Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বপ্নজয়ী মা সম্মাননা পাওয়া নাজমা রহিম দিনাজপুরের গর্ব

| প্রকাশের সময় : ১৬ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম


মাহফুজুল হক আনার : ‘স্বপ্নজয়ী মা’ এর সম্মাননা পেলেন মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি’র মাতা মোছা. নাজমা রহিম। গত ১৩ মে বিশ্ব মা দিবসে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে জাতীয়ভাবে ‘স্বপ্নজয়ী মা’ হিসাবে সম্মাননা প্রদান করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বেগম মেহের আফরোজ এমপি। তিনি মরনত্তোর স্বাধীনতা পদকে ভূষিত মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বঙ্গন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী সাবেক এমপি এড. এম আব্দুর রহিমের সহধর্মীনি। এম আবদুর রহিমের পর নাজমা রহিমের স্বপ্নজয়ী মার পদক প্রাপ্তি দিনাজপুরের মানুষকে গর্বিত করেছে। আপামর মানুষ তাকে সংবর্ধনা দিয়েছে।
১৯৪৭ সালে দিনাজপুরে জন্মগ্রহণকারী এই মহীয়ষী নারীর সামাজিক কারণে টাঙ্গাইলের ভারতেশ্বরী হোমসের দশম শ্রেণীর ছাত্রী থাকা অবস্থায় এম আব্দুর রহিমের সাথে বিয়ে হয়। অল্প বয়সে বিয়ে হওয়ার ফলে তার নিজের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ বন্ধ হয়ে গেলেও স্বপ্ন মরে যায়নি। নিজের অতৃপ্ত মনকে তৃপ্তিপূর্ণ করতে সন্তানদেরকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন। সংগ্রামময় জীবনসঙ্গি স্বামী এম আব্দুর রহিমের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সক্রিয় থাকা, মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ, একাধিকবার কারাবরণ ইত্যাদি কারণে মহীয়ষী মা নাজমা রহিমকে সংসার ও সন্তানদের মানুষ করার সমস্ত ভার একাই বহন করতে হয়। নারী হয়ে কৃষি নির্ভর সাংসারিক কাজ-কর্ম পরিচালনা ও সন্তান-সন্তুতি মানুষ করা ছিল অত্যন্ত কষ্টের। কিন্তু তিনি নানা সামাজিক চাপ, সমস্যা ও প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে অবিরাম সংগ্রাম করে ছয়জন সন্তানকেই উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন। তার বড় ছেলে এম ইনায়েতুর রহিম বর্তমানে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, কনিষ্ট পুত্র ইকবালুর রহিম দিনাজপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ; কন্যা ডা: নাদিরা সুলতানা জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিভাগের কনসালটেন্ট; কন্যা প্রফেসর ডা. নাসিমা সুলতানা বর্তমানে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক; নাফিসা সুলতানা রংপুর যুব সমাজ উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারম্যান ও সমাজকর্মী এবং নাজিলা সুলতানা একজন সমাজকর্মী। এভাবেই হাজারো সংগ্রামের মাধ্যমে সমস্ত প্রতিকূলতাকে মোকাবেলা করে সন্তানদেরকে উচ্চ শিক্ষিত ও সুপ্রতিষ্ঠিত করার মধ্য দিয়ে তিনি নিজের স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দেন। এছাড়াও মমতাময়ী মা নাজমা রহিম। সকল মায়ের সন্তানদের আদর্শবান, শিক্ষিত ও শুদ্ধ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য স্থাপন করেন নাজমা রহিম ফাউন্ডেশন। এই ফাউন্ডেশন থেকে প্রতি বছর মেধাবী গরিব ছাত্র-ছাত্রীদের দেয়া হচ্ছে নিজ অর্থে উপবৃত্তি। অত্যন্ত কষ্ট, শ্রম ও ত্যাগের বিনিময়ে সকল প্রতিকূলতাকে জয় করে নিজরে দেখা স্বপ্নকে বাস্তবায়নকারী মহীয়ষী এই মাকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয়ভাবে ‘স্বপ্নজয়ী মা’ হিসেবে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ