বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণার সময় শেষ হয়েছে। গতকাল রোববার রাত ১২টায় শেষ হয় প্রার্থীদের সবধরনের প্রচার-প্রচারণা। গত ২৪ এপ্রিল প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে শুরু আনুষ্ঠানিকভাবে হয়েছিল এ প্রচারণা। আগামীকাল মঙ্গলবার বহুল প্রতীক্ষিত কেসিসি নির্বাচন। মধ্যরাত থেকে প্রচারণার শেষ হওয়ার মধ্য দিয়ে ব্যস্ততা কিছুটা কমে গেলেও নির্বাচন নিয়ে প্রার্থীদের মনে কাজ করছে মহাটেনশন। আর ভোটাররা আছেন কাঙ্ক্ষিত সেই ভোটের জন্য।
প্রচারণার শেষদিন বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করেই প্রার্থীরা সম্পন্ন করেন চূড়ান্ত গণসংযোগ। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত তারা নগরের অলিগলি চষে বেড়ান। তাদের পক্ষে নেতাকর্মী সমর্থকরাও প্রচারণায় অংশ নেন। এসব মিছিল, স্লোগান, গণসংযোগ, পথসভায় মুখরিত ছিল গোটা শহর।
প্রচারণা শেষ হওয়ার পর নির্বাচনে কে হবেন নগর-পিতা এ নিয়ে ভোটারদের মধ্যে এখন চলছে ভোটের হিসেব-নিকেশ। নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, সার্বিক বিবেচনায় নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে।
এদিকে, গতকাল রবিবার দুপুর থেকে টহল শুরু করে বিজিবি। নির্বাচনের জন্য ১৬ প্লাটুনে মোট ৬৪০ জন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বিজিবি খুলনা সদর দফতরের টুআইসি মেজর হান্নান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আজ সোমবার দুপুর থেকে ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স বিতরণ করা শুরু হয়েছে । ১ হাজার ৫৬১টি ভোটকক্ষের প্রতিটির জন্য একটি করে ও মোট ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রের প্রত্যেকটির জন্য অতিরিক্ত হিসেব আরও একটি করে ব্যালট বাক্স বরাদ্দ রাখা হয়েছে। খুলনা বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে বিতরণ করা হয়। প্রিজাইডিং অফিসাররা এসব সামগ্রী গ্রহণ করেছেন।
অপরদিকে, নির্বাচন গ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের নিরাপত্তাসহ নগর জুড়ে নেয়া হয়েছে বাড়তি প্রস্তুতি। এছাড়া গতকাল রোববার মধ্যরাত থেকে নির্বাচনের পরের দিন অর্থাৎ ১৬ মে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মটর সাইকেল এবং আজ সোমবার রাত ১২টা থেকে ১৫ মে রাত ১২টা পর্যন্ত মহানগরে কার, বাস, জিপ, বেবিট্যাক্সি, অটোরিকশা, ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, পিকআপ, ট্রাক ও টেম্পো চলাচলের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি)।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) মুখপাত্র সহকারী পুলিশ কমিশনার সোনালী সেন বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে মহানগরের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কেএমপির পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ভোটের দিন পুলিশ, র্যাব, আনসার, বিজিবি ও এপিপিএনের প্রায় ১০ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
নির্বাচন থেকে বিএনপি সরে দাঁড়াবে না- মঞ্জু
বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু জানান, খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন থেকে বিএনপি সরে দাঁড়াবে না। নির্বাচনের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘খুলনা শহরব্যাপী পুলিশের ধরপাকড় অভিযান চলছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি হামলা-ভাঙচুর হচ্ছে। সারা শহরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে।’
নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ‘সরকারের হস্তক্ষেপে কোনও নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না কেসিসির নির্বাচনেও সেটা প্রমাণ হচ্ছে। এত কিছুর পরও বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবে না। কারণ, সরকারের আসল চেহারা জনগণের কাছে তুলে ধরার এটাই হচ্ছে সর্বোচ্চ সুযোগ। এই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে জনগণ আওয়ামী লীগের প্রকৃত চরিত্র উপলব্ধি করছে এবং করবে। জনগণ সঠিক রায় দিয়ে এর জবাব দিতে পারবে যদি নির্বাচন সুষ্ঠু হয় এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকে।’
খুলনার মানুষ নৌকার বিজয়ের প্রহর গুনছে: খালেক
খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে জনগণ নৌকার বিজয়ের প্রহর গুনছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক। তিনি বলেন, ‘জনগণ খুলনার উন্নয়ন চায়। গত ৫ বছর খুলনা সিটির মানুষ কোনও উন্নয়ন পায়নি। নাগরিকরা আর বঞ্চিত ও অবহেলিত থাকতে চান না। তাই তারা আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় নৌকার বিজয় দেখতে চায়।’
আব্দুল খালেক বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মধ্য দিয়েই ৩১টি ওয়ার্ডে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা শেষ করেছি। এখন পর্যন্ত আইন শৃঙ্খলা পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবেই নির্বাচন সম্পন্ন হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপি অপপ্রচার চালাচ্ছে। গণসংযোগ করার সময় কোথাও বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঠে দেখতে পাইনি। যারা মাঠেই নেই পুলিশ কর্তৃক তাদের হয়রানির প্রশ্নই ওঠে না। নির্বাচনের সামগ্রিক পরিবেশে খুলনার মানুষ সন্তুষ্ট।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।