Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কোটা সংস্কার সরকার রিভিউ করবে : ওবায়দুল কাদের

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সরকারি চাকরির বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থা আগামী মে মাসের ৭ তারিখের মধ্যে সরকার রিভিউ করবে। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ ব্যানারে আন্দোলনরতদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠক এই সিদ্ধান্ত আসে। কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলন বিস্ফোরণোন্মুখ হয়ে ওঠার প্রেক্ষাপটে সচিবালয়ে এই সমঝোতা বৈঠক হয়। সোয়া দুই ঘণ্টা আলোচনার পর আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদের পাশে নিয়ে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, সরকার রিজিড অবস্থানে নেই। আমি তাদের আশ্বস্ত করেছি। তাদের দাবির যৌক্তিকতা আমরা ইতিবাচকভাবেই দেখব। সরকারি চাকরির বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থা ‘পরীক্ষা-নিরীক্ষার’ আশ্বাস পেয়ে আন্দোলন স্থগিত করেছে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। মন্ত্রী বলেন, মে মাসের ৭ তারিখের মধ্যে সরকার রিভিউ বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। রেজাল্ট কী আসে আমরা সেটা জানিয়ে দেবো। তারা কথা দিয়েছেন, ওই পর্যন্ত তারা তাদের চলমান আন্দোলন স্থগিত রাখবেন। ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহŸায়ক হাসান আল মামুন কোটা সংস্কারের বিষয়টি আমলে নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করা হলো। এখন পর্যন্ত আমার যে সকল ভাই-বোনেরা গ্রেফতার হয়েছেন তাদের সবাইকে নিশর্তভাবে মুক্তি দেয়া হবে এবং পাশাপাশি যারা আহত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করবে সরকার। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রোববার রাতে সঙ্ঘাত চলাকালে উপাচার্যের বাসভবনে তাÐবের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের শাস্তি পেতে হবে বলে সভা শেষে সাফ জানিয়ে দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
পরে ওবায়দুল কাদের সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দুপুরে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এক বিশেষ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। তরুণ সমাজ, যারা আমাদের রাজনীতিতেও অপরিহার্য অংশ, এদের ব্যাপারে আমাদের একটা দুর্বলতা অবশ্যই আছে। কারণ আমরা রাজনীতিটা শুধু নেক্সট ইলেকশনের জন্য করি না, আমরা রাজনীতি করি, উন্নয়ন করি নেক্সট জেনারেশনের জন্য। কাজেই নেক্সট জেনারেশনের সুবিধা-অসুবিধা, তাদের চোখের ভাষা, মনের ভাষা আমরা বোঝার চেষ্টা করি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনা তরুণদের যৌক্তিক দাবি কখনো অবহেলা করেন না। সেই কারণে তিনি আমাদের পাঠিয়েছেন একটা মেসেজ দিতে। বিদ্যমান যে কোটা পদ্ধতি, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এ ব্যাপারে একটা সমাধান খোঁজার কথা আমরা তাদের বলেছি। এই আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীদের মধ্যে রোববার রাতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে যারা আহত হয়েছেন, তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেয়ার কথাও কাদের বলেন। কাদের বলেন, আমি ব্রাইট অ্যান্ড ব্রিলিয়ান্ট তরুণদের কাছে জানতে চেয়েছি, কোটা সংস্কারের সঙ্গে ভিসি কীভাবে জড়িত? তিনি আর তার পরিবার কেন আক্রান্ত হবে?... তারা একমত। তারা বলেছে, এর মধ্যে অনুপ্রবেশকারী বহিরাগত সন্ত্রাসী থাকতে পারে। আমি পুলিশ কমিশনারকে বলেছি, নিরীহ কাউকে যেন ধরা না হয়। বর্তমানে দেশে পাঁচ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য। প্রতিবন্ধী এক শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ও জেলা কোটা ১০ শতাংশ করে। সব মিলিয়ে কোটার জন্য বরাদ্দ ৫৬ শতাংশ। ফলে এর কোনো শ্রেণিতে যারা পড়েন না, তাদের প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে বাকি ৪৪ শতাংশের জন্য। এই পদ্ধতি সংস্কারের পাঁচ দফা দাবিতে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে আন্দোলন চালিয়ে আসছে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। তাদের দাবিগুলো হলোÑ সরকারি নিয়োগে কোটার পরিমাণ ৫৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা, কোটার যোগ্য প্রার্থী না পেলে শূন্যপদে মেধায় নিয়োগ, কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা না নেয়া, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে অভিন্ন বয়সসীমা, নিয়োগপরীক্ষায় একাধিকবার কোটার সুবিধা ব্যবহার না করা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সোমবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। ওই বিক্ষোভ থেকেই দুপুরে তাদের মুখপাত্র হাসান আল মামুন সেতুমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান। পরে আন্দোলনকারীদের মধ্যে থেকে ১০ জন তরুণ ও ১০ জন তরুণী পুলিশের গাড়িতে করে সচিবালয়ে যান বৈঠকে অংশ নিতে। বিকাল সাড়ে ৪টায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ওই বৈঠক শুরু হয়।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষে দলের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ ও জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এনামুল হক শামীম ও খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য এস এম কামাল হোসেন এবং উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়ার পাশাপাশি ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

 



 

Show all comments
  • গনতন্ত্র ১০ এপ্রিল, ২০১৮, ১০:২৮ এএম says : 0
    জনগন বলছেন, “এক ছিল জেলে, তার ছেলেটা লেখা-পড়ায় অগ্রহী ছিল কিনতু বাবা চাচ্ছিল না ছেলে আর পড়ুক, কি ভাবে তার লেখা-পড়া বন্ধ করবে ? বাবা বললো, কাগজ আর কলম আনো আমি তোমার পরীক্ষা নেব, ছেলে কাগজ আর কলম এনে দিল, বাবা কোন দিন স্কুলে যায়নি, তাই সে কাগজে আঁকাআঁকি করে বললো, পড়তো কি লিখেছি ? ছেলে বললো কিছুই হয়নি, বাবা এইটা পড়তে পারিস না, তোকে পড়াইয়া লাভ নাই , কাল থেকে আমার সাথে মাছ ধরবি ৷ “
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ওবায়দুল কাদের


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ