়া, দালাল ও মধ্যস্বত্বভোগীদের দাপট সবসময় বেশী। কৌশলে তারা সবজির বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। এবারের রমজানে বেগুনে আগুন লাগার আশংকা ছিল আগেই। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। সবজির পাশিাপাশি নিত্যপণ্যের মূল্য বাড়ছেই প্রথম রমজান থেকে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, বেগুন, কচুরমুখী, পটল, লাউ ও টমেটোসহ বিভিন্ন সবজি প্রচুর উৎপাদন হয়েছে। বাজারে সরবরাহও কম নয়। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিন রাজধানীতে ট্রাক ট্রাক সবজি যায়। বাজার নিয়ন্ত্রণের অভাবে সবজি বাজার অস্থির হয়ে উঠছে। এক কেজি বেগুন দু’দিন আগেও বিক্রি হয়েছে ৩০টাকা। আকস্মিকভাবে তা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে যশোরের বাজারে ৬০/৭০টাকা। রাজধানীতে বিক্রি হচ্ছে ৮০/৯০ টাকা। কোথাও আবার ১শ’ টাকা কেজি। মুনাফালোভী ও মধ্যস্বত্বভোগীরা উৎপাদক চাষী ও ভোক্তাদের চোখে ধুলো দিয়ে আর্থিকভাবে বিরাট লাভবান হচ্ছে। খুব কষ্টে সবজি উৎপাদন করে মাঠ থেকে পাইকারী বাজারে সবজি তোলার সাথে সাথে চিলের মতো ছোঁ মেরে পাইকারী ব্যবসায়ীরা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে। আড়তে নিয়ে হিসাব-কিতাব করে অগ্নিমূল্য নির্ধারণ করে সবজি খুচরা বাজারে ছাড়ছে। সবজি সিন্ডিকেটের দাপট দমনে ন্যুনতম কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বিশেষ করে মাঠ ও গ্রামের হাট-বাজারে ব্যবসায়ী নামধারী একশ্রেণীর মুনাফালোভী বিভিন্ন সময় সুযোগ বুঝে সহজ সরল চাষীদের ঠকিয়ে থাকে বরাবরই। যার কোন প্রতিকার নেই। তারা একইভাবে ভোক্তাদেরও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সবজি বাজারে এই প্রক্রিয়া চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু সবজি বাজারের সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়ার জোরদার পদক্ষেপ নেয়া হয় না কখনোই। এ অভিযোগ সবজি চাষী ও ভোক্তাদের। বাজারে চাহিদার তুলনায় অনেক বেশী সবজি থাকা সত্তে¡ও মূল্য কেন বাড়ছে তা তদন্ত করা জরুরি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।