রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
আমতলী (বরগুনা) উপজেলা সংবাদদাতা
আপন ছোট বোনের হত্যার মামলা প্রত্যাহার না করায় মিথ্যা অপবাদ রটিয়ে বরগুনার তালতলীতে ফজিলা নামের এক দরিদ্র গৃহবধূকে শালিসের নামে বেদম প্রহার করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিক জোমাদ্দার। গুরুতর আহত অবস্থায় ফজিলা বেগম বর্তমানে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নির্যাতনের শিকার ফজিলা বেগম জানান, তার ছোট বোন রেহেনা হত্যা মামলা মিটমাট করে ফেলার জন্য গত ২৪ মার্চ আসামিপক্ষের উকিলের মহরার জাকির হোসেন তালতলীর জয়ালভাঙ্গা গ্রামে তাদের বড় বোন আলেয়ার বাড়িতে আসেন। খবর পেয়ে তালতলী বাজার থেকে স্বামী সানু মিয়ার ঠিক করে দেয়া পরিচিত একটি ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে নিজ বোন আলেয়ার বাড়ি যান ফজিলা বেগম। সেখানে অপর আরেক বোন মামলার বাদী শাহনাজ ও অন্যান্য স্বজনদের উপস্থিতিতে অনেক আলোচনার পর আসামিদের পক্ষে দু’লাখ টাকার বিনিময়ে মামলাটি মিটমাট করে ফেলার প্রস্তাব দেন জাকির মহুরি। এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন ফজিলা ও তার বোনরা। বিষয়টি জাকির মহুরি আসামি পক্ষকে জানিয়ে দিলে ক্ষেপে যায় মামলার আসামিরা। তখন থেকেই কুচক্রান্ত নিয়ে ওঁৎ পেতে থাকে আসামিরা। এদিকে ওইদিনই সন্ধ্যার পরে ফজিলা বেগম তার বোনের বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়ি ফিরছিলেন পূর্ব নির্ধারিত সেই ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে। পথিমধ্যে রেহেনা হত্যা মামলার আসামি মালেক প্যাদা এবং রফিক জোমাদ্দার মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে ফজিলা আর মোটরসাইকেল চালক ওয়াহাব মিয়াকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যায় স্থানীয় আরেক ইউপি সদস্য রফিক জোমাদ্দারের ছোট ভাই শফিক জোমাদ্দারের বাড়ি। সেখানে তাদের রাতভর আটকে রেখে অবৈধ সম্পর্কের আপবাদ দিয়ে বেদম প্রহার করেন ইউপি সদস্য শফিক জোমাদ্দারসহ রেহেনা হত্যা মামলার অন্য আসামিরা। যদিও এ অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন ইউপি সদস্য শফিক জোমাদ্দার। এ ঘটনায় ইউপি সদস্য শফিক জোমাদ্দারসহ ঘটনার সাথে জড়িতদের অভিযুক্ত করে গত বৃহস্পতিবার বরগুনার আমতলীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন শাহনাজ বেগম। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে তা শুনানির জন্য এপ্রিল মাসের ২১ তারিখ ধার্য্য করেন।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ১১ মার্চ বরগুনা শহরের একটি গৃহে বন্দি করে আট বছরের কন্যা শিশুর চোখের সামনে গৃহবধূ রেহেনা বেগমকে নির্মম নির্যাতনের পর খুন করে রেহেনা বেগমের দেবর জয়নাল প্যাদা, জয়নাল প্যাদার আপন ভাই মালেক প্যাদা, মামাত ভাই সাহেব আলী এবং খালাত ভাই মোস্তফা জোমাদ্দার। হত্যার পর এ হত্যাকা-কে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালায় তারা। পরে প্রত্যক্ষদর্শী ওই কন্যা শিশু ফাহিমার জবানবন্দি এবং স্বজনদের অভিযোগেরভিত্তিতে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। সে সময় প্রত্যক্ষদর্শী ওই কন্যা শিশুর লালন পালনের দায়িত্ব নেয় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে রয়েছে শিশু ফাহিমা। এ বিষয়ে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের বরগুনা জেলার সভানেত্রী নাজমা বেগম জানান, রেহেনা হত্যাকা-ের আজ আট বছর চলছে। আজ অবধি আসামিদের কিছুই হল না। হল না বিচারেরও কিছু। মাঝখান থেকে রেহেনার বোন ফজিলা কাতরাচ্ছে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে, আর পালিয়ে বেড়াচ্ছে অপর বোন শাহনাজ। তিনি বলেন, সম্প্রতি এ বিষয়ে তিনি বরগুনা জেলার পাবলিক প্রসিকিউটর মোস্তাফিজুর রহমান বাবুলের সাথে কথা বলেছেন। তিনি মামলাটির খোঁজ নিয়ে করণীয় সকল বিষয়ে সচেষ্ট থাকবেন বলে জানিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।