পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যন্ত্রণার নাম ভুলতা ফ্লাইওভার। ২০১৩ সালে শুরু হওয়া এই ফ্লাইওভারের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল দুই বছরের মধ্যেই। কিন্তু চার বছরেও তা শেষ হয়নি। চার বছর পরে এই ফ্লাইওভারের দৈর্ঘ্য কমানো হচ্ছে। সময় বাড়ছে আরও দুই বছর। এতে খরচ না কমে উল্টো বাড়ছে ৯০ কোটি টাকারও বেশি। ইতোমধ্যে প্রকল্পটি দ্বিতীয় দফা সংশোধনের প্রস্তাব করেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতর। প্রকল্পটির সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনার তথ্য মতে, ২০১৩ সালে ভুলতায় ৬৩১ দশমিক ১৬ মিটার চার লেনে উন্নীতকরণের প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদন করা হয়। সে সময় এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৩৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। ২০১৫ সালের জুনের মধ্যে এটি শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। যদিও ফ্লাইওভারটি নির্মাণে চুক্তি করা হয় ২০১৫ সালের অক্টোবরে।
ফ্লাইওভারটিতে ওঠানামার পথ (র্যাম্প) নিচের সড়কে যান চলাচলে অসুবিধা সৃষ্টি করবে বলে জানায় বিশেষজ্ঞ কমিটি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ফ্লাইওভারটির দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে র্যাম্পসহ এক হাজার ৮৭৭ দশমিক ৫০ মিটার নির্ধারণ করা হয়। এতে করে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ২৬৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা। সে সময় প্রকল্পের মেয়াদ করা হয় ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত। এর মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়। তবে বর্ধিত সময়েও ফ্লাইওভারটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি।
এমতবস্থায় এবার দ্বিতীয় দফায় প্রকল্পটি সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ফ্লাইওভারটির দৈর্ঘ্য ২৭ দশমিক ৫০ মিটার কমিয়ে এক হাজার ৮৫০ মিটার করা হচ্ছে। দৈর্ঘ্য কমানোর পরেও ফ্লাইওভারটির নির্মাণ ব্যয় বাড়ছে। নতুন করে ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৩৫৪ কোটি আট লাখ টাকা। অর্থাৎ ব্যয় বাড়ছে ৯০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা বা ৩৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ। পাশাপাশি প্রকল্পটির মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়িয়ে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে করে দুই বছরের প্রকল্পটি গড়াচ্ছে ছয় বছরে।
সওজ সূত্র জানায়, সম্পূর্ণ সরকারী অর্থায়নে ফ্লাইওভারটি নির্মাণ করা হচ্ছে বলেই এভাবে প্রকল্প সংশোধন করে ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ অনুযায়ী শেষ পর্যন্ত ফ্লাইওভারের দৈর্ঘ্য কমানো হচ্ছে। তার মানে আগে বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ নেয়া হয়নি। ভুক্তভোগিদের মতে, নতুন করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর কারনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যন্ত্রণাও আর দীর্ঘায়িত করা হলো। চার বছর ধরে এ প্রকল্পের কারনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজট লেগেই থাকে। এমনকি এখানকার যানজটের প্রভাব গিয়ে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। ভুলতা এলাকার ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন এ প্রসঙ্গে বলেন, ফ্লাইওভারটি নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকে এখানকার ব্যবসায়ীরা বিভিন্নভাবে ক্ষতির সম্মুখিন। যানজটসহ নানা ভোগান্তির কারনে গত চার বছর ধরে ব্যবসা বাণিজ্যের অবস্থা ভালো না। তারপরেও আমরা আশায় ছিলাম কাজ শেষ হচ্ছে বলে। কিন্তু এখন শুনছি আরও দুই বছর লাগবে। সময় বেশি লাগবে এ কথা আগে বললে তো আমরা বিকল্প ব্যবস্থা করতাম। ফ্লাইওভারের কারনে আমাদের ব্যবসা তো বন্ধ হওয়ার উপক্রম। ঢাকা-সিলেট রুটের বাস চালাক সুরুজ্জামান বলেন, সরকার যানবাহন চলাচলে সুবিধার জন্যও ফ্লাইওভার নির্মাণ করছে। কিন্তু সেটা তো সময় মতো শেষ করবে। কিন্তু তা না করে বার বার সময় বাড়ায়, টাকা বাড়ায়। এতে করে জনগণকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
এ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতা এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার অংশ আট লেনে এবং প্রায় দুই কিলোমিটার চার লেনে উন্নীত করা হবে। এছাড়া ঢাকা-বাইপাস মহাসড়কের দুই কিলোমিটার অংশ ছয় লেন, ভুলতা বাজারে তিনটি সংযোগ সড়কের উন্নয়ন, বাজার অংশে তিন হাজার ৬০০ মিটার ড্রেনসহ ফুটপাত নির্মাণ করা হবে।
উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জের ভুলতা বাজারটি ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-বাইপাস জাতীয় মহাসড়ক এবং ভুলতা-আড়াইহাজার ও ভুলতা-রূপগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের সংযোগস্থল। ফ্লাইওভারটি নির্মাণ করা হলে দুটি জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের যানবাহন নিরবচ্ছিন্নভাবে চলাচল করতে পারবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।