পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ছয় মাস পরেই নির্বাচনের শিডিউল। এখন পর্যন্ত আমাদের থিম স্লোগান ঠিক হয়নি। গতবার ছিল ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, ‘ভিশন ২০২১’। কিন্তু এবারকার স্লোগান এখনও ঠিক হয়নি। আমরা ফ্রিস্টাইলে একেকজন একেকটা বলে যাচ্ছি। আমার মনে হয় এটা নিয়ে কাজ হওয়া উচিত। স্লোগান হতে পারে ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’, ‘বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ কিংবা ‘সবার জন্য সোনার বাংলা’।” সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোর দুর্বলতা চোখে পড়ে বলে মন্তব্য করেন তিনি। আগামী সম্মেলনে ছাত্রলীগকে নতুন মডেলে নিয়ে আসা হবে বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ছাত্রলীগ নিয়ে আমরা নতুন করে ভাবছি। সামনে তাদের কনফারেন্স (সম্মেলন) আছে। সেখানে ছাত্রলীগের স্ট্রাকচারাল লিডারশিপ ও ছাত্রলীগকে নতুন মডেলে বিকাশ করার নির্দেশনা আমাদের নেত্রীর (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) রয়েছে। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। একটু ধৈর্য ধরুন, অপেক্ষা করুন।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের প্রচার উপকমিটির উদ্যোগে ‘দেশরত্ন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ’ শীর্ষক এক সেমিনারে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম মহারগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রনির সন্ত্রাসী ঘটনার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। কিছু এমব্যারেসিং (বিব্রতকর) ব্যাপার ঘটে। এ ব্যাপারে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। ছাত্রলীগ হোক বা আওয়ামী লীগ হোক আমাদের যেকোনও সংগঠনের কেউ অপরাধ করে পার পায়নি। এ ব্যাপারে আমাদের নেত্রীর জিরো টলারেন্স অবস্থান। কোন অপরাধের শাস্তি হয় না? আমাকে বলুন, প্রমাণ করুন। আমাদের অনেক কর্মী কারাগারে। অপরাধ করে পার পেয়ে যাবে এমন কালচার আওয়ামী লীগে নাই, বিএনপির থাকতে পারে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন আমি এ ধরনের সেমিনারের পক্ষপাতী নই। কারণ, আগামী নির্বাচন কাছে চলে এসেছে। এখন আমাদের অ্যাকশন প্রোাগ্রাম নিতে হবে। বসে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমরা সেমিনার করবো, প্রচার সেল তা করেও আসছে, কিন্তু এ মুহুর্তে এটার আর প্রয়োজন নেই। এখন অনেক কাজ রয়েছে।
কাদের বলেন, আমাদের কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। কোন সময়ে কোন কাজ করবো তা আমাদের ঠিক করতে হবে। যখন যেটা অগ্রাধিকার, সেখানেই আমাদের মনোযোগ দিতে হবে। এয়ারকন্ডিশনার রুমে সেমিনার না করে তাপদগ্ধ মাঠে বেরিয়ে পড়তে হবে। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসে পরামর্শ করা যেতে পারে। তিনি বলেন, রজনীগন্ধার গান গেয়ে লাভ নেই, যেখানে মেশিনগানের গর্জন। এয়ারকন্ডিশন ঘরে বসে সেমিনার করার সময় আর নেই, সময় এসেছে নির্বাচনী প্রচারণার কৌশল পরিবর্তনের।
দলের প্রচার কৌশলে ভিন্নতা আনার তাগিদ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের নেত্রীর রাজনীতির লক্ষ্য তরুণ অর্থাৎ পরবর্তী প্রজন্ম এবং নির্বাচন। তরুণদের আমাদের কাছে টানতে হলে প্রথাগত প্রচার কৌশলে তেমন সাফল্য আসবে না। তিনি বলেন, সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাদের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচারটা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে আমরা শক্ত কোনো জবাব দিতে পারছি না। সব বদলে যাচ্ছে, আমাদেরও বদলাতে হবে, সময়ের সঙ্গে প্রচারণার কৌশল নির্ধারণ করতে হবে।
তারেক রহমানকে দেশে ফেরানো প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিষয়টি হচ্ছে তারেক রহমানের সাহস আছে কিনা, কত সাহস আছে। রাজনীতি যখন করেন জেলে যাওয়ার সাহস নেই, সেই রাজনীতি কোন দিন সফলকাম হবে না। রাজনীতি করলে জেল জুলুম সহ্য করতে হবে।
তারেককে ফেরানোর চেষ্টা ও আগামী নির্বাচনের মধ্যে কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, নির্বাচনের আগে তারেক রহমানকে কে ফিরিয়ে আনবে? আমরা? বিদেশে পালিয়ে থাকা দন্ডিত আসামিকে আইনগতভাবে ফিরিয়ে আনতে আদালতের নির্দেশ আছে। সেক্ষেত্রে কোন সমীকরণের বিষয় নেই।
প্রচার ও প্রকাশনা উপ-পরিষদের চেয়ারম্যান এইচটি ইমামের সভাপতিত্বে সেমিনারে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ফরাস উদ্দিন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান প্রমুখ। সেমিনার সঞ্চলনা করেন আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান শফিক উজ জামান।
এদিকে, গতকাল শুক্রবার বিকালে রাজধানীর কাকরাইলে হোটেল রাজমণি ইশাখাঁতে এক অনুষ্ঠানে নিজেকে লড়াকু সৈনিক দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাকে কোনঠাসা করার চেষ্টা করে কোন লাভ হবে না। আমি লড়াকু থাকবো।
হোয়াইট স্যান্ড রিসোর্ট আয়োজিত বদলে যাচ্ছে কক্সবাজার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাদের বলেন, আপনি বাংলাদেশের যেখানেই যান শুধু কর্ম যজ্ঞ চলছে। রাস্তা ব্রিজ। মায়েরও তো জন্মকালে ব্যথা হয়। রাস্তা হবে ব্রিজ হবে এর কি বার্থপেইন আছে না? এটা মানবেন না কেন? আমাদের দেশে মিডিয়ার একটা অংশ আছে এটাকে রাজনীতিতে নিয়ে যাচ্ছে। এখানে বেশি কাজ হচ্ছে ওকে একা করতে হবে। এক্সিডেন্ট হচ্ছে। তিনি বলেন, আমি নিজেও অসহায়, অসহায়ত্ব আমার মধ্যেও কাজ করে। আমি কি মানুষ নই? আমি মন্ত্রী, আমি কি দায় এড়াতে পারবো? এগুলো কার সঙ্গে আলাপ করবো। আসলে আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি সবাইকে বলবো, আমাকে কোনঠাসা করে লাভ নেই। আমার মধ্যেও সীমাবদ্ধতা আছে। কিন্তু আমি লড়াকু থাকবো। তিনি বলেন, আমি কিন্তু হতাশ হবো না। সমালোচনা আমাকে শুদ্ধ করে। আপনারা যারা বিরূপ সমালোচনা করেন, এরাও একদিন বুঝবে এই সমালোচনা সঠিক নয়।
চালকদের সমালোচনা করে সড়কমন্ত্রী বলেন, কেউ রাস্তার শৃঙ্খলা মানে না, মানে না। ছোট ছোট ব্যটারি চালিত গাড়ি গুলোর যাত্রীরাও জানে এগুলোতে উঠলে বিপদ আছে। একজনও বাঁচে না। তারপরও এই গাড়ি গুলোতে উঠে।
সড়কমন্ত্রী বলেন, তারপর আমাদের চালকরা কার আগে কে যাবে কত ট্রিপ নিলে কত লাভ হবে; এই বিষয়টাই তাদের মাথায় থাকে। মানুষের জীবন নিয়ে আমাদের খুব কম মানুষেরই মাথায় থাকে। আমার টাকা, আমি কত লাভ করলাম এটা প্রধান্য পায়। তখন তো এখানে আমাদের অনেক কিছু ভাবতে হবে।
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির সেনা মোতায়েনের দাবি সেনাবাহিনীর সঙ্গে সরকারের বিরোধ বাধানোর উস্কানি বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
গাজীপুর ও খুলনা সিটি নির্বাচনে বিএনপির সেনা মোতায়েনের দাবি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের উল্টো প্রশ্ন করে বলেন, আমি বিএনপি নেতাদের জিজ্ঞেস করতে চাই, তারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন, স্থানীয় বা জাতীয় কোন্ নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করেছেন?
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী নিয়োগের যৌক্তিকতা থাকতে হবে। সেনাবাহিনী নিয়োগ করার মত পরিস্থিতি হলে নির্বাচন কমিশন সরকারের সঙ্গে আলাপ করবে, চাহিদা দেবে, প্রয়োজনে সরকারকে অনুরোধ করবে। পরিস্থিতি সেরকম হলে সরকারও সায় দেবে।
কাদের বলেন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকাকালে অনেকে অনেক প্রতিষ্ঠানকে বিতর্কিত করেছেন। এই প্রতিষ্ঠানকে (সেনাবাহিনী) বিতর্কিত করবেন না। সেনাবাহিনী, সেনাবাহিনী বলে চিৎকার করে আপনারা একটা উস্কানিমূলক পরিবেশ তৈরি করতে চাইছেন। সেনাবাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা বিরোধ বাধানোর উস্কানি দিচ্ছেন, এটা দেশের জন্য ভালো নয়। আপনি নিজে যেটা করেননি, সেটার জন্য কেন বলছেন?
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা কখনও বলিনি, আমরা সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিরুদ্ধে। কিন্তু পরিস্থিতি কি সেরকম? যত নির্বাচন হলো তাতে কি সে পরিস্থিতি হয়েছে? তাহলে অযৌক্তিকভাবে সেনাবাহিনী নিয়োগের দাবি তুলে এ প্রতিষ্ঠানকে বিতর্কিত করতে চান কেন, এটা আমার প্রশ্ন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।