পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকারী ব্যাংক, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভর্তি পরীক্ষাসহ সরকারী চাকরীর নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী একটি চক্রকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত ৭ বছর ধরে এ চক্রটি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রশ্ন ফাঁস করে আসছে। সরকারী চাকরীর নিয়োগ পরীক্ষার জন্য একজন পরীক্ষার্থীকে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা দিতে হয়।
এ চক্রটি মাস্টার কার্ড ডিভাইস ব্যবহার করে অভিনব কায়দায় সম্প্রতি উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করার চেষ্টাকালে এবার গোন্দো পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। সর্বশেষ ২ এপ্রিল শুরু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের আগেই তিন ব্যাংক কর্মকর্তাসহ চক্রটির ১০ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। এরআগে এই চক্রটি একই কায়দায় সরকারি বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে। গতকাল শনিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলেনে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবুদল বাতেন এ তথ্য জানান।
এর আগে শুক্রবার রাতে রাজধানীর মিরপুর, নিউমার্কেট ও ফার্মগেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রশ্নফাঁস চক্রের ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ১৩টি বিশেষ ধরনের ডিভাইস উদ্ধার করা হয়, যা মাস্টার কার্ড ডিভাইস নামে পরিচিত।
গ্রেফতাররা হলেন, হবিগঞ্জের পূবালী ব্যাংকের প্রবেশনাল অফিসার মো. মনিরুল ইসলাম, পটুয়াখালী সোনালী ব্যাংকের আইটি অফিসার অসীম কুমার দাস, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রবেশনাল অফিসার সোহেল আকন্দ, জহিরুল ইসলাম, সাদদাদুর রহমান সোহান, নাদিমুল ইসলাম, এনামুল হক শিশির, শেখ তারিকুজ্জামান, অর্ণব চক্রবর্তী ও আরিফুর রহমান শাহীন।
গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন বলেন, প্রশ্নফাঁস চক্রের এই ১০ সদস্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত থাকলেও প্রতি শুক্রবার রাজধানীর পান্থপথে তাদের একটি সেন্টারে এসে মিলিত হতেন। সেখানে বসেই তারা বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। এই সেন্টারে বসে বিভিন্ন সরকারি নিয়োগ ও ভর্তি পরীক্ষায় মাস্টার কার্ড ডিভাইস ব্যবহার করে তারা জালিয়াতি করতেন। দীর্ঘদিন এইভাবে জালিয়াতি করার পর এবার তারা এইচএসসি পরীক্ষাকে টার্গেট করে একত্রিত হয়ে মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু তারা সফল হওয়ার আগে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ধরা পড়েন বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
ডিভাইস ব্যবহার করে প্রশ্নফাঁস প্রক্রিয়া সম্পর্কে আবদুল বাতেন বলেন, চক্রের এক ব্যক্তির কাছে দুইটি ডিভাইস সংযুক্ত থাকতো। এর মধ্যে একটি ক্ষুদ্র ডিভাইস কানে আর একটি শরীরের মধ্যে লাগানো থাকতো। এই ডিভাইস দিয়ে প্রতারকরা কেন্দ্রে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করতেন।
তিনি জানান, বিশেষ এই ডিভাইসের মাধ্যমে প্রতারক চক্র পরীক্ষার্থীদের কল করলেই তা অটোরিসিভ হয়ে যেত। তখন তারা বাইরে বসেই পরীক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের সমাধান ডিভাইসের মাধ্যমে বলে দিতেন। পরীক্ষার্থীরা উত্তর শুনে শুনে তা উত্তরপত্রে সমাধান করে দিত। এমসিকিউ অংশের প্রশ্ন সমাধানের জন্যই এই প্রযুক্তি বেশি ব্যবহার করা হতো।
জালিয়াতি করেই চাকরি নেন তিন ব্যাংক কর্মকর্তা
জালিয়াত চক্রের সদস্য তিন ব্যাংক কর্মকর্তা একই কায়দায় জালিয়াতি করেই ব্যাংকে চাকরি নিয়েছিল বলেও জানান গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবুদল বাতেন।
তিনি বলেন, তিন ব্যাংক কর্মকর্তা নিজেরাও একই কায়দায় জালিয়াতি করে ব্যাংকে চাকরি নিয়েছিলেন। একইভাবে আরো বেশ কয়েকজনকে তারা জালিয়াতি করে ব্যাংক ও সরকারি চাকরি নিয়ে দেন।
আবদুল বাতেন জানান, চক্রটির মূল হোতার নাম পুলকেশ দাস বাচ্চু। এই বাচ্চু ও তার সহযোগী কার্জন মাস্টার ডিভাইস সংগ্রহ করে অন্যদের সরবরাহ করতেন। আর চক্রের বাকি সদস্যরা জালিয়াতির জন্য পরীক্ষার্থী সংগ্রহ ও তাদের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের চুক্তি করতেন।
চক্রটি দীর্ঘ ৭/৮ বছর ধরে এই অপরাধ করে আসছিলেন। তারা সর্বনিম্ন ৩০/৩৫ হাজার থেকে শুরু করে সর্ব্বোচ ১০/১২ লাখ টাকায় পরীক্ষার্থীদের সাথে চুক্তি করতেন। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আদালতে রিমান্ড আবেদনের মাধ্যমে তাদের আরো জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।