শফিউল আলম : মধ্য-বৈশাখে আবহাওয়া বৈরী হয়ে উঠেছে। আকাশে তীব্র বজ্রমেঘের ঘনঘটা বৃদ্ধি পেয়েছে। লঘুচাপের একটি বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। দক্ষিণ আন্দামান সাগর এবং এর সংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে গতকাল (রোববার) সারাদেশে হালকা থেকে মাঝারি, ঢাকাসহ কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হয়েছে। আন্দামান সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হতে পারে কিনা সেদিকে আবহাওয়া বিভাগ সতর্ক পর্যবেক্ষণ করছে। চলতি এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একাধিক নি¤œচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে পারে এমনটি সতর্কতা দেয়া হয় আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে।
বৃষ্টিপাতের কারণে তাপদাহ কমে গেছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় ময়মনসিংহে ৯৯ মিলিমিটার। এ সময় ঢাকায় ৬৮, টাঙ্গাইলে ৫৭, নেত্রকোনায় ৫৪, সীতাকুÐে ৫৬, রাঙ্গামাটিতে ৫৫, কুমিল্লায় ১৮, নোয়াখালীতে ৩৪, সিলেটে ৮, বগুড়ায় ৫৭, রংপুরে ৬, খুলনায় ১, বরিশালে ৩৬ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ সময় তাপমাত্রার পারদ নেমে আসে সাতক্ষীরায় সর্বোচ্চ ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ঢাকায় সর্বোচ্চ ২৮.১ এবং সর্বনি¤œ ২০.২ ডিগ্রি সে.।
আজও (সোমবার) দেশের অনেক জেলায় কালবৈশাখী ঝড়, বজ্রপাত ও বজ্রসহ বৃষ্টিপাত, শিলাবৃষ্টির সতর্কতার কথা জানায় আবহাওয়া বিভাগ। গতকাল ঝড়োহাওয়ার সতর্কতায় বলা হয়, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, সিলেট, যশোর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, মাদারীপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ঢাকা, কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে অস্থায়ীভাবে পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার এমনকি আরও অধিক বেগে কালবৈশাখী ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেইসাথে বিচ্ছিন্নভাবে কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
তীব্র বজ্রমেঘের ঘনঘটা বৃদ্ধির কারণে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, সিলেট, যশোর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, মাদারীপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ঢাকা, কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চলে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী থেকে অতিভারী বর্যণ হতে পারে।
এদিকে দেশের অভ্যন্তরীণ নদী বন্দরসমূহের জন্য আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, রাজশাহী, পাবনা, টাঙ্গাইল, যশোর, ফরিদপুর, মাদারীপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ঢাকা, ময়মনসিংহ,
সিলেট, কুমিল্লা, নোয়াখালী এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিমি বেগে অস্থায়ী ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই সাথে বৃষ্টি, বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদী বন্দরসমূহকে ২নং নৌ-হুঁশিয়ারি সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র একই দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিমি বেগে অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই সাথে বৃষ্টি, বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদী বন্দরসমূহকে ১নং নৌ-হুঁশিয়ারি সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়।
আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া ও বিজলী চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্র বৃষ্টিপাত হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ এবং বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আগামী ২ দিনে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। এর পরের ৫ দিনে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।