Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রূপগঞ্জে দুই মহাসড়কে ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশের বেপরোয়া চাঁদাবাজি

প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মো. খলিল সিকদার, রূপগঞ্জ থেকে : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়ক ও ঢাকা সিলেট মহাসড়কে চলাচলরত বিভিন্ন যানবাহনে ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ বেপরোয়া চাঁদাবাজি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে পুলিশের কাছে চাঁদাবাজির শিকারসহ বিভিন্নভাবে হয়রানির কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছে পরিবহন শ্রমিকরা।
শুধু তাই নয়, এ চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে উপজেলার এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়ক ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এখন যানজট নিত্যদিনের। পরিবহন শ্রমিকরা এখন পুলিশের রেকার চাঁদাবাজিতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। চাঁদার টাকা না দেওয়া হলে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে দেওয়া হয় মামলা। এতে করে ক্ষুব্ধ পরিবহন শ্রমিকরা চাঁদা দিয়েই চলেছেন। গোলাকান্দাইল ও ভুলতা এলাকায় রাস্তার পাশে গাড়ি থামলেই রেকার লাগিয়ে ছোট বড় বিভিন্ন ধরনের যানবাহন হাইওয়ে ও ট্রাফিক পুলিশের আওতায় নিয়ে চাঁবাজির ঘটনা এখন ওপেন সিক্রেট। তবে হাইওয়ে ও ট্রাফিক পুলিশের দাবি, যানজট নিরসনের জন্যই পরিবহন চালকদের চাপে রাখতে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রেকার চাঁদাবাজিতে হাইওয়ে পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশের মাঝেও চলছে দ্বন্দ্ব।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম ও ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর বেনজির আহাম্মেদের নির্দেশক্রমে তাদের নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা এ চাঁদাবাজিতে মেতে উঠেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রতিদিনই দুটি মহাসড়কে কোনো না কোনো দুর্ঘটনা ঘটছে। এসব দুর্ঘটনায় বাদী-বিবাদী উভয়কে বিভিন্নভাবে জিম্মি করে লাখ লাখ টাকা আদায় করছে শরিফুল ইসলাম ও বেনজির আহাম্মেদ। এতে করে বাদী-বিবাদী উভয় পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়ক ও ঢাকা সিলেট মহাসড়কে ভুলতা-গোলাকান্দাইলসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কের পাশে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা ও বেবিটেক্সি, বাস, ট্রাক রাখছেন পরিবহন শ্রমিকরা। আর এসব যানবাহনে রেকার লাগিয়ে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করছে ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশ।
অভিযোগ রয়েছে, ট্রাফিক পুলিশের টিএসআই দেব কুমার ও হাইওয়ে পুলিশের সার্জেন্ট আনোয়ার হোসেন বেবী-সিএনজি এবং কাগজপত্রবিহীন গাড়ি থেকে মাসিক মাসোয়ারা নিয়ে গাড়ি চলতে সহায়তা করছেন। এছাড়া মাসোহারার বিনিময়ে কাগজপত্রবিহীন লক্কড় ঝক্কড় লেগুনা ও বাস চলাচলে মৌখিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এসব যানবাহন সড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে। টোকেনের মাধ্যমে দেওয়া- নেওয়া হচ্ছে মাসোহারা। টোকেন দেখালে পুলিশ ওইসব গাড়ি আটক করছে না। এসব চাঁদাবাজি থেকে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম ও ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর বেনজির আহাম্মেদ পাচ্ছেন ভাগ। স্থানীয় পরিবহন মালিক ও চালকদের সাথে আলাপকালে বেরিয়ে আসে এসব তথ্য।
মহাসড়ক এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পুলিশের সামনেই দু-স্টক বেবী স্ট্যান্ড, যে গাড়ি সড়ক-মহাসড়কে একেবারেই নিষিদ্ধ। আর এসব গাড়ি পুলিশের চোখের সামনেই চলছে। ট্রাফিক ও হাইওয়ের পুলিশের নিয়ন্ত্রণে থাকায় ওইসব গাড়ি হাইওয়ে ও মহাসড়কের প্রায় ৮/১০ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত যাতায়াত করছে।
পরিবহন মালিকরা জানায়, দুর্ঘটনা কবলিত গাড়িগুলো তাদের না জানিয়ে হাইওয়ে পুলিশ বিভিন্ন গন্তব্যে নিয়ে যায়। যানবাহনগুলো পুলিশের হস্তগত হওয়ার পর অনেক সময় মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়া যাচ্ছে। দ্রুত নেওয়ার পর মালামাল ঠিক থাকলে সময় গড়ালে খোয়া যায় যন্ত্রাংশ। থাকে না গাড়ির ব্যাটারি। স্থানীয়দের দাবি, দুর্ঘটনার পর আহত ও নিহত লোকজনের খোঁজ-খবর না নিয়ে হাইওয়ে পুলিশ ব্যস্ত হয়ে যায় গাড়িগুলো সরাতে।
এ ঘটনায় রেকারের চালক বেলাল মিয়া বলেন, আমাকে পুলিশের নির্দেশনা মোতাবেক চলতে হয়। পুলিশের নির্দেশ মোতাবেক আমি রেকার লাগিয়ে থাকি।
এব্যপারে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম বলেন, আমারসহ হাইওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগটি সঠিক নয়। এ ঘটনায় ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর বেনজীর আহাম্মেদ বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। এছাড়া ট্রাফিক পুলিশের কেউ যদি চাঁদাবাজি করে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রূপগঞ্জে দুই মহাসড়কে ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশের বেপরোয়া চাঁদাবাজি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ