পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বরিশাল মহানগরীর হরিনাফুলিয়া এরাকার পরেশ চন্দ্র সরকার তার ১৯টি গাছের লাউ বিক্রী করে প্রতি বছর দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা আয় করছেন। শুধুমাত্র নিজের জ্ঞান ও একাগ্রতাকে কাজে লাগিয়ে মাটি ও গাছের সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে সারা বছরই লাউ উৎপাদন করছেন পরেশ। উৎপাদিত লাউয়ের ওজন ও সাইজ ভালো হওয়ায় দামও পাচ্ছেন ভালো। আর ভালো মুনাফা থাকায় তাকে অনুসরন করে সারা বছরই লাউ আবাদে এলাকার অন্য কৃষকরাও এগিয়ে আসছেন ।
কৃষক পরেশ চন্দ্র জানান, নিজস্ব কোন জমি না থাকায় চার বছর আগে হরিনাফুলিয়ায় প্রায় এক একর জমির উপরে থাকা মজা পুকুর লিজ নেন তিনি। পুকুরটি পরিস্কার করে ঘের পদ্ধতিতে লাউ গাছ রোপন করেন। সেখানে ১৯টি গাছের পরিচর্যা করে প্রতি বছর ২ হাজারের বেশী লাউ উৎপাদন করছেন পরেশ বাবু। চার থেকে ৫ কেজি ওজনের লাউ বিক্রি করছেন ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। এ জন্য পুকুরের উপর করেছেন স্থায়ী মাচা। লাউ উৎপাদনে বিরূপ প্রভাবের আশংকায় পরেশ কখনোন লাউয়ের ডগা বিক্রি করেন না।
পরেশ জানান, কৃষকরা মৌসুমে লাউ গাছ লাগিয়ে লাউ উৎপাদন শেষে তা আবার ছয় মাসের মধ্যে কেটে ফেলে। ওই লাউ গাছে ডগাও বিক্রি করে কৃষক। কিন্তু মাটির সাথে সারের পরিমিত ব্যবহার এবং পরিচর্যার ফলে একটি গাছ থেকে বছরের পর বছর লাউ উৎপাদন করা সম্ভব। এ জন্য লাউ গাছ যেভাবে বৃদ্ধি পাবে সেভাবে মাচা তৈরী করে দিতে হবে। যত ডগা ছাড়বে ততই লাউ বড় ও ভালো মানের হবে বলেও জানান তিনি। আর পুরনো ডগা কেটে দিতে হবে। এমনকি লাউ হওয়ার পর পোকামাকরের যাতে সংক্রমনস না হয় সে ব্যবস্থাও করতে হবে। যার ফলে লাউয়ের যে পরিমাণ কড়া বের হবে সবগুলো থেকেই লাউ বড় হবে। কোন কড়া নষ্ট হবে না। পর্যাপ্ত আলো বাতাসেরও ব্যবস্থা থাকতে হবে। এতে করে নতুন গাছের চেয়েও পুরনো গাছের লাউ এর গুনগত মান ভালো হয়ে থাকে। এমনকি লাউ গাছের মাচার নীচে পুকুরে মাছ চাষ করেও লাভবান হওয়া যায় বলে জানায় পরেশ।
সেখানে কর্মরত শ্রমিকরা জানান, মাত্র ১৯টি লাউ গাছ থেকে প্রতি বছর কমপক্ষে ২ হাজারের অধিক লাউ কেটে বিক্রি করা হয়। লাউয়ের মান ভালো হওয়ায় তা বাজারে নেয়ার সাথেই বিক্রি হয়ে যায়। এ বছর লাউ-এর দাম অনেক বেশী। একটি লাউ দেড়শ টাকায়ও পর্যন্তও বিক্রি হয়েছে। সর্বনিম্ন বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায়। যা বিগত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুন। এখন লাউ এর মৌসুমে শেষ হচ্ছে। মৌসুম শেষ হওয়ার পর লাউয়ের দাম আরো বেশী পাবার সম্ভবনা আছে। মৌসুম ছাড়া লাউ হলেও এর স্বাদ একটুও কমে না। মৌসুমে যেরকম স্বাদ থাকে, মৌসুম ছাড়াও একই রকম স্বাদ পাওয়া যায় পরেশ-এর গাছের লাউ থেকে। এর পেছনে নিয়ম মাফিক পরিচর্যা সহ সুষম সার ব্যাবহার অন্যতম কারন বলে জানান পরেশ।
হরিনাফুলিয়ায় বিভিন্ন কৃষির সাথে জড়িত একাধিক কৃষক জানান, কৃষিকাজের প্রতি আমাদের ঝোঁক বেশী। কিন্তু সেভাবে জমি না থাকায় যে সকল জমি পতিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে তা লিজ নিয়ে ফসল উৎপাদন করে আসছি। এ কারণে লভ্যাংশের টাকাটা কমে যাচ্ছে। সরকার থেকে স্বল্প সুদে ঋণ দেয়া হলে একদিকে যেমন পতিত জমি কমে আসবে, তেমনি ফসল উৎপাদনও বেড়ে যাবে। লিজ নিয়ে ফসল উৎপাদন কৃষক সংখ্যাও বাড়বে।
এ ব্যাপারে বরিশাল মেট্রোপলিটন কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফাহিমা হক সাংবাদিকদের জানান, পরেশের এক গাছ থেকে বছরের পর বছর লাউ উৎপাদন এ অঞ্চলের কৃষকদের মাঝে আগ্রহের সৃষ্টি করেছে। তারাও যাতে মৌসুমের দিকে না তাকিয়ে সারা বছর লাউ উৎপাদন করতে পারে সে জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।