পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এস এম আলী আহসান পান্না, কুষ্টিয়া থেকে : সরকার যখন দেশে খাদ্য ঘাটতি পুরণ ও দ্রব্যমুল্যে নিয়ন্ত্রণে বদ্ধপরিকর ঠিক তখন কুষ্টিয়ায় সরকারী নির্দেশ অমান্য করে ফসলী মাঠে কৃষকদের সার-কিটনাশক সহায়তা ও সহজ শর্তে ঋণ বিতরণ করে তামাক চাষে উদ্ধুদ্ধ করে কুষ্টিয়ায় মাঠের পর মাঠ আবাদ করেছে তামাক কোম্পানীগুলো। তামাক কোম্পানীগুলোর লোভনীয় আশ্বাস সহযোগিতায় প্রতি বছরই বাড়ছে তামাক চাষের ব্যাপকতা। জেলা জুড়ে ব্যাপক হারে তামাক চাষ হওয়ায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা পুরণ না হবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর চাষীদের খাদ্য শস্য আবাদে উদ্বুদ্ধ করলেও তামাক কোম্পানীদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার জন্য কুষ্টিয়া জেলায় তামাক চাষ দ্বিগুণহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে খাদ্য শস্য ঘাটতির আশঙ্কা করছে কৃষিবিদরা।
সূত্রমতে,কুষ্টিয়ায় উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে তামাক চাষ। বোরো আবাদের জমিগুলো দখল করে নিয়েছে তামাক। এবার বিএডিসির সেচ স্কিমগুলোতেও তামাক চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা। বিড়ি সিগারেট উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো সার, বীজ, কীটনাশক ও টাকা দিয়ে কৃষকদের সহযোগিতা করায় বেড়েছে তামাক চাষ। নিজস্ব পুঁজি ছাড়াই মাত্র তিন মাসে ফসল পাওয়ায় কৃষকরা ঝুঁকে পড়েছেন তামাক চাষে। দেশের তামাক উৎপাদনকারী এলাকার মধ্যে কুষ্টিয়া অন্যতম। কুষ্টিয়ার মিরপুর, ভেড়ামারা, দৌলতপুর ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলার তামাক দেশসেরা। এখানকার উৎপাদিত তামাক উৎকৃষ্ট মানের হওয়ায় বড় বড় তামাক, বিড়ি, সিগারেট প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলো তামাক চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করে আসছেন। মাঠের পর মাঠ শুধু তামাক চাষ হলেও এর সঠিক কোন পরিসংখ্যান নেই খোদ কৃষি অফিসে।
তবে, জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, কুষ্টিয়া জেলায় মোট আবাদি জমির পরিমাণ ১ লাখ ১৫ হাজার ৯৭৮ হেক্টর। এর মধ্যে গত মৌসুমে বোরো ধান আবাদ হয়েছিল প্রায় ৩৩ হাজার ৮৫২ হেক্টর। গম ১১ হাজার ১৩০ হেক্টর, ভুট্টা ২০ হাজার ৯০০ হেক্টর, আলু ২ হাজার ৮০৬ হেক্টর, মিষ্টি আলু ৩৬৪ হেক্টর, সরিষা ৬ হাজার ৬৯০ হেক্টর, সবজি ৬ হাজার ২২৫ হেক্টর এবং ১৩ হাজার ২৭৬ হেক্টরে তামাক চাষ হয়েছিল। আর তামাক ও তামাকজাত পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর তথ্যমতে, জেলায় তামাকের চাষ হয়েছিল প্রায় ৩৪ হাজার হেক্টর জমিতে। এদিকে সরকার তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করলেও বিড়ি সিগারেট উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো তাদের কর্মীদের মাধ্যমে নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসের সমুদয় সার বিসিআইসি ডিলারদের কাছ থেকে গোপনে কিনে কৃষকদের দিয়েছেন। ফলে কৃষকদের জন্য সরকারের দেয়া ভর্তুকির সার তামাক চাষে ব্যবহৃত হচ্ছে। কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানায়, এমন একটা সময় আসবে যখন তামাক চাষের ফলে কুষ্টিয়ায় আর কোন ফসলের চাষ করা সম্ভব হবে না। মাটির স্বাস্থ্য রক্ষা এবং খাদ্য জাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে এখনই তামাকের চাষ নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। এ অঞ্চলে তামাক চাষ বৃদ্ধির ধারা যেভাবে উর্ধ্বমূখী হচ্ছে, অদূর ভবিষ্যতে কুষ্টিয়ায় চরম খাদ্য সঙ্কট দেখা দিবে।
কুষ্টিয়া জেলার খাদ্য ঘাটতি মিটাতে তামাক চাষ বন্ধ করা না হলে আগামীতে এ জেলায় চরম খাদ্য ঘাটতি দেখা দিবে। তাই জরুরী ভিত্তিতে কুষ্টিয়া জেলায় তামাক চাষ বন্ধ করার জন্য সুশীল সমাজ দাবী জানিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।