বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ইনকিলাব ডেস্ক : ষাটের দশকের অন্যতম শীর্ষ কবি বেলাল চৌধুরী আর নেই। গতকাল দুপুর বারটা এক মিনিটে ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেছেন ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার বয়স হয়েছিল ৭৯। মৃত্যুকালে কবি দুই ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী ও আত্মীয়-স্বজন রেখে যান। কবির মৃত্যুর সংবাদ রাজধানীতে ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে আসে। কবি, লেখক, সাংবাবদিকসহ অনেকেই হাসপাতালে ছুটে যান। দীর্ঘদিন ধরে তিনি কিডনি, ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন। বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়লে গত পয়লা নভেম্বর কবিকে এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত সাড়ে পাঁচ মাস ধরে এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত শুক্রবার থেকে ছিলেন লাইফসাপোর্টে।
লাশ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে
কবি বেলাল চৌধুরীর প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আজ বুধবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কবির লাশ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ যৌথভাবে এই শ্রদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস গতকাল বিকেলে এ কথা জানান। তিনি জানান, দুপুর বারটা পর্যন্ত শহীদ মিনারে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি, সংঠনের পক্ষ থেকে কবির প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করবেন। পরে জোহরের নামাজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে কবির প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে কবিকে দাফন করার জন্য তার গ্রামের বাড়ি ফেনির শর্শদি গ্রামে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে পারিবারিক কবরস্থানে কবির দাফন সম্পন্ন হবে।
কবি বেলাল চৌধরী একাধারে কবি, সাংবাদিক, প্রাবন্ধিক, অনুবাদক ও সম্পাদক। তিনি লেখালেখির পাশাপাশি পেশাগতভাবে সাংবাদিকতায় ছিলেন দীর্ঘকাল। ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতবাসের পত্রিকা ‘ভারত বিচিত্রা’ সম্পাদনা করেন পনের বছর। দীর্ঘদিন কলকাতায় অবস্থানকালে কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাহিত্য পত্রিকা ‘কৃত্তিবাস’ সম্পাদনা করেন। সেখানে আনন্দবাজারসহ বিভিন্ন পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করেন। ঢাকায় দৈনিক রূপালী গ্রæপের পত্রিকা সাপ্তাহিক স›দ্বীপ সম্পাদনা করেন। কবি বেলাল চৌধুরী ১৯৩৮ সালের ১২ নভেম্বর ফেনী জেলার শর্শদি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম রফিকউদ্দিন আহমাদ চৌধুরী এবং মাতার নাম মুনীর আখতার চৌধুরানী। কবিতা, প্রবন্ধ, অনুবাদ গ্রন্থসহ বেলাল চৌধুরীর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ২২টি। সাহিত্যে অবদানের জন্য কবি বেলাল চৌধুরী রাষ্ট্রীয় পুরস্কার একুশের পদক (২০১৪), বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৪), মাযহারুল ইসলাম কবিতা পুরস্কার, জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার লাভ করেন।
প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর শোক
প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশিষ্ট কবি, লেখক ও সাংবাদিক বেলাল চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। গতকাল পৃথক পৃথক শোক বার্তায় প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং কবির রূহের মাগফিরাত কামনা করেন। জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বি মিয়া, চিফ হুইপ আসম ফিরোজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক একুশে পদকে ভূষিত কবি বেলাল চৌধুরীর মৃত্যুতে পৃথকভাবে শোক প্রকাশ করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।