Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

আবারো লিজে আনা হচ্ছে দুইটি বিমান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স আবারো দুইটি উড়োজাহাজ লিজে আনান প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে। এর আগে ১৮ বছরের পুরানো উড়োজাহাজ লিজে আনার পর মেয়াদ শেষের আগেই ফেরৎ দিতে হয়েছে। এতে করে জাতীয় পতাকাবাহি সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ গচ্ছা দিতে হয়েছে। তবে বিমান কর্তৃপক্ষ বলছেন, হজযাত্রীদের পরিবহনের জন্য বিমান দুইটি এয়ারক্রাফট লিজে আনার উদ্যোগ গ্রহন করেছে। অন্যদিকে এর আগে লিজে আনা দুইটি উড়োজাহাজ নিয়ে সমস্যায় পড়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। তারপরেও রহস্যজনক কারণে ব্যাপক বিতর্কের মধ্যেও দুইটি উড়োজাহাজ লিজে আনার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
সংশ্লিষ্ট সুত্রগুলো বলছে, এর আগে লিজে আনা বিমান দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনায় সিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বিদেশ থেকে লিজে আনা দুইটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর উড়োজাহাজ মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছর আগেই ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে। ফ্লাইট সিডিউল ঠিক রাখার জন্য স¤প্রতি মালয়েশিয়ার একটি কোম্পানির সাথে আরো দুইটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর ক্রু, মেইনটেনেন্স এবং ইন্সুরেন্সসহ (এসিএমআই) ৮ মাসের লিজ চুক্তি সম্পাদন করেছে বিমান। এরমধ্যে একটি উড়োজাহাজ ইতোমধ্যে ঢাকায় পৌঁছেছে। বাকি উড়োজাহাজটি কবে আসবে তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।
বিমানের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আহম্মদ বলেন, বিমানের সিডিউল ঠিক রাখতে এবং আগামী হজফ্লাইট যথাযথভাবে পরিচালনার জন্য দুইটি উড়োজাহাজ লিজে আনা হচ্ছে। এতে করে সমস্যা বা সংকট নিরসন করা সম্ভব হবে।
২০১৪ সালে মিসর থেকে ৫ বছরের ‘ড্রাই’ লিজে বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর আনে। উড়োজাহাজ দুইটি ছিল ১৮ বছরের পুরাতন। ফলে প্রায়ই কারিগরি ত্রুটি দেখা দিত। পরিশেষে বিপুল অংকের অর্থ গচ্ছা দিয়ে লিজে আনা এয়ারক্রাফটি ফেরৎ পাঠানো হয়।
বিমানের একটি সুত্র জানানয়, লিজের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ফেরৎ পাঠানোর কারণ হলো এটি ছিল ১৮ বছরের পুরানো,ফলে প্রায়ই যান্ত্রিক ত্রæটির কারণে ফ্লআট পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। অবশেষে সংসদীয় কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী লিজের মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছর আগেই এর সরবরাহকারীদের কাছে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ফলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে বিপুল অঙ্কের অর্থ গচ্চা দিতে হয়েছে।
এদিকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক রুটের সিডিউল বিপর্যয় রোধ এবং আগামী হজ ফ্লাইট যাতে বিঘিœ না হয় সেজন্য বিমান মালয়েশিয়া থেকে ৮ মাসের লিজে দুইটি বোয়িং আনার সিদ্ধান্ত নেয়। লিজ চুক্তির শর্তানুযায়ী উড়োজাহাজের সাথে পর্যাপ্ত সংখ্যক ক্রু আসার কথা। কিন্তু এক্ষেত্রে শর্ত ভঙ্গ করেছে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটি। পর্যাপ্ত ক্রু না আসায় গত সপ্তাহে বিমানের ঢাকা-কুয়েত-ঢাকা ফ্লাইটটি ১২ ঘণ্টা বিলম্বিত হয়। এছাড়া এই উড়োজাহাজ দিয়ে ঢাকা থেকে দোহায় একটি ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়। ফ্লাইটটি দোহায় গিয়ে ক্রুদের বিশ্রামের জন্য সেখানে ৮ ঘণ্টা বিলম্ব করে। ফ্লাইট বিলম্বিত হওয়ায় একদিকে যাত্রীদের বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে, অন্যদিকে বিমান আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ব্যাপারে বিমানের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ক্রু স্বল্পতার কারণে স¤প্রতি লিজে আনা বোয়িং উড়োজাহাজ দিয়ে আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা কিছুটা বিঘœ হচ্ছে।
বিমানের হজের পরিকল্পনা নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, এ বছর হজ যাত্রী বহনের জন্য বিমান নিজস্ব বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর উড়োজাহাজ দিয়ে যাত্রী বহন করা হবে। এই উড়োজাহাজের আসন সংখ্যা ৪১৯টি করে। এ ছাড়া চারটি স্বল্প মেয়াদি বোয়িং ৭৭৭-২০০ইআর লিজের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে।
বিমানের জনসংযোগ কর্মকর্তা জানান, ১৪ জুলাই প্রথম ফ্লাইট। ঠিক তার দুই মাস আগেই পরিপূর্ণ সিডিউল সবার কাছে পৌঁছে দেয়া হবে।
তিনি জানান, বাংলাদেশ হজ এজেন্সিগুলোর চাহিদা বা হাজীদের চাহিদা অনুযায়ী কোনো ফ্লাইট পরিচালনা সম্ভব না। সৌদি থেকে যেভাবে আমাদেরকে সিডিউল দেবে, সেই ভাবেই ফ্লাইট পরিচালনা করতে হবে।›
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে মালয়েশিয়ার ফ্লাইট গেøাবাল সংস্থার কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে। এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দুইটি উড়োজাহাজ আনার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
জানা যায়,বিমানের বর্তমানে ১৫টি আন্তর্জাতিক রুট রয়েছে। জাতীয় পতাকাবাহী এই এয়ারলাইন্সের নিজস্ব বোয়িং উড়োজাহাজের সংখ্যা ৬টি। এরমধ্যে ৪টি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর এবং বাকি দুটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০। এই উড়োজাহাজ দিয়ে সিডিউল অনুযায়ী ফ্লাইট পরিচালনা দুরূহ ব্যাপার। আর তাই বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয়ে লিজে উড়োজাহাজ আনতে হচ্ছে। তবে আগামী আগস্ট ও অক্টোবর মাসে আমেরিকার বোয়িং কোম্পানির কাছ থেকে কেনা দুইটি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ দেশে আসবে বলে বিমানের নির্ভর যোগ্য সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে প্রতি বছর হজের সময় প্রথম দিকে হজ এজেন্সিগুলো যাত্রী না দেওয়ায় বিমানের নির্ধারিত ফ্লাইট বাতিল করতে হয়। ফলে লোকসানে পড়তে হয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে। তাই বিমান এবার সংকট উত্তরণে যাত্রী ভাড়ার টাকা আগেই আদায় করে নিচ্ছে ।
জানা যায়, এবছর বাংলাদেশ থেকে ১ লক্ষ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যাবেন। এই যাত্রী বিমান বাংলাদেশ ও সৌদিয়া এয়ারলাইন্স অর্ধেক করে বহন করবে। সেই হিসেবে বিমান বাংলাদেশ ৬৪ হাজার ৫০০ যাত্রী বহন করবে।
বিমান বাংলাদেশ সূত্রে জানা যায়, বিগত বছরগুলো হজ এজেন্সিগুলো সময়মত যাত্রী না দিতে পারায় অনেক ফ্লাইট বাতিল করতে হয়। অনেক সময় ফ্লাইট গেলেও আসন সংখ্যা ফাঁকা থেকে যায়। এমনকি বিগত বছর হজের ২৪ ফ্লাইট বাতিল করতে হয়।##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিমান

১৩ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ