Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুর্ভোগের শেষ কোথায়

ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর দু পাশে ৫০ কিলোমিটার যানজট

প্রকাশের সময় : ১৩ মে, ২০১৮, ১১:১২ পিএম | আপডেট : ১:২২ পিএম, ১৪ মে, ২০১৮
  • রোগী ও শিশুদের সীমাহীন দুর্ভোগ
  • প্রতিবাদে আজ থেকে পরিবহন ধর্মঘট
  • যানজটের জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন সেতুমন্ত্রী
  • ১৫ মে রেল ওভারপাসের একটি অংশ চালু করে হবে

মোঃ আকতারুজ্জামান ও মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন : কেনোভাবেই কমছে না, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী অংশে সৃষ্ট যানজট। গতকালও চট্টগ্রামের বারইয়ারহাট থেকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার সড়ক জুড়ে সৃষ্টি হয় ভয়াবহ যানজট। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সড়কটি ব্যবহারকারীরা। এছাড়া দীর্ঘ যানজটের কারণে চলতি পথে খাবার পানি, খাবার ও শৌচাগার সঙ্কটে পড়েন যাত্রীরা। বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন শিশু ও বয়স্করা। যানজটের শিডিউল বিপর্যয়, বেশি জ্বালানী খরচ এবং আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। এদিকে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ফেনীর যানজটের ছবি পোস্ট করে অনেকে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীকে যানজট নিরসনে দ্রæত উদ্যোগ নেওয়ার আহবান জানিয়েছেন। কোন কোন এলাকায় চট্টগ্রামমূখী গাড়িগুলো ধীরগতিতে এগুলেও ঢাকামূখী কোন গাড়ি নড়ছেনা । মহাসড়কে এ যানজট, জনভোগান্তি দূর ও রাস্তা সংস্কারের দাবিতে আজ সোমবার থেকে ধর্মঘট ডেকেছে চট্টগ্রাম আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক-পরিবহন ইউনিয়ন।
কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ সোমবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ থাকবে। এর পরও যানজট নিরসন না হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আগামীকাল দুপুর ১২টা থেকে তিন ঘণ্টার জন্য এ রুটে যান চলাচল বন্ধ থাকবে। আর পরিস্তিতি স্বাভাবিক হতে আরো ২০-২৫ দিন সময় লাগবে বলে জানালেন সেতুমন্ত্রী। গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের মন্ত্রী জানান, ফেনী রেলও ওভার পাসের কারনে যানজট হচ্ছে। এতে মানুষের কষ্ট হচ্ছে। বিকল্প কোন পথ নেই। সবাইকে একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে। আমি এজন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। একটা লেন ১৫মে খোলা হবে। এতে একটু সস্তি মিলবে। পুরো সমস্যার সমাধাত হতে ২০-২৫ দিন সময় লাগবে বলে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার ডিপার্টমেন্ট থেকে আমাকে জানিয়েছেন।
হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবদুল আউয়াল জানান, ‘ফতেহপুর রেলওয়ে ওভারপাসের নির্মাণ কাজ চলায় যানজট দিন দিন তীব্র আকার ধারণ করছে। টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে পুরো ১ কিলোমিটার রাস্তা। পাশাপাশি চার লেনের গাড়িগুলো চলছে এক লেনে। ফলে যানজট লাঘব করা সম্ভব হচ্ছে না। তবুও মহাসড়কে যানজটমুক্ত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশের একাধিক টিম।’ ‘আগামীকাল রেল ওভারপাসের একটি অংশ চালু করে হবে। আর সেটি হলে যানজটের বিড়ম্বনা আর থাকবে না। পুরতান ট্রাংক রোডের বিকল্প রাস্তাটিও চলাচলের উপযোগী করা হচ্ছে। এতে পরিবহনগুলোর যেমন সময় বাঁচবে, তেমনি যানজট লাঘব হবে’ বলেও জানান তিনি।
চালকদের অভিযোগ, পুলিশের অতিরিক্ত হয়রানির কারণে বাড়তি দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে আবদুল আউয়াল নামে এক কাভার্ডভ্যান চালক জানান, ‘চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যেতে পুলিশের সঙ্গে প্রতি জায়গায় হাত মেলাতে হয়। এতে করে এক হাজার থেকে ১৫ শ টাকা পুলিশকে দিতে হয়।’
ফতেহপুরে রেলওভার পাসের আল আমিন কনস্ট্রাকশনের প্রজেক্ট ম্যানেজার মীর্জা মহিউদ্দিন জানান, আগামী ১৫ মে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যান চলাচলের জন্য চালু করা হবে রেলওভারপাসের একটি অংশ। এ ছাড়া রোজা এবং ঈদকে সামনে রেখে চালু করা হচ্ছে এটা। ঈদে ঘরমুখো মানুষের বাড়ি ফেরা নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে দিনরাত চলছে রেল ওভারপাসটির নির্মাণ কাজ। এটি চালু হলে মহাসড়কে যানজট নিরসনে কিছুটা ভূমিকা রাখবে। তিনি আরও জানান, ঢাকামুখী গাড়িগুলো সরাসরি চলে যাবে ওভারপাসের উপর দিয়ে। পাশাপাশি ঢাকা থেকে চট্টগ্রামমুখী যানগুলো আপাতত নিচ দিয়ে যাতায়াত করবে। আর চলতি বছরের আগস্টে ওভারপাসটি পুরোদমে মুক্ত করা হবে যানচলাচলের জন্য।
পরিবহন ব্যবসায়ীরা জানান, দুপাশ চালু ছাড়া সুফল পাওয়া যাবে না সহজেই। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ফেনীর ফতেহপুরে রেলওভার পাস নির্মাণের কারণে প্রতিদিনই যানজটে যাত্রী ও চালকদের পোহাতে হতো চরম দুর্ভোগ।
সেনাবাহিনী সূত্র জানায়, দীর্ঘসময়ের এই যানজট নিরসনে বাংলাদেশ সরকার সেনাবাহিনীর ২০ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশনের তত্বাবধানে আল আমিন নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ২০১৭ সালের মার্চ মাসে ৬০ কোটি ৫১ লাখ টাকা ব্যয়ে রেলওভার পাস নির্মাণের কাজ দেয়। আর ৮৪৫ মিটার দৈর্ঘ্য ও ২২ মিটার প্রস্থের ফ্লাইওভারটির নির্মাণ কাজ তিন বছর আগে শুরু হলেও প্রথম ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শিপু বিপিএল নানা জটিলতায় কাজ শেষ না করেই ছেড়ে দেয়। পরবর্তীতে দায়িত্ব পায় সেনাবাহিনী। এরপর দ্রæত গতিতে চলে কাজ। ফলে দীর্ঘ সময়ের অসহনীয় যানজটের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে চলাচলকারী লাখো যাত্রীসহ পণ্যবাহী গাড়িগুলো।
সওজ ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ করিম বলেন, আমরা ইতিমধ্যে স্টার লাইন সেন্টার- ফেনী শহর টু লালপোল সড়কটিকে দ্রæত সংস্কার করে সচল করেছি। এখানে ট্রাফিক ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। এ ছাড়া ফেনীর রেলগেট ছাড়াও আরও ১০ কিলোমিটার এলাকা শিগগিরই সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি



 

Show all comments
  • কাওসার আহমেদ ১৪ মে, ২০১৮, ১:৪৩ এএম says : 0
    মহান আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন
    Total Reply(0) Reply
  • খুরশিদ আলম ১৪ মে, ২০১৮, ১:৪৪ এএম says : 0
    আমাদের মন্ত্রী মহোদয় কী এসব দেখেন না ?
    Total Reply(0) Reply
  • গোলাম ফারুক ১৪ মে, ২০১৮, ১:৪৬ এএম says : 0
    মহাসড়কের সকল বড় কাজের দায়িত্ব সেনাবাহিনীকে দেয়া উচিত
    Total Reply(0) Reply
  • রাসেল ১৪ মে, ২০১৮, ১:৪৮ এএম says : 0
    মহাসড়কে এ যানজট, জনভোগান্তি দূর ও রাস্তা সংস্কার ......... এসব ছেড়ে খালি বিরোধী রাজনৈতিক মতাদর্শের লোকদের নিয়ে পরে থাকলে এমন ভোগান্তি তো হবেই !
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দুর্ভোগ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ