Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী তান্ডবে শঙ্কিত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৯ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত গ্রামীণ ব্যাংকের জন্মস্থান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় লাগোয়া হাটহাজারীর জোবরা পি পি স্কুল অ্যান্ড কলেজে অতর্কিতে ছাত্রলীগের একাংশের সন্ত্রাসী হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় ভীতি-শঙ্কায় দিনাতিপাত করছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। হামলাকারীদের কর্মকান্ড তুলে ধরে হাটহাজারী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ এবং চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কাছে স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ স্মারকলিপি পেশ করে। তা সত্তে¡ও চিহ্নিত হামলাকারীদের কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অভিযোগও মামলা হিসেবে গ্রহণ করেনি হাটহাজারী থানা পুলিশ। স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, স্থানীয় কথিত ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দাবিতে ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালিত হয়। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে গতকাল (রোববার) শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরে গেলেও আতঙ্ক কাটেনি।
কলেজের প্রিন্সিপাল মোঃ সফিউল আলম গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, হামলায় জড়িতদের নাম উল্লেখ করে থানায় সুস্পষ্ট অভিযোগ দায়েরের পরও পুলিশ তা মামলা হিসেবে গ্রহণ করেনি। এখনো পর্যন্ত হামলাকারীদের কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। গত ৪ এপ্রিল উক্ত হামলার ঘটনায় কলেজের ১৩ শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও আতঙ্কের মধ্যে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে না। শিক্ষকরা ক্লাস বর্জন করলেও জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তারা ক্লাসে ফিরে গেছেন। সন্ত্রাসী হামলার পরও মামলা না নেয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা জানায়, গত ৩১ মার্চ কলেজের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয় চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনকে। চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও হাটহাজারী এলাকার বাসিন্দা, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ সালামকে দাওয়াত না দিয়ে মেয়রকে কেন দাওয়াত দেয়া হলো- এ নিয়ে শিক্ষকদের কাছে কৈফিয়ত চান ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমান। মিজান ও তার সহযোগীরা এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং ওইদিন অনুষ্ঠানে হামলার চেষ্টা করে। তবে ব্যাপক উপস্থিতির কারণে হামলাকারীরা সেখানে যায়নি। এর জের ধরে মিজানের নেতৃত্বে একদল যুবক ৪ এপ্রিল স্কুল অ্যান্ড কলেজে হামলা চালিয়ে তান্ডব চালায়।
থানায় দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, মিজান ছাড়াও মোঃ ইকবাল, মোরশেদুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, আহমদ কবির, মোঃ শফিসহ ৫০-৬০ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী হামলায় অংশ নেন। হামলাকারীরা প্রিন্সিপালের তালাবদ্ধ কক্ষ ভাঙচুর করে সেখানে ব্যাপক লুটপাট চালায়। তারা একটি সাইনবোর্ড, উদ্বোধনী ফলক ও একটি নামফলক ভেঙে চুরমার করে। হামলা শেষে তারা মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করে। হামলাকারীরা স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রবীণ শিক্ষাবিদ প্রফেসর আহমদ হোসেনকে এলাকায় ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে।
ঘটনার পর কলেজের শিক্ষক পরিষদের এক জরুরী সভায় এ ঘটনার নিন্দা ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দাবি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ছাত্রলীগের স


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ