Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পবিত্র শবে বরাতের বিরোধীতাকারীদের ভ্রান্ত মতবাদ প্রমাণে ১০০ কোটি টাকার চ্যালেঞ্জ -ওলামা লীগের নেতৃবৃন্দ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ এপ্রিল, ২০১৮, ৫:৪৭ পিএম

আওয়ামী ওলামা লীগ নেতৃবৃন্দ শবে বরাতের বিরোধীতাকারীদেরকে তাদের ভ্রান্ত মতবাদ প্রমাণে ১০০ কোটি টাকা চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করেছে। এ ঘোষণা উপলক্ষে এবং ১১ দফা দাবীতে গতকাল সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে রাজারবাগ দরবার শরীফ থেকে শবে বরাত ভ্রান্ত প্রমাণে ১০০ কোটি টাকা চ্যালেঞ্জের কথা পুনঃঘোষণা করেছেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, লাইলাতুল বারাআত হচ্ছে- গুনাহ থেকে মুক্তি লাভের রাত্র। বান্দার দোয়া কবুলের রাত্র। কিন্তু আহলে হাদীস, সালাফী ওহাবীরা সমাজে প্রচলিত ইসলাম বিরোধী বিভিন্ন অপসংস্কৃতির প্রতিবাদ না করে পবিত্র শবে বরাতসহ বিভিন্ন ইবাদত বন্দেগীর বিরুদ্ধাচারণ করে ভ্রান্ত মতবাদ প্রচার করছে। তারা সৌদির সালাফী দাজ্জালের চালু করা সিনেমা হল, মহিলা ফুটবল, পর্দাপ্রথা উঠিয়ে দেয়া, বেলেল্লাপনা চালু করতে ‘নিয়ম শহর প্রকল্প’ নির্মাণের বিরোধীতা করেনা। অথচ পবিত্র শবে বরাত পালনে তাদের মুরুব্বীরাই, তাদের কিতাবে সারারাত ব্যাপী ইবাদত বন্দেগী করার কথা বলেছেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সালাফীদের মূল গুরু ইবনে তাইমিয়াও পবিত্র শবে বরাতের ফযীলত ও রাতের আমল স্বীকার করেছেন। ‘মাজমুয়ায়ে ফতোয়া’ কিতাবে তিনি বলেছেন, পবিত্র শবে বরাতের মর্যাদা পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা সাব্যস্ত আছে। এ রাতের নামাজের ব্যাপারে অনেক ফযীলত বর্ণিত আছে। সলফে সালেহীনগন এ রাতে নামায আদায় করতেন।” (দলীল: মজমুয়ায়ে ফতোয়া ২৩ তম খন্ড ১৩২ পৃষ্ঠা)
সালাফীদের গুরু নাছিরউদ্দীন আলবানী তার একটা কিতাব “সহীহ আত তারগীব ওয়াত তারহীব” কিতাবের ৩য় খন্ড ৫৩ ও ৫৪ পৃষ্ঠায় পবিত্র শবে বরাত শরীফ সর্ম্পকে ৫ টা হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছে। সকল পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদেরকে হাসান সহীহ এবং“সহীহ লি গাইরিহী” বলে স্বীকার করেছে। ওহাবী-সালাফীদের বর্তমান সময়কার অন্যতম মুরুব্বী মুহম্মদ ইবনে ইব্রাহীম আত তুয়াইজিরীর লিখা “রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্র্যাকটিক্যাল নামায”এবং সালাফীদের আরেক মুরুব্বী আব্দুর রাজ্জাক সালাফী কর্তৃক সম্পাদিত বইয়ের ২৮৪ পৃষ্ঠায় ‘শবে বরাত রাতের করনীয় কাজ’ শিরোনামে ১০টি ইবাদতের কথা বলা হয়েছে। এই ১০টি কাজ শবে বরাত পালনকারীরাও করেন। এসব আমলকে বিদয়াত বলে তারা গলাবাজি করে ইসলামের মধ্যে ভ্রান্ত মতবাদ ঢুকাতে চাচ্ছে। ওহাবী-সালাফীদের অন্যতম মুরুব্বী মুহম্মাদ বিন সালেহ আল-উসাইমিনও পবিত্র শবে বরাত উনার পক্ষে ফতোয়া দিয়ে বলেছেন শবে বরাত উনার ফযিলতের ব্যাপারে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকে অস্বীকার করছে ওহাবীরা অধিকাংশ আলেম পবিত্র শবে বরাত উনার ফযিলতকে স্বীকার করে। (মজমুয়ায়ে ফতোয়া ওয়া রাসায়েল ইবনে উসাইমিন ৭ম খন্ড ২০৫ পৃষ্ঠা)। পবিত্র শবে বরাতের করণীয় সম্পর্কে রাসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ইরশাদ করেছেন, পবিত্র শাবান মাসের রোযা আমার নিকট অন্য মাসের তুলনায় অধিক প্রিয়। যখন আপনাদের নিকট মধ্য শাবানের রাত্রি (পবিত্র শবে বরাত) উপস্থিত হবে, তখন আপনারা সেই রাতটি জাগ্রত থাকুন (পবিত্র নামাজ পড়ে, পবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করে, পবিত্র তাসবীহ পড়ে, পবিত্র যিকির করে, দুআ করে) এবং দিনের বেলা রোযা রাখুন। কারণ, এ রাতে মহান আল্লাহ সূর্যাস্তের পর থেকে ফজর পর্যন্ত দুনিয়ার আসমানে তাশরীফ এনে (রহমত বর্ষন করেন)। (ইবনে মাজাহ শরীফ )
বক্তারা বলেন, মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআন শরীফে ইরশাদ করেন, “নিশ্চয়ই আমি বরকতময় রজনীতে (শবে বরাতের রাতে) পবিত্র কুরআন নাযিল করেছি (নাযিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি) আর আমি ভয় প্রদর্শনকারী। উক্ত রাতে আমার পক্ষ থেকে সমস্ত প্রজ্ঞাময় কাজগুলো ফায়ছালা করা হয়। আর নিশ্চয়ই আমি প্রেরণকারী” (সূরা দুখান আয়াত ৩-৫)। সকল তাফসীরে ‘লাইলাতুম মুবারাকাহ’ দ্বারা পবিত্র লাইলাতুল বরাতকে বলা হয়েছে। পবিত্র কুরআন ও পবিত্র হাদীছে শবে বরাত থাকার পরও এর বিরোধীতা মুসলমানদের বিরুদ্ধে ওহাবী-সালাফীদের গভীর ষড়যন্ত্র। পবিত্র শবে বরাত বিরোধী সন্ত্রাসী আইএস এর মৌলিক মতবাদের প্রতিষ্ঠাতা তাইমিয়া, আল বানী, জাকির নায়েক এবং তাদের অনুচর আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ, ড. শহিদুল্লাহ খান নাদানী, মতিউর রহমান নাদানী, ড. সাইফুল্লাহ, কাজী ইবরাহীম, মুজাফ্ফর বিন মহসিন, আমানুল্লাহ বিন ইসমাইল নাদানী, আসাদুল্লাহ আল গালীব, আমীর হামজা, আব্দুল হাই মোঃ সাইফুল্লাহদের সকল বই কিতাব, ওয়াজ মাহফিল এদেশে নিষিদ্ধ করতে হবে। টিভি চ্যানেল ও প্রিন্ট মিডিয়ায় পবিত্র শবে বরাত বিরোধী ভন্ড ওহাবী-সালাফীদের বিরুদ্ধে সারাদেশে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সারাদেশে এসব ভন্ডদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভ‚তিতে আঘাতের ও রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা দিতে হবে এবং গ্রেফতার করতে হবে। তারা বলেন, সরকারের উচিত পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে কমপক্ষে ৩ দিন বাধ্যতামূলক ছুটি ঘোষণা করা।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, আলহাজ্জ মাওলানা মুহম্মদ আখতার হুসাইন বুখারী, সভাপতি- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ। আলহাজ্জ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সাধারণ সম্পাদক- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, আলহাজ্জ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, সভাপতি- সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদ, মাওলানা মুহম্মদ শওকত আলী শেখ ছিলিমপুরী, হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল জলিল, হাফেজ মাওলানা মোস্তফা চৌধুরী বাগেরহাটি, মাওলানা মুহম্মদ শোয়েব আহমেদ, মাওলানা মুহম্মদ আব্দুল গফুর, মুহম্মদ গরীব মাহাবুবসহ ১৩টি ইসলামী সমমনা সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

 



 

Show all comments
  • মুহা: তারীফ উদদিন ২৯ এপ্রিল, ২০১৮, ১১:০৪ এএম says : 2
    শবে বরাতের বিরোধীতাকারীদেরকে বুঝান যাতে ইস্লামের ভিতর ফিত্নে সৃস্টি না করে।
    Total Reply(0) Reply
  • AKM Shahadat Hossain ৩০ এপ্রিল, ২০১৮, ৩:৩১ পিএম says : 1
    I think nobody will take this challenge, why he will take ? if anybody take he will be hated by all , even allah
    Total Reply(0) Reply
  • Sumon ২ মে, ২০১৮, ১২:৩২ এএম says : 1
    Allah,,,,ai sob olamalig der hedayet daw,,,,jate sothik Islam k bujte pare,,,,r shaikh der sokol sorojonto thake rokkha koro,,,,amin,,,,r akta dik valo holo Manu's a bisoye bistarito jante parbe
    Total Reply(0) Reply
  • Dr. Miah Muhammad Adel ২ মে, ২০১৮, ৪:১২ পিএম says : 0
    রাসুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন যে শাবান তাঁর মাস। প্রতিটা চন্দ্রমাসের ১৩, ১৪, ও ১৫ তারিখে উনি রোযা রাখতেন ও রোযা রাখার তাগিদ দিয়েছেন। তাহলে তাঁর প্রিয় মাসের ১৫ তারিখে বিশেষ ইবাদতে দ্বিমত কেন? উনি (সাঃ) ভাল অভ্যাস পরিত্যাগ করতে নিরুৎসাহ করেছেন। ইবাদত-বন্দেগী কি খারাপ অভ্যাস?
    Total Reply(0) Reply
  • Md.Shofi Ahmed ৩ মে, ২০১৮, ৩:১১ পিএম says : 0
    আমরা যারা সাধারণ জনগণ আমরা কোনটি সঠিক বলে মানে নেবো
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ