Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বন্যা থেকে রক্ষা পাবে শত কোটি টাকার সম্পদ

৪২২ কোটি টাকা ব্যয়ে মাতামুহুরী নদীতে খনন কাজ শুরু করবে পাউবো

জাকের উল্লাহ চকোরী, কক্সবাজার থেকে | প্রকাশের সময় : ২৮ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

মাতামুহুরী নদীর উৎপত্তি স্থল বান্দরবানের আলীকদম থেকে বঙ্গোপসাগরের সংযোগস্থল কক্সবাজারের চকরিয়ার বদরখালী চ্যানেল পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার চর ভরাট এলাকায় খাল খনন ও নদীর দু’তীরের বাঁধ বিহীন মারাত্নক ক্ষতিগ্রস্থ ১০ কিলোমিটার এলাকায় প্রতি রক্ষামূলক বেড়িবাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড।
একটি পাইলট প্রকল্পের আওতায় পর্যায়ক্রমে এ কাজ বাস্তবায়নের জন্য ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪২২ কোটি টাকা। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে আলীকদম-লামা, চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার নদীর দু’তীরবর্তী এলাকায় বসবাসরত প্রায় ১০ লাখ মানুষের জানমাল রক্ষার পাশাপাশি প্রতি বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের করাল গ্রাস থেকে রক্ষা পাবে শত শত কোটি টাকার সরকারী বেসরকারী সহায় সম্পদ। কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পওর) বিভাগের বদরখালী সাব ডিভিশনের এস.ডি ঈমান আলী জানান, প্রকল্পটির সার সংক্ষেপ তুলে ধরে মন্ত্রণালয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। অর্থ ছাড় পেলে আগামী অর্থ বছর থেকে পর্যায়ক্রমে কাজ শুরু করা হবে।
কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের চিরিঙ্গা শাখা কর্মকর্তা এস.এম তারেক বিন ছগির জানান, কক্সবাজার জেলার ক্ষতিগ্রস্থ পোল্ডার সমূহের পূর্নবাসন (১ম সংশোধিত) প্রকল্পের আওতায় চকরিয়া উপজেলার মাতামুহুরী নদীর হাজি পাড়ায় ৬০০ মিটার, কৈয়ারবিলে ৪০০ মিটার, বেতুয়া এলাকায় ১০০০ মিটার, সেকান্দর পাড়ায় ৫০০ মিটার ও আবদুল বারি পাাড়ায় ৫০০ মিটারসহ সর্বমোট ৩ কিলোমিটার এলাকায় খাল খননের জন্য ৭ কোটি ৬১ লাখ ৮ হাজার ৯১০ টাকার প্রাক্কলন তৈরি করে দরপত্র আহ্বান করলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এস,এস নেশান টেক (জেভি) দশ শতাংশ কমদরে ৬ কোটি ৮৪ লাখ ৯৮ হাজার ১৯ টাকা দর উধৃত করে প্রতিযোগীতা মূলকভাবে কাজটি পায়। পানি উন্নয়ন বোর্ড গত ৬ ফেব্রুয়ারী ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়। আগামী ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল কাজ সমাপ্তির দিন ধার্য্য করা হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক নুরে বশির সয়লাব জানান, তারা ইতিমধ্যে হাজি পাড়া এলাকায় ৬০০ মিটার খাল খনন কাজ শুরু করেছে। প্রায় ৩০০ মিটার খনন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৩০০ মিটার খনন কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।
সিডিউল অনুযায়ী ৬০০ মিটার দৈর্ঘ্য, ৬০ মিটার প্রস্থ ও ১ থেকে ৩ মিটার গভীর করে এ খনন কাজ চলছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা কাজের সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন। আগাম ঝড় বৃষ্টি না হলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বলাবাহুল্য যে, বান্দরবানের আলীকদম, লামা ও কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত ১৩৫ কিলোমিটার মাতামুহুরী নদী। এক সময়ে খর স্রোতা মাতামুহুরী নদীটি দীর্ঘদিন খনন কাজ না হওয়ায় বর্তমানে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদীর বিভিন্নস্থানে পলি মাটি ও বালিতে চর ভরাট হয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক গতিতে পানি প্রবাহিত হচ্ছে না। ফলে প্রতি বর্ষা মৌসুমে ৫/৬ বার বন্যায় নদীর দু’তীরবর্তী শত শত একর ফসলী আবাদী জমি নদী গর্ভে তলিয়ে যায়। এ ছাড়া অসংখ্য ঘরবাড়ী, হাটবাজার, স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ, কবরস্থান ও মন্দিরসহ সরকারী অর্থ ব্যয়ে নির্মিত রাস্তাঘাট, ব্রীজ কালভার্ট ভেঙ্গে লন্ড-ভন্ড হয়ে যায়। ওই চার উপজেলার সরকারী কর্মকর্তাদের প্রদত্ত রিপোর্ট অনুযায়ী বন্যায় গত বছর ক্ষতি হয়েছে ৫০০ কোটি টাকার সম্পদ। ঘরবাড়ি হারিয়েছে অসংখ্য পরিবার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ