Inqilab Logo

সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

গণশুনানিতে গ্রাহকরা ওয়াসায় আস্থা নেই, শোধরানোর সুযোগ দিচ্ছে দুদক

| প্রকাশের সময় : ৮ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর অন্যতম একটি হচ্ছে পানি। পানি ছাড়া একদিনও বেঁচে থাকা দুষ্কর। রাজধানী ঢাকাসহ পৌর ও সিটি কর্পোরেশন এলাকায় টাকার বিনিময়ে পানি পাচ্ছেন গ্রাহকরা। অনেক ক্ষেত্রে টাকা দিয়েও কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেন না তারা। যাও পাচ্ছেন তাও ব্যবহারের অযোগ্য। এমন হাজারও অভিযোগ ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) বিরুদ্ধে। অভিযোগ করলেও কোনো সমাধান নেই। তাই ওয়াসার প্রতি আস্থা ও প্রত্যাশা ছেড়েই দিয়েছেন সাধারণ মানুষ। সরকারি সেবা সংস্থার (ওয়াসা) এমন হাজারো অভিযোগ শুনেও শোধরানোর সুযোগ করে দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সরাসরি গ্রাহকদের অভিযোগ শুনে ওয়াসার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে গণশুনানির আয়োজন করে দুদক।
রাজধানীতে সব চাইতে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হিসেবে পরিচিত মিরপুর। এ এলাকার অভিযোগও বেশি। অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১৪ মার্চ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টে (বিআইবিএম) ঢাকা ওয়াসার মডস জোন-৪ ও মডস জোন-১০ এর বাসিন্দাদের অভিযোগে গণশুনানির আয়োজন করেছিল দুদক। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার অভিযোগের কতটুক সমাধান হয়েছে তা জানতে ফলোআপ গণশুনানির আয়োজন করা হয়।
ফলোআপ গণশুনানির উদ্বোধন করেন দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ। এসময় ওয়াসার সংশ্লিষ্ট জোনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মজিদসহ অন্যান্যরা উপস্থিত থেকে অভিযোগ শোনেন ও সমাধানের চেস্টা করেন।
শুনানির এক পর্যায়ে নতুন করে অভিযোগ নিয়ে হাজির হন মধ্য-মনিপুরী পাড়ার ৬১৮ নম্বর বাড়ির মালিক কাব্য (৩৫)। বৃদ্ধ মাকে নিয়ে নিজ বাড়িতেই থাকেন তিনি। গত প্রায় চার বছর ধরে পানির সমস্যা নিয়ে ওয়াসার কাছে দৌড়ঝাঁপ করেও কোনো সুরাহা হয়নি। তিনি কলেন, অভিযোগ কোথা থেকে শুরু করবো আর কোথায় শেষ করবো বুঝতে পারছি না। আসলে ওয়াসার প্রতি আমার বিন্দুমাত্র আস্থা বা প্রত্যাশা নেই। দুদকের গণশুনানিতে এভাবেই নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন কাব্য।
তিনি আরও বলেন, পানির সমস্যায় বিগত চার বছর ধরে আমাদের বাড়িতে কোনো ভাড়াটিয়া নেই। আমি ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে সর্বশেষ বলেছিলাম, আমাকে ১৫ হাজার লিটার পানি দিলে একবছর চলতে পারবো। তিনি আমাকে মাত্র দুই হাজার ২০০ লিটার পানি দিয়েছেন। আমি বার বার আবেদন করেও কোনোসুরাহা পাইনি। মেন্টাল ট্রমা (মানসিক যন্ত্রণা) নিয়ে দিন কাটাচ্ছি, এর সমধান কে দেবে?
তিনি বলেন, মধ্য-মনিপুরী পাড়ার অনেক বাড়িতে পানির সমস্যা ছিলো। বাড়তি টাকা দিয়ে তারা অবৈধভাবে অন্য কোথাও থেকে সংযোগ নিয়েছেন। এখন আর তাদের পানির সমস্যা নেই। এসময় আগামী রমজানের আগেই দুদক ও ওয়াসার কাছে এ সমস্যা সমাধানের দাবি জানান কাব্য।
কাব্যের কথা স্বীকার করে পাশের বাসিন্দা রোকনুজ্জামন বলেন, কাব্য যা বলছে একদম সঠিক। আমাদের বাসায়ও একই সমস্যা ছিলো ৫০ হাজার টাকা খরচ করে কাজীপাড়া থেকে সংযোগ এনেছি। এখন আর কোন সমস্যা নেই।
কাব্যের অভিযোগের সত্যতা মেনে নিয়ে ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মজিদ বলেন, উনি এক মাস আগে আমার কাছে এসেছিলেন। আমার কাছে ১৫ হাজার লিটার পানি চেয়েছিলেন। ওই এলাকার লাইনগুলো পুরাতন। তাদের লাইন পুনঃস্থাপন করলে সমস্যা থাকবে না। এসময় কাব্যের এমন অভিযোগ শুনে দুদক কমিশান নাসির উদ্দিন আহমেদ ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলীকে বলেন, আপনি ওনার মোবাইল নম্বর রাখেন, ওর সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যার সমাধান করে দেবেন। আমি ফলোআপ নেবো। গত গুণশানানিতে মিরপুর বড়বাগের বাসিন্দাদের মধ্যে থেকে পানি না পাওয়ার অভিযোগ করেছিলেন- নুরুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, হারুন অর রশিদ ও আমির হোসেন। এসব গ্রাহকদের অভিযোগ ছিল অবৈধ সংযোগের কারণে তারা বৈধ সংযোগকারীরা ঠিকমত পানি পাচ্ছেন না।
তখন দুদকের গণশুনানিতে বলা হয়েছিল এক মাসের মধ্যে সমাধান করা হবে। তার কিছুটা ফলও পেয়েছেন গ্রাহকরা। রোববারের ফলোআপ গণশুনানিতে একই অভিযোগকারী বলেন, এখন পানি পাচ্ছি তবে এটা অব্যাহত থাকবে কি না সন্দিহান। তাদের নতুন অভিযোগ গুণগত মানের পানি পাচ্ছেন না। যে পানি পাচ্ছেন তা পানের উপযোগী না। এজন্য দুদক থেকে বলা হয়েছে দ্রæত পানির মান নির্ণয় করে ভোক্তাদের চাহিদা মাফিক পানি দেওয়ার।\



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দুদক

২৫ জানুয়ারি, ২০২৩
৪ জানুয়ারি, ২০২৩
২৮ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ