Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গাজায় বিক্ষোভে ইসরাইলি বাহিনীর গুলি : ১৭ ফিলিস্তিনি নিহত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের ওপর ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১৭ নিহত এবং অন্তত ১৪০০ জন আহত হয়েছেন বলে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, গত শুক্রবার শুরু হওয়া ‘ভূমি দিবস’ উপলক্ষে ইসরাইলি দখলদারিত্বের প্রতিবাদে ডাকা ছয় সপ্তাহব্যাপী গণবিক্ষোভে প্রায় দশ হাজার ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী যোগ দেয়। এসময় তাদের ছত্রভঙ্গ করতে ইসরাইলি বাহিনী গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়লে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
বলা হচ্ছে, নিহতদের মধ্যে একজন ১৬ বছর বয়সী কিশোরও রয়েছে। ইসরাইলি বাহিনীর তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে, ছয়টি স্থানে দাঙ্গা সৃষ্টির করার চেষ্টা হলে তা প্রতিহত করতে মূল প্ররোচকদের লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। ‘গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন’ শীর্ষক এই বিক্ষোভে চালিয়ে যেতে ফিলিস্তিনিরা সীমান্তে অন্তত পাঁচটি তাঁবু গেড়েছে। বলা হচ্ছে, এই বিক্ষোভ চলবে ১৫ মে পর্যন্ত। আন্দোলনকারীরা ইসরাইলের দখলকৃত তাদের আবাসসহ ভূমি ফিরে পাওয়ার জোর দাবি তুলেছেন।
তদন্ত চান জাতিসংঘ মহাসচিব
গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের ইসরাইলি বাহিনীর গুলি করে হত্যার ঘটনায় নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহŸান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতিয়েরেস। মহাসচিবের বরাত দিয়ে তার মুখপাত্র ফারহান হক এক বিবৃতিতে একথা জানিয়েছেন।
ফারহান হক বলেন, নাগরিকদের ক্ষতি হয় বা ভূখÐের ক্ষয়ক্ষতি হয় এমন কাজ থেকে সংশ্লিষ্টদের বিরত থাকতেও জাতিসংঘ মহাসচিব আহŸান জানিয়েছেন। জাতিসংঘের উপ-রাজনীতি বিষয়ক প্রধান টেই-ব্রæক জেরহুউন বলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবিক আইন অনুযায়ী ইসরাইলকে তার দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রাণসংহারি শক্তির ব্যবহার কেবল তখনি করা যেতে পারে যখন আর কোনো উপায় থাকে না। আর তাতে কারও প্রাণ গেলে কর্তৃপক্ষকে যথাযথ তদন্তের ব্যবস্থা করতে হবে।
শুক্রবারের সহিংসতার পর ওইদিন রাতেই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকের ডাক দেয় কুয়েত। কিন্তু ১৫ সদস্য রাষ্ট্র ইসরাইলি সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতিতে একমত না হলে কুয়েতের অনুরোধে পরে প্রকাশ্য বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবারের বৈঠকে ইসরাইলের উপস্থিত না হওয়াকে দুর্ভাগ্যজনক বলে আখ্যায়িত করেছেন মার্কিন কূটনীতিক ওয়াল্টার মিলার। তিনি বলেন, প্রাণহানির জন্য আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। উত্তেজনা কমানো ও নতুন সংঘর্ষের ঝুঁকি এড়াতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহŸান জানাচ্ছি।
বিক্ষোভের মতো অহিংস কর্মসূচিতে ইসরাইলি বাহিনীর এমন আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। ‘প্যালেস্টাইনিয়ান রাইটস ইন ইসরাইল’ নামে একটি সংগঠন বলেছে, ‘এ ধরনের শক্তিপ্রয়োগ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন’।
১৯৭৬ সাল থেকে বছরের ৩০ মার্চ ‘ভূমি দিবস’ পালন করছে ফিলিস্তিনিরা। ওই সময় ইসরাইলি বাহিনীর দখলদারিত্বের প্রতিবাদে বিক্ষোভের সময় ছয় ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
১৯৪৮ সালে ইসরাইল রাষ্ট্র সৃষ্টির সময় তাদের নেতৃত্ব ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে গাজা ও পশ্চিম তীরে পাঠিয়ে দেয়। ইসরাইলের নেতৃত্বের বক্তব্য, বাস্তুচ্যুত শরণার্থীরা ভবিষ্যৎ গাজা ও পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিন রাষ্ট্রে বসবাস করবে। কিন্তু ফিলিস্তিনিরা এই অবিচার প্রত্যাখ্যান করে তাদের স্বগৃহে পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে আসছে। সূত্র : রয়টার্স ও বিবিসি।



 

Show all comments
  • গনতন্ত্র ১ এপ্রিল, ২০১৮, ৫:৪০ পিএম says : 0
    জনগন বলছেন, “ সর্দার “ একতাবিহীন জাতী আমরা খন্ড, খন্ড, দল বেঁধে হই সর্দার, সারাবিশ্বে আজ আমরা অহেলিত দাঁড়িয়ে আছি খাঁদের পাড় ৷ কেউ কাউকে করিনা বিশ্বাস ইমান ভেংগে ছাড়খার, আঘাত রুখার নেই ক্ষমতা অন্তর ভরতি অহংকার ৷ আপন স্বার্থে আমরা অন্ধ বুঝতে চাইনা অন্যের অধিকার, আছার খেয়ে পা’ ভাংগি পথ চলতে হয়নি তবু হুশিয়ার ৷ মুরগীর বাচ্চা যেমনি করে চিল নেয় জোবল মেরে, আমরা দাঁড়িয়ে সেই বিপর্যয়ে ভাতৃত্বের বন্ধন ছেড়ে ৷
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফিলিস্তিন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ