Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পান্তা-ইলিশের ধাক্কায় জাটকাসহ ইলিশ আহরণ বাড়ছে

বর্ষবরণে বাঙালি সংস্কৃতির নামে

| প্রকাশের সময় : ১৩ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

নাছিম উল আলম : সারা দেশে জাটকা আহরণে নিষেধাজ্ঞা সহ দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি এলাকায় মার্চ-এপ্রিল মাসে ইলিশ সহ সব ধরনের মাছের জন্য অভয়াশ্রম ঘোষণার মধ্যেই পহেলা বৈশাখের পান্তা-ইলিশের ধাক্কায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গের প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাঙালী সংস্কৃতির নামে এবারো দক্ষিণাঞ্চল সহ সারা দেশে পহেলা বৈশাখে পান্তা ইলিশের ব্যাপক আয়োজন শুরু হয়েছে ইতোমধ্যে। বাংলা বর্ষবরণের লক্ষ্যে বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চলে নানা আয়োজন চুড়ান্ত প্রায়। বরিশাল মহানগরীতে বর্ষবরণের লক্ষ্যে মঙ্গল শোভাযাত্রা ছাড়াও নানা ধরনের মেলার আয়োজন করা হচ্ছে এবারো। এসব মেলাতেও পান্তা ইলিশের আয়োজন থাকবে। এমনকি নগরীর বিভিন্ন নামীদামী রোস্তোরাঁগুলোতেও পান্তা ইলিশের আগাম বার্তা দিয়ে পোষ্টার ও ব্যানার ঝোলানো হয়েছে। বর্ষবরনে ইলিশ অন্যতম অনুসঙ্গ হওয়ায় ইতোমধ্যে বাজারে এর দাম দ্বিগুনেরও বেশী বেড়ে গেছে। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়েই জাটকার আহরণও বাড়ছে। গত দিন পনের যাবতই দক্ষিণাঞ্চলের বাজারগুলোতে প্রকাশ্যে ও গোপনে ইলিশ পোনা-জাটকা বিক্রি হচ্ছে। অথচ সরকারি বিধিবিধান অনুযায়ী বিগত প্রতি বছর ১ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া জাটকা আহরণ, পরিবহন ও বিপননে নিষেধাজ্ঞা আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বলবত থাকছে।
ইতোপূর্বে এ নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ৩০ নভেম্বর থেকে ৩০ মে হলেও গত বছর থেকে তা আরো দুমাস বৃদ্ধি করে ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন করা হয়েছে। এমনকি জাটকার সংজ্ঞায়ও পরিবর্তন আনা হয়েছে। ইতোপূর্বে ৯ ইঞ্চি সাইজের ইলিশকে জাটকা হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও এখন ১০ ইঞ্চি পর্যন্ত ইলিশ পোনাকে জাটকা হিসেবে আখ্যায়িত করে তার আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
মৎস্য বিজ্ঞানীদের সুপারিশের আলোকে প্রতিবছর নিম্ন মেঘনা, শাহবাজপুর চ্যানেল ও তেতুলিয়া নদীতে মার্চ ও এপ্রিল মাসে এবং পটুয়াখালীর আন্ধারমানিক নদীতে নভেম্বর-জানুয়ারি মাসের সময়কালকে অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও শরিয়তপুর জেলার নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা এবং দক্ষিণে চাঁদপুর জেলার মতলব ও শরিয়তপুর উপজেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার মধ্যে অবস্থিত পদ্মা নদীর ২০ কিলোমিটার এলাকায় প্রতি বছর মার্চ-এপ্রিলে মাসে অভয়াশ্রম ঘোষনা করে সব ধরনের মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। উপরন্তু মৎস্য বিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুযায়ী মেঘনার ভাটিতে সাগর মোহনার ৪টি এলাকার প্রায় ৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকাকে ইলিশ প্রজননস্থল হিসেবে চিহ্নিত করে প্রতি বছর আশ্বিনের বড় পূর্ণিমার আগে-পরের ২২ দিন সব ধরনের মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তবে মৎস্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় দপ্তর মাঠ পর্যায়ে সব ধরনের তৎপরতার কথা জানিয়ে বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে যাতে জাটকার আহরণ ও বিপনন না বাড়ে সে দিকে লক্ষ্য রাখার কথা বলা হয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের পাইকারী মোকামগুলোতে ৯শ’ গ্রাম থেকে এক কেজি সাইজের প্রতিমন ইলিশ বিক্রী হচ্ছে ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকার উপরে। এক কেজির ওপরের সাইজের ভালো মানের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬৫ হাজার টাকা প্রতিমন। আর ৭শ’ গ্রামের নিচের ১০ ইঞ্চি সাইজের জাটকার ওপরের ইলিশের দর ১৬-২০ হাজার টাকা মন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ