দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সরকারের এজেন্টের ভূমিকা পালন করছে অভিযোগ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, আগামী নির্বাচন থেকে বিএনপিকে বাইরে রাখতেই সরকার ও দুদক অভিন্ন উদ্দেশ্য কাজ করছে। এতে তারা সফল হবে না। যতই জুলুম নির্যাতন করুন না কেন বিএনপি নির্বাচনে যাবেই। গতকাল এক আলোচনা সভায় তিনি আরো বলেন, আমি অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বলতে চাই যে, এই দুদক সরকারের একটা এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে। সরকারের যে উদ্দেশ্য, দুদকের উদ্দেশ্যও একই। তাদের উদ্দেশ্য বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে তারা যাতে নির্বাচনে না আসতে চায়। সরকারকে বলবো- আপনারা যত ধরনের অত্যাচার-নির্যাতন করুন না কেনো, যতই কলাকৌশল করেন না কেনো, যত রকমের ষড়যন্ত্র করেন না কেনো, যতভাবে আমাদের নিষ্পেষিত করেন না কেনো বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। একটি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন হলে এটাই প্রমাণিত হবে জাতীয়তাবাদী ও গণতান্ত্রিক শক্তির বিজয় অবধারিত। সব দলের অংশগ্রহণে ভোট হলেই আওয়ামী লীগ সরকারকে বিদায় নিতে হবে- এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ২০ দলীয় জোটের শরিক ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) উদ্যোগে জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। দলের চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, জাগপার সভানেত্রী অধ্যাপিকা রেহানা প্রধান, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, লেবার পার্টির একাংশের মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদি, এনপিপির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা প্রমূখ।
বিএনপির ৮ শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত সম্পর্কিত গণমাধ্যমের প্রকাশিত সংবাদের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির মওদুদ আহমদ বলেন, ৮ জন শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন মিথ্যা অভিযোগ এনে সংবাদপত্রে দিয়ে এই চরিত্রহননের ব্যবস্থা করেছে সরকার। এটাও তাদের ষড়যন্ত্রের অংশ। উদ্দেশ্য একটাই- বেগম খালেদা জিয়াকে জেলখানায় রাখা এবং বাকী শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া যাতে করে বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে। এমন অবস্থা করা যাতে এই দল নির্বাচনে আসতে না পারে। এটাই হলো তাদের মূল্য লক্ষ্য। সরকারের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, দেশের মানুষ এটা কখনো গ্রহণ করবে না। তিনি আরো বলেন, দুদক সম্পর্কে কী বলব। এই কমিশন তো আমরাই করেছিলাম অনেক মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে। সত্যিকার অর্থে যারা দুর্নীতিপরায়ণ বিশেষ করে যারা ক্ষমতায় আছে তাদের দুর্নীতি ধরবে, একটা স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে। এখন এই দুদক সরকারের একটা তল্পিবাহক একটা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আজকে এই কমিশন সরকারের একটি আজ্ঞা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সরকারের ইচ্ছাপূরণ করবার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ভিত্তিহীন অভিযোগ করে আমাদের দলকে দুর্বল করা যাবে না। প্রধান মন্ত্রীর প্রটোকল নিয়ে শেখ হাসিনার নির্বাচনী প্রচারণা করছেন; আর বিএনপিকে প্রচারণা করতে দিচ্ছেন না দেশবাসী এটা দেখছে। ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, বহুবছর ধরে আইনী পেশায় রয়েছি। বেগম জিয়াকে জামিন দেয়ার পরও বন্দী করে রাখার মতো ঘটনা দেখিনি। বেগম জিয়াকে মুক্ত করেই আগামী নির্বাচনে ২০ দলীয় জোট দেশবাসীকে নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে। ##