Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বোমা বিস্ফোরণের সময় আমি বাবার পাশেই ছিলাম -সাঈদ খোকন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ এপ্রিল, ২০১৮, ৫:১৫ পিএম | আপডেট : ৫:৫৮ পিএম, ২ এপ্রিল, ২০১৮

বোমা বিস্ফোরণের সময় আমি বাবার পাশেই ছিলাম। বিস্ফোরণে বাবার পুরো শরীর থেকে রক্ত ঝরতে থাকে। আমার দুই পায়ে স্পিøন্টার আঘাত করে। সে সময়ই বাবাকে জড়িয়ে ধরলাম, বাবা তখন প্রায় পড়ে যাচ্ছিলেন। আমিও আহত হওয়ায় ধরে রাখতে পারছিলাম না তাকে। পরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সহায়তায় বাবা ও আমি বারডেম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হই।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বোমা হামলার শিকার হওয়ার ঘটনা নিয়ে গতকাল সোমবার এ স্মৃতিচারণ করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন।
গতকাল রোববার দুপুরে ডিএসসিসির নগর ভবনের ব্যাংক ফ্লোরে মোহাম্মদ হানিফের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে মেয়র সাঈদ খোকন এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলালসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।
সাঈদ খোকন বলেন, সেই দিনের স্মৃতি আজও নাড়া দেয়। নেত্রীর প্রতি আনুগত্য ও ভালবাসা সেদিন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা দেখিয়ে ছিলেন। আমার বাবার আনুগত্য ও ভালবাসা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক রাজনীতিতে বিরল। গ্রেনেড হামলায় আমাদের ২৪ নেতা-কর্মী মারা গেলেন। আমি সেদিন সেখানে ছিলাম। আমি নেত্রীর এক হাত বাঁয়ের একটি ট্রাকে ছিলাম। আমার বাবা সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন নেত্রীকে অনেকটাই আগলে রেখে। অনেকেরই আশঙ্কা ছিল কিছু একটা হতে পারে। সে সময়টা এমনই ছিল, কিছুদিন বেশকিছু গুজব উঠেছিল, জননেত্রী শেখ হাসিনার ওপর আক্রমণ হতে পারে, যেকোনো সময় একটা ঘটনা ঘটতে পারে। আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতা-কর্মীর মুখে মুখে ছিল। সবাই আশঙ্কা-আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে চলছিল। তারপর যা হওয়ার হলো। আমার বাবা সেদিন রক্তাক্ত হয়ে পড়লেন।
মোহাম্মদ হানিফসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মানবঢাল রচনা করে প্রধানমন্ত্রীকে বাঁচিয়েছিল উল্লেখ করে সাঈদ খোকন বলেন, একের পর এক স্পিøন্টারের আঘাতে রক্ত ঝরছিল। আমি পার্টি অফিসে বাবার কাছে যাই। বাবা প্রায়ই পড়ে যাচ্ছিলেন, আমি তাকে জড়িয়ে ধরি। আমার শরীরেও রক্ত, দুই পায়ে স্পিøন্টার ছিল, আমি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছিলাম। নিজে আহত থাকার কারণে তাকে ধরে রাখতে পারছিলাম না। এরপর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আমাকে ও বাবাকে বারডেম হাসপাতালে ভর্তি করেন।
সাঈদ খোকন বলেন, নেত্রীর প্রতি আনুগত্য এবং ভালবাসার এই দৃষ্টান্ত আমাদের অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। এই দৃষ্টান্ত সাংগঠনিক রাজনীতিতে বিরল। আজকে বাবার জন্মবার্ষিকীতে তার রেখে যাওয়া দৃষ্টান্ত হোক আমাদের সবার অনুকরণীয়। এই দিনে আমরা শপথ নিতে পারি, আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে রক্ষা করার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ করতে হলে আমরা করবো। বঙ্গবন্ধু কন্যার যেকোনো প্রয়োজনে আমরা সর্বোচ্চ ত্যাগে প্রস্তুত। বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের বর্ণনা করে সাঈদ খোকন বলেন, সে সময় আওয়ামী লীগের কর্মীরা, আমরা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক ছিলাম। আমরা বাসায় থাকতে পারতাম না। মাসের পর মাস, বছরের পর বছর আমরা বাসায় থাকতে পারিনি। আমরা হুলিয়া নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছি। সেই দুঃসময়ের স্মৃতি আমাদের আজও নাড়া দেয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বোমা বিস্ফোরণের
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ