রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
মুহাম্মদ আবু মুসা, জয়পুরহাট থেকে : জয়পুরহাট জেলার কৃষকেরা যে জমিতে এক সময় চাষ করত আখ, গম, পাট, সরিষা, এখন সে জমিতে চাষ করছে ভুট্টা। কৃষকরা ভুট্টা চাষের কথা এক সময় চিন্তাও করতে পারেনি। অথচ আগের সেই দৃশ্যপট পুরোটাই এখন পাল্টে গেছে। ভুট্টা এখন কম খরচে অধিক লাভজনক ফসল হওয়ায় দিন দিন জেলায় ভুট্টা চাষ ব্যপক হারে বেড়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জয়পুরহাট জেলায় ১৯৯১-৯২ সাল থেকে হাতেগোনা কিছু সংখ্যক কৃষক পরীক্ষামূলকভাবে জমিতে ভুট্টা চাষ শুরু করেন। কৃষি বিভাগ বছরের পর বছর ধরে ভুট্টা চাষে চাষিদের আগ্রহ। ভুট্টার চাহিদা বহুবিধ ব্যবহার এবং জেলায় পোল্ট্রি শিল্পের প্রসার ঘটায় ভুট্টার চাহিদা বেড়েছে প্রচুর। জেলায় সাদা হল্যান্ড জাতের আগাম আলু বিক্রি করে ওই জমিতে ভুট্টার ফলসও করা হচ্ছে। ভুট্টা চাষে খরচ কম এবং হাইব্রিড জাতের ভুট্টার ফলনও ভাল। বাজারে প্রচুর চাহিদা থাকায় ভুট্টা বিক্রি করে কৃষকেরা প্রতি বিঘা জমি থেকে খরচ বাদে ১৫-২০ হাজার টাকা লাভ করেছেন। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে জেলায় ৪০৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছিল। চলতি অর্থবছরে জেলায় ভুট্টা চাষ হয়েছে ৬৪২ হেক্টর জমিতে। কৃষকরা এখনও ভুট্টা লাগানো অব্যাহত রেখেছে। জেলায় চলতি মৌসুমে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪৪ হেক্টর জমিতে, যা থেকে ভুট্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৬৫৬ মেঃটন। জেলা সদরের কৃষক মো. রেজাউল ইসলাম, আব্দুস সালাম, মো. আফছার আলী বলেন ভুট্টা চাষে খরচ কম এবং বাজারে দামও ভালো। প্রতি বিঘা জমিতে দুই কেজি বীজ লাগে। প্রতি কেজি বীজের মূল্য ৩০০-৩৫০ টাকা। সার, সেচ, মজুরী, ভুট্টা মাড়াই ও ওষুধসহ ৮-৯ হাজার টাকা বিঘায় খরচ হয়। বিঘা প্রতি ফলন পাওয়া যায় ৩০-৩৫ মণ পর্যন্ত। ভুট্টা শুকিয়ে বিক্রি করে তারা গত বছর ৪শ’-৫শ’ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছেন। এতে খরচ বাদে ১৫-২০ হাজার টাকা করে লাভ করেছেন। ক্ষেতলাল উপজেলার কৃষক আল-আমীন বলেন, গত বছর পাঁচ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছিলেন। এবার তিনি ছয় বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষ করেছেন। গত বছর তার বিঘাপ্রতি ফলন হয়েছিল ৩৮-৪০ মণ। ভুট্টা শুকিয়ে তিনি ৪শ’ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছিলেন। তার এলাকায় ভুট্টা চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জয়পুরহাটে বিপুলসংখ্যক পোল্ট্রি খামাড় গড়ে ওঠায় এবং জেলায় পোল্ট্রি ফিডের কারখানা হওয়ায় ভুট্টার চাহিদা ব্যাপক হওয়ায় কৃষকরা আশানুরূপ দাম পেয়ে ভুট্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। জয়পুরহাট জেলায় এবার মোট ৬৪২ হেক্টর জমিতে ভূট্টা চাষ হয়েছে। এর মধ্যে জয়পুরহাট সদর উপজেলায় ৩৬৫ হেক্টর, পাঁচবিবি উপজেলায় ১৭৭ হেক্টর, ক্ষেতলাল উপজেলায় ২৫ হেক্টর, আক্কেলপুর উপজেলায় ৭৫ হেক্টর জমিতে ভূট্টা চাষ হয়েছে। জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাব্বির ইবনে জাহান বলেন, ভুট্টা ঝুঁকিমুক্ত ফসল। ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকেরা ভুট্টা চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। সময়মত কৃষকদের অল্প মূল্যে বীজ-সার নিশ্চিত করা এবং সংরক্ষণ ও বাজারজাত করা হলে জয়পুরহাট জেলার কৃষকদের মাঝে ভুট্টার চাষ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।