পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বর্ষা মওসুম আগমনের বাকি আছে মাত্র দু’মাস। ফলে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া বাংলাদেশ সরকারের জন্য গভীর উদ্বেগ হিসেবে দেখা দিয়েছে। আর তা ভারতের সীমান্ত রক্ষীদের (বিএসএফ) মধ্যে দুশ্চিন্তার সৃষ্টি করেছে। কারণ গোয়েন্দা তথ্যে ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে, প্রবল বেগে বন্যা রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু ক্যাম্পগুলো ভাসিয়ে নিলে গণহারে অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব এলাকায় সাড়ে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গার বাস। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সামরিক বাহিনীর অভিযানের পর তারা পালিয়ে এসেছে। বাংলাদেশের এখনকার লক্ষ্য হলো এসব উদ্বাস্তেুর প্রত্যাবাসন কিংবা নিরাপদ অবস্থানে সরিয়ে নেওয়া। বৃষ্টির রেশ ধরে কোনো রোগ যাতে মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সে ব্যাপারেও সতর্ক বাংলাদেশ। অন্যদিকে ভারতে উদ্বাস্তুদের অনুপ্রবেশ রুখে দিতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার এলাকায় সৈন্য বাড়িয়েছে বিএসএফ।
অবৈধ অভিবাসীদের গ্রহণ না করার নীতি গ্রহণ করেছে ভারত সরকার। ভারত সরকারের মতে, অনেককে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার সাথে যোগাযোগ রেখে জাল ভারতীয় মুদ্রা পাচার করতে দেখা গেছে। তারা অবৈধভাবে ভারতীয় পরিচয়পত্র লাভ করার চেষ্টা করছে বলেও খবর পাওয়া গেছে।
বিএসএফ জানিয়েছে, তারা সরকারের নির্দেশ অনুসরণ করবে। বিএসএফের এক কর্মকর্তা পরিচয় গোপন রাখার শর্তে আইএএনএসকে বলেন, আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য আছে, বৃষ্টির সময় ভারতে প্রবেশ করার পরিকল্পনা করছে রোহিঙ্গারা। তাদের আটকানোর পরিকল্পনা করছি আমরা।
তিনি বলেন, সীমান্তের সব সমন্বিত চেক পোস্ট কমান্ডারকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাদেরকে অবৈধ প্রবেশ বন্ধ করতে বলা হয়েছে। ভারতের সবচেয়ে কাছের সীমান্তও ১০০ কিলোমিটার দূরে থাকলেও নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য উদ্বাস্তুদের কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করা ও দূরের পথ পাড়ি দেওয়ার সামর্থ্য বিষয়টি সবার জানা রয়েছে।
পালিয়ে আসা বেশির ভাগ উদ্বাস্তুই বাঁশ আর প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি ঘরে বাস করে। তারা যেখানে ঘর তুলেছে, তা একসময় ছিল বন। স¤প্রতি তাদের অবস্থা দেখার জন্য ১৫ জনের একটি সাংবাদিক দল পাঠানো হয়েছিল ওই এলাকায়। বাংলাদেশ ও ভারতের সাংবাদিকদের ওই দলটির সফরের ব্যবস্থা করে বিএসএফ। তাদের স্বাগত জানায় বিজিবি।
বাংলাদেশের আবহাওয়া বিভাগের তথ্য মতে, কুতুপালঙ ও বালুখালির যে স্থানে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু শিবির অবস্থিত, সেখানেই সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। জাতিসংঘ উদ্বাস্তুবিষয়ক হাই কমিশনের (ইউএনএইচসিআর) কম্পিউটার মডেলিংয়ে দেখা যায়, বর্ষায় বন্যা ও ভূমিধসে হাজার হাজার উদ্বাস্তু হুমকির মুখে পড়তে পারে।
ইউএনএইচসিআরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক তৃতীয়াংশ ভূমি বন্যা-কবলিত হতে পারে। যেসব উদ্বাস্তু পাহাড়ের ঢালে অবস্থান করছে, তারা রয়েছে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সরকার তাদেরকে তাদের আবাসভূমিতে পাঠানোর চেষ্টা করছে। বিজিবির ব্রিগেডিয়ার এস এম রাকিবুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ সরকার চাচ্ছে গত বছরের নভেম্বরের চুক্তি অনুযায়ী উদ্বাস্তুদের যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফেরত পাঠাতে। তিনি বলেন, আমরা স¤প্রতি প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমারে পাঠিয়েছি। কিন্তু তারা মাত্র কয়েকজনকে তাদের নাগরিক হিসেবে শনাক্ত করেছে। বর্ষা আসার প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও রোহিঙ্গাদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাদেরকে অন্য কোনো স্থানে সরিয়ে নেওয়াও কঠিন কাজ। তবে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা হিসেবে রাস্তা উন্নয়নে বুলডোজার করা, ঢালগুলো সমান করে দেওয়ার মতো কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। তাছাড়া পাহাড়ে বাঁশের খুঁটিতে বালির বস্তা দেওয়ার কাজও হাতে নেওয়া হয়েছে। তবে প্রবল বর্ষায় এগুলো কাজে দেবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
রোহিঙ্গারাও এ নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে। ৪০ বছর বয়স্ক নূর হোসেন জানান, তার মাটির ঘরটি ঝড়ে উড়ে যাবে, বন্যায় ভেসে যাবে। উল্লেখ্য, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে তার এক ভাই নিহত হয়েছে। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘একমাত্র আল্লাহই আমাকে আর আমাদের লোকজনকে সহায়তা করতে পারেন।’ সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।