পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, খুলনা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে স্থানীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে। তাঁরা এই দুটি সিটি করপোরেশন এলাকায় কাজ করতে গিয়ে তা দেখতে পেয়েছেন। দুই সিটি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের মেরুদন্ড কতটা শক্ত তার প্রমাণ হবে। এর মাধ্যমে তাদের যোগ্যতা, দক্ষতা এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে তাদের আন্তরিকতার বিষয়টি জনগণ বুঝতে পারবে। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এ দুই সিটির নির্বাচন উপলক্ষ্যে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দুই সিটি নির্বাচনী এলাকার চিত্র তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ। প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন করেন সুজনের সমন্বয়ক দিলীপ কুমার সরকার। খুলনা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, খুলনা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে স্থানীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপক আশঙ্কা করছে। এখন তারা আশঙ্কা করছেন শেষ পর্যন্ত কোনো অরাজকতা না ঘটে। সেটি যাতে না হয় সে জন্য এ দুই সিটিতেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচন কমিশনে সে আইনি ক্ষমতা রয়েছে। এখন কেবল বাস্তবায়নে সরকারের সহযোগিতা এবং তাদের সদিচ্ছা দেখাতে হবে। পাশাপাশি জনগণের নিরাপদ ভোটের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। সুজনের সম্পাদক প্রার্থীদের হলফনামায় দেওয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখার দাবি জানান। হলফনামায় তথ্য গাপন করা ফৌজদারি অপরাধ। এ অপরাধে ইসি সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করতে পারেন। তাঁরা আশা করেন, ইসি এ অস্ত্র ব্যবহার করবে।
আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, স্বল্প সময়ের মধ্যে সব প্রার্থীর হলফনামার তথ্য যাচাই করা দুরূহ। নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর নির্বাচিতদের তথ্য সাত দিনের মধ্যে যাচাই করা যেতে পারে। কারও তথ্য গোপনের বিষয়টি প্রমাণিত হলে তাঁর প্রার্থিতা বাতিল করা যেতে পারে। এতে করে একটি ভাল কাজের সূচনা হবে। যা দেশের গোটা নির্বাচন ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ইতোমধ্যে গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদের প্রত্যাহার চেয়েছে বিএনপি- এ বিষয়ে সুজনের মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে শাহদীন মালিক বলেন, দুয়েকটি অভিযোগ হলে তার প্রেক্ষিতে একজন পুলিশ সুপারের অপসারণ চাওয়া হয়তো যৌক্তিক না। কিন্তু অভিযোগ যদি ৫-১০ টি কিংবা তার চেয়ে বেশি হয় তাহলে বিষয়টি অবশ্যই নির্বাচন কমিশনকে আমলে নিতে হবে।
কলামিস্ট আবুল মকসুদ বলেন, এ দুই সিটিতেই প্রার্থীরা হলফনামায় দেওয়া তথ্যে তাদের নিজেদের তথ্য গোপণ করেছেন। এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ। এটি বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচনের পরে হলেও নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নিতে পারে। তারা নির্বাচিত মেয়র কিংবা কাউন্সিলরদের শপথের আগেই সেটি বাতিল করে দিতে পারে। এটি উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাজনীতিক মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানির জীবনেও হয়েছে। তিনি বলেন, এ দুই সিটিতে যে নির্বাচন হচ্ছে তাতে এখন পর্যন্ত অনেক অভিযোগই এসেছে। নির্বাচন কমিশনের উচিত সেগুলো খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া। কমিশনকে এটা ভুলে গেলে চলবে না যে এ নির্বাচন তাদের জন্য একটি পরীক্ষা। এর মাধ্যমে জনগণের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতার পরীক্ষা দেবে। সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের হলফনামায় দেওয়া তথ্যের বিশ্লেষণ তুলে ধরেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক দিলীপ কুমার সরকার। উপস্থাপন করে তিনি বলেন, গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের হলফনামায় প্রদত্ত তথ্য নিয়ে গণমাধ্যমে প্রশ্ন উঠেছে। গাজীপুরে প্রার্থীদের মধ্যে ৪৬ দশমিক ৬৬ শতাংশের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসির নিচে। তবে মেয়র প্রার্থীরা সবাই স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পাস করেছেন। খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসির নিচে। গাজীপুরে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী মিলিয়ে ৩৪৫ জনের মধ্যে ২১৯ জনের পেশা ব্যবসা। খুলনায় ১৯২ জনের মধ্যে ১২৬ জনের পেশা ব্যবসা।
গাজীপুর সিটিতে প্রার্থীদের তথ্য
দিলীপ কুমার জানান, গাজীপুরে সাত মেয়র প্রার্থীর মধ্যে পাঁচজন স্নাতকোত্তর এবং বাকি দুজন স্নাতক ডিগ্রিধারী। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম আইনে স্নাতকোত্তর এবং বিএনপি থেকে ধানের শীষের প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার স্নাতক ডিগ্রিধারী। এই প্রার্থীদের মধ্যে তিনজন ব্যবসায়ী, তিনজন চাকুরিজীবী এবং একজন আইনজীবী। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী উভয়ের পেশা ব্যবসা। সাতজন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে তিনজনের ফৌজদারি মামলার সংশ্লিষ্টতা আছে। বিএনপি প্রার্থী হাসান উদ্দিনের বিরুদ্ধে দুটি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে অতীতে দুটি ফৌজদারি মামলা থাকলেও এখন নেই। গাজীপুরে সাতজন প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্পদ রয়েছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের। হলফনামায় প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী তার সম্পদের পরিমাণ ৮ কোটি ৮৮ লাখ ২৬ হাজার ৭৩৬ টাকা। অন্যদিকে বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিনের মোট সম্পদের পরিমাণ ২ কোটি ৩৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৪৯ টাকার। ২০১৩ সালের সিটি নির্বাচনের হলফনামার সঙ্গে ২০১৮ সালের তুলনা করে দিলীপ বলেন, ২০১৩ সালে তার মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ১৮ লাখ ৯৪ হাজার ৭৩৭ টাকার। আর এই পাঁচ বছরে তার সম্পদের বৃদ্ধি হয়েছে ৭ কোটি ৬৯ লাখ ৩১ হাজার ৯৯৯টাকা। বৃদ্ধির এই হার ৬৪৬ শতাংশ।
খুলনায় সিটিতে প্রার্থীদের তথ্য
খুলনায় মেয়র প্রার্থী পাঁচজনের মধ্যে তিনজন স্নাতক ডিগ্রিধারী হলেও বাকী দুইজন স্বশিক্ষিত’ জানিয়ে দিলীপ কুমার বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক বিএ পাস করেছেন আর বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু আইনে স্নাতক। তিনি জানান, এই প্রার্থীদের মধ্যে তিনজন ব্যবসায়ী, একজন কৃষিজীবী এবং আরেকজনের আয়ের উৎস বাড়িভাড়া। আওয়ামী লীগের প্রার্থী পেশায় ব্যবসায়ী আর বিএনপির প্রার্থীর ব্যবসা এখন বন্ধ, তার আয়ের উৎস বাড়িভাড়া। খুলনা সিটিতে পাঁচজনের মধ্যে তিনজনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। জাতীয় পার্টির প্রার্থী শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে দুটি ফৌজদারি মামলা চলমান, যার একটি ৩০২ ধারায়। অতীতে আরো দুটি ফৌজদারি মামলা ছিল তার নামে। বিএনপির প্রার্থী মঞ্জুর বিরুদ্ধে চারটি ফৌজদারি মামলা রয়েছে এবং অতীতে ছিল তিনটি। আওয়ামী লীগের তালকুদার খালেকের অতীতে নয়টি ফৌজদারি মামলা থাকলেও এখন একটিও নেই। তার বিরুদ্ধে এই নয়টির চারটিই ছিল ৩০২ ধারায়। খুলনা সিটিতেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেকের সম্পদের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। তার মোট সম্পদ ১১ কোটি ৮৩ লাখ ৩১ হাজার ৫৫৬ টাকার। বাকি চার প্রার্থীর সম্পদে পরিমাণ ৫ লাখ টাকার নীচে। ২০১৩ সালের সিটি নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী তালুকাদার খালেকের সম্পদের পরিমাণ ১০ কোটি ৮ লাখ ৪১ হাজার ২৯১ জানিয়ে দিলীপ বলেন, সেখান থেকে ২০১৮ সালের হলফনামা অনুযায়ী পাঁচ বছরে বেড়েছে ১ কোটি ৭৪ লাখ ৯০ হাজার ২৬৫ টাকা, শতকরা বৃদ্ধির হার ১৭ দশমিক ৩৪।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।