পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
মাহে রমযানের অন্যতম আমল হলো কুরআনে কারীম তিলাওয়াত আর তারাবীহ নামাযে জামায়াতের সাথে ২০ রাকাতে কুরআন তিলাওয়াত ও শুনা এক রহমত ও বরকতের আমল। যা প্রিয়নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগ থেকে আজ পর্যন্ত চলে এসেছে। মাহে রমজান আসলে রোজাদারগণ আনন্দঘন পরিবেশে আল্লাহর ঘর মসজিদে সমবেত হন। কুরআনের নুরে দেহ, মন, মানসিকতাকে নুরানী করেন কিন্তু শয়তান বসে নেই। যদিও প্রধান শয়তানকে বেঁধে রাখা হয় তার চেলা চামুন্ডরা সক্রিয় হয়ে মানুষকে ইবাদত থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করে। সকল যুগের সকল ইমামগণের ইজমাকে ভ্রæক্ষেপ না করে মনগড়া ভাবে তারাবীহ নামাজ ২০ রাকাত না ৮ রাকাত এ সন্দেহ ঢুকিয়ে দিয়ে লক্ষ লক্ষ মুসলমানকে গোমরাহ করছে যা সত্যিই দুঃখজনক। তবে তাদের পক্ষে যে কোন দলিল নেই এটা সর্বজন স্বীকৃত কথা। আজ পর্যন্ত যতবারই চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে তারা তা গ্রহণ করতে সক্ষম হয় নি। যারা ২০ রাকাত তারাবীহ আদায় করছেন তারা যেন বিভ্রান্ত না হন এ জন্য বিষয়টি দলিলভিত্তিক আলোচনা প্রয়োজন মনে করছি। তাই মনযোগের সাথে নিবন্ধটি পাঠ করার অনুরোধ করছি।
তারাবীহ এর পরিচয়
শাব্দিক পরিচয় : তারাবীহ অর্থ আরাম, অবসর, ২০্রাম, বিরতি।
শরীয়তের পরিভাষায় : রমজানুল মোবারক রাতে এশার নামাজের পর যে নামাজ পড়া হয় তাকে তারাবীহ এর নামাজ বলা হয়।
আত তারাবীহ শব্দটি তারবিয়াহ শব্দের বহুবচন। মূলত শব্দটি মাসদার। যার অর্থ ২০্রাম নেয়া। প্রতি চার রাকাত নামাযের পর সম পরিমাণ সময় আরাম বা ২০্রাম নেয়া হয় বলে একে সালাতুত তারাবীহ বলা হয়। এ সময় টুকু ২০্রাম নেয়া বা বিরতি দিয়ে পড়া সুন্নত। (আল বাহরুর রায়েক শরহু কানযুদ দাকায়েক; খÐ ২, পৃ. ৭১)
তারাবীহ নামাজ ২০ রাকাত
হজরত আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজান মাসে ২০ রাকাত এবং বেতের পড়তেন। (মুসান্নাফে ইবন আবী শাইবা, খÐ ২, পৃ. ৩৯৪; আল মুজামুল কাবীর লিত তবরানী, হাদীস নং ১২১০২, খÐ ১১, পৃ. ৩৯৩; মাজমাউজ যাওয়াইদ, খÐ ৩, পৃ. ৪০২; সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং ৪৩৯১)
হজরত জাবের ইবন আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘রমজান মাসের এক রাতে রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাহিরে তাশরীফ নিয়ে এলেন। আর সাহাবায়ে কেরামকে ২৪ রাকাত (৪ রাকাত ঈশার, আর ২০ রাকাত তারাবীহের) নামাজ পড়ালেন। আর তিন রাকাত বেতের পড়ালেন’। (তারীখে জুরজান, খÐ ১, পৃ. ৩১৬)
হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এর শাসনামল
হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর আদেশ
হজরত ইয়াহইয়া ইবন সাঈদ রহমাতুল্লাহি আলাইহ থেকে বর্ণিত, ‘নিশ্চয়ই ওমর ইবন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু এক ব্যক্তিকে ২০ রাকাত পড়ার হুকুম দিলেন’। (মুসান্নাফে ইবন আবী শাইবা, খÐ ২, পৃ. ১৬৩)
হজরত সায়েব রহমাতুল্লাহি আলাইহ বলেন, ‘হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এর সময়কালে ২০ রাকাত তারাবীহ ছিল’। (ফাতহুল বারী শারহে সাহীহিল বুখারী, খÐ ৪, পৃ. ২৫৩)
হজরত সায়েব ইবন ইয়াজিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর সময় আমরা রমজান মাসে ২০ রাকাত তারাবীহ পড়তাম’। (সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, খÐ ২, পৃ. ৪৯৬; মুয়াত্তা ইমাম মালিক, খÐ ১, পৃ. ৩৫৫; মুসনাদে ইবন জা’দ, খÐ ১, পৃ. ৪১৩; উমদাতুল কারী শারহে সহীহীল বুখারী, খÐ ৮, পৃ. ৪৮৫; মরকাতুল মাফাতীহ শারহে মিশকাতুল মাসাবীহ, খÐ ৪, পৃ. ৪৩৫; আলহাবী লিল ফাতওয়া, খÐ ১, পৃ. ৩৩৬ )
হজরত সায়েব ইবন ইয়াজিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর সময় আমরা ২৩ রাকাত তারাবীহ পড়তাম’। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, খÐ ৪, পৃ. ২৬১)
হজরত সায়েব ইবন ইয়াজিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমরা হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এর শাসনামলে ২০ রাকাত তারাবীহ ও বেতের পড়তাম। (আস সুনানে সগীর লিল বায়হাকী, হাদিস নং ৬৪৮, খÐ ২, পৃ. ২৫৮; ম’রেফাতুস সুনান ওয়াল আসার লিল বায়হাকী, হাদিস নং ১৪৪৩, খÐ ৪, পৃ. ২০৭)
ইমাম নববী রহমাতুল্লাহি আলাইহি, সুবকী রহমাতুল্লাহি আলাইহি (শরহুল মিনহাজ), মোল্লা আলী কারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি (শরহুল মুয়াত্তা) ও সুয়ুতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এ বর্ণনাকে সহীহ বলেছেন।
মুহাম্মদ ইবন আল কুরাজী রহমাতুল্লাহি আলাইহ বলেন, হজরত ওমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু আনহু এর শাসনামলে লোকেরা রমজান মাসে ২০ রাকাত তারাবীহ ও তিন রাকাত বেতের পড়তো।
হজরত ইয়াজিদ ইবন রুমান বলেন, ‘লোকেরা হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর শাসনামলে রমজান মাসে ২০ রাকাত তারাবীহ এবং তিন রাকাত বেতের আদায় করতো। (মা’রেফাতুস সুনান ওয়াল আসার, হাদিস নং ১৪৪৩, খÐ ৪, পৃ. ২০৭; আল মুয়াত্তা লিল মালেক, হাদিস নং ৩৮০, খÐ ২, পৃ. ১৫৯; আস সুনানে কাবীর লিল বায়হাকী, হাদিস নং ৪৮০২, খÐ ২, পৃ. ৪৯৬)
হজরত হাসান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, ‘হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু লোকদেরকে হজরত উবায় বিন কাব রাদিয়াল্লাহু আনহুর কাছে একত্র করে দিলেন। আর তিনি লোকদের ২০ রাকাত তারাবীহ পড়াতেন। (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা, খÐ ১, পৃ: ৩৫০; সুনানে আবু দাউদ, খÐ ১, পৃ. ৫৩৮ হাদিস নং: ১৪৩১)
হজরত উবায় ইবন কাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আমাকে এই মর্মে আদেশ দিলেন যে, আমি যেন লোকদেরকে তারাবীহ পড়াই। তাদেরকে নিয়ে ২০ রাকাত আদায় করা হল। (কানযুল উম্মাল ফি সুনানে আকওয়াল ওয়াল আফয়াল, খÐ ৮, পৃ. ৪০৯)
ইমাম বায়হাকী, আল্লামা রাজী, কুসতলানী, ইবন কুদামা, ইবন হাজার মক্কী, তাহতাবী, ইবন হুমাম, বাহরুর রায়েক প্রণেতা রহমাতুল্লাহি আলাইহিম প্রমুখগণ এ ব্যাপারে একমত হয়ে বলেন, হজরত ওমর ফরুক রাদিয়াল্লাহু আনহুর শাসনামলে ২০ রাকাত তারাবীহের উপরই সকলের সিদ্ধান্ত স্থির হয় এবং এভাবেই চলতে থাকে। ইংরেজ আমলের পূর্বে কোন একজন মুহাদ্দিস বা ফক্বীহ এটাকে অস্বীকার করেননি। আর সুন্নত হওয়ার জন্য সেটির নিরবচ্ছিন্ন হওয়া শর্ত। হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন যে, যদি আমার পর কোনো নবী হতো তবে ওমর হতো। তিনি আরো বলেছেন, দ্বীনের ব্যাপারে সবচেয়ে মজবুত হলেন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু। যদি ২০ রাকাত তারাবীহ নামাজ বিদআত হয়, তাহলে হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুসহ সে সময়কার সমস্ত আনসার ও মুহাজির সাহাবীগণের বিদআতি হওয়ার আবশ্যক হয়। ইবন তাইমিয়া বলেন, উবাই ইবন কাব রাদিয়াল্লাহু আনহু মুহাজির ও আনসার সাহাবীদের মাঝে তারাবীহ এর নামাজ পড়াতেন। কোন একজনও এ ব্যাপারে আপত্তি উত্থাপন করেনি’। (মাজমুআয়ে ফাতাওয়া ইবন তাইমিয়া, খÐ ৩৩, পৃ. ১১২)
হজরত উসমান রাদিয়াল্লাহ আনহুর শাসনামল
হজরত সায়েব ইবন ইয়াজিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহ বলেন,
হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এর শাসনামলে লোকেরা ২০ রাকায়াত তারাবীহ পড়তেন। আর হজরত উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু এর শাসনামলে লম্বা কেরাতের কারণে লাঠির উপর ভর দিতেন। (সুনানে বায়হাকী আল কুবরা, খÐ ৪, পৃ. ২৯৬)
হজরত উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুর শাসনামলের একজন ব্যক্তির নামও বলা যাবে না, যে ব্যক্তি আট রাকাত পড়ে জামাত থেকে বেরিয়ে যেত। কিংবা কেউ ২০ রাকাত তারাবীহকে বিদআত বলেছে এমন একজন ব্যক্তিও পাওয়া যাবে না।
হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুর শাসনামল
হজরত আবু আব্দুর রহমান আস সালামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
হজরত আবু আব্দুর রহমান আস সালামী রহমাতুল্লাহি আলাইহ বলেন, হজরত হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু রমজান মাসে ক্বা’রীদের ডাকতেন। তারপর তাদের মাঝে একজনকে ২০ রাকাত তারাবীহ পড়াতে হুকুম দিতেন। আর বিতিরের জামাত হজরত আলী নিজেই পড়াতেন।
হজরত আবুল হাসনা রহমাতুল্লাহি আলাইহ বলেন,
হজরত আবুল হাসনা বলেন, হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু এক ব্যক্তিকে পাঁচ তারবীহ এর সাথে ২০ রাকাত পড়াতে হুকুম দিয়েছেন। (সুনানে বায়হাকী আল কুবরা, খÐ ২, পৃ. ৪৯৭)
হজরত ওমর ও উসমান ও আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুম খোলাফায়ে রাশেদীন ছিলেন। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন,
তোমাদের জন্য আমার সুন্নাত ও খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাত মেনে চলা অত্যাবশ্যকীয়। সর্বশক্তি নিয়োগ করে এ সুন্নাত পালন করবে। (সুনান ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৪২, খÐ ১, পৃ. ৪৯; জামেয়ূল উসুল ফী আহাদিসির রাসূল, খÐ ১, পৃ. ১১৭; তাহাবী শরীফ, খÐ ৩, পৃ. ১৮৩)
খোলাফায়ে রাশেদীন যে আদেশ দিয়েছেন, আমল করেছেন, যার উপর ইজমা হয়েছে, তার বিরোধীতা করা ধৃষ্টতা ছাড়া কিছুই নয়। যারা এর বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, তারা কি বিষয়টি একটুও ভাবেন না?
ইংরেজ শাসনের আগে তৎকালীন কোন আলেম পাওয়া যাবেনা, যারা আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুর শাসনামলের ২০ রাকাত তারাবীহ পড়াকে অস্বীকার করেছেন। কোন ব্যক্তি সেই সময়ের একজন ব্যক্তির নামও বলতে পারবে না যে, কেউ আট রাকাত তারাবীহ পড়ে মসজিদ থেকে বেরিয়ে যেত। এ দ্বারা প্রমানিত হল যে, রমযানে এশার নামাযের পর ২০ রাকাত নামাযের নাম তারাবীহ, যা হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন। কোন খলীফায়ে রাশেদীন বা কোন সাহাবী আট রাকাআতের সাথে তারাবীহ শব্দ উচ্চারণ করেন নি।
হজরত জায়েদ ইবন ওহাব রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
হজরত জায়েদ ইবন ওহাব বলেন, হজরত আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু আমাদের তারাবীহ পড়িয়ে ফারিগ হতেন এমতাবস্থায় যে, তখনো রাত অনেক বাকি থাকতো, ইমাম আ’মাশ বলেন, তিনি ২০ রাকাত তারাবীহ আর তিন রাকাত বেতের পড়াতেন। (কিয়ামুল লাইল, পৃ. ১৫৭)
সাহাবায়ে কিরামগণের মধ্যে হজরত আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন খোলাফায়ে রাশেদীনের পর পঞ্চম স্থানে। তিনি ছিলেন ফকিহ, তাঁর আমলের বিরুদ্ধে অবস্থান করা যে কত বড় ধৃষ্টতা, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
জমহুর সাহাবা রাদিয়াল্লাহু আনহুমের মত
হজরত ইমাম আবু হানীফা ইমাম হাম্মাদ হজরত ইবরাহীম (মৃ. ৯৬ হি.) থেকে বর্ণনা করেন যে, ‘নিশ্চয় লোকেরা (সাহাবী ও তাবেয়ীগণ) রমজান মাসে পাঁচ তারবীহের সাথে ২০ রাকাত তারাবীহ পড়তো। (কিতাবুল আসার লিআবী ইউসুফ)
হজরত আব্দুল আজীজ ইবন রফী থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত উবায় ইবন কাব রাদিয়াল্লাহু আনহু লোকদেরকে রমজান মাসে মদীনা মুনাওয়ারায় ২০ রাকাত তারাবীহ এবং তিন রাকাত বেতের নামাজ পড়াতেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা, খÐ ২, পৃ. ৩৯৩)
বিশিষ্ট তাবেয়ী হজরত আতা (মৃ. ১১৪ হি.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি লোকদের (সাহাবী ও তাবেয়ীগণ) ২০ রাকাত তারাবীহ এবং তিন রাকাত বেতের পড়তে দেখেছি।
তাবেয়ীগণ রহমাতুল্লাহি আলাইহির অভিমত
হজরত সুয়াইদ ইবন গাফালা যিনি বয়সে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে মাত্র তিন বছরের ছোট ছিলেন। তিনি ইমামতি করতেন। হজরত আবুল হাজীব বলেন,
হজরত সুইয়াইদ ইবন গাফালা রমজান মাসে আমাদের জামাতের সাথে পাঁচ তারবিহায় ২০ রাকাত নামাজ পড়াতেন। (আস সুনানে কাবীর লিল বায়হাকী, প্রাগুক্ত, পৃ. ৪৯৬)
হজরত আবুল বুখতারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, তিনি রমজানে পাঁচ তারবিহায় ২০ রাকাত ও তিন রাকাত বেতের পড়তেন।
হজরত সাঈদ ইবন আবু উবায়েদ থেকে বর্ণিত, হজরত আলী ইবন রাবীয়া পাঁচ তারবিহা তথা ২০ রাকাত তারাবীহ এবং তিন রাকাত বেতের জামাতের সাথে পড়তেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা, খÐ ২, পৃ. ৩৯৩)
এ সকল হাদীস দ্বারা বুঝা যায় যে, ২০ রাকাআতের সাথে তারাবীহ শব্দ এবং ২০ রাকাত তারাবীহের আমল তাবেয়ীগণের মাঝে বিনা প্রতিবাদে নির্বিঘেœ প্রচলিত ছিল। আর পুরো খাইরুল কুরুনে কোন এক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা যাবে না, যে ব্যক্তি ২০ রাকাত তারাবীহকে অস্বীকার করেছেন বা অপছন্দ করেছেন। কিংবা ২০ রাকাত তারাবীহকে বিদআত বলেছেন বা আট রাকাত জামাতের সাথে পড়ে মসজিদ থেকে বেরিয়ে গেছেন। পুরো খাইরুল কুরুনের মাঝে আট রাকাআতের সাথে তারাবীহ শব্দ ব্যবহার করেছেন এরকম কোন প্রমাণ কোথাও বিদ্যমান নেই।
লেখক : [বিশিষ্ট আলেম, ইসলামী চিন্তাবিদ ও চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ]
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।