পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনার ছোবল সেই সাথে আবহাওয়ার বৈরী প্রভাবের পরও চা উৎপাদনে নতুন রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। চা শিল্পের সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে ঝুঁকি নিয়েও বাগানগুলোতে অব্যাহত রাখা হয়েছিল উৎপাদন। তার সুফলতা ধরা দিচ্ছে উৎপাদনে। ২০২১ সালে চায়ের উৎপাদনে অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে দেশের ১৬৭টি চা বাগান এবং ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান মিলে বছর শেষে ৯ কোটি ৬৫ লাখ ৬ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হয়েছিল, চায়ের ১৬৮ বছরের ইতিহাসে ছিল সর্বোচ্চ উৎপাদন। এর আগে ২০১৯ সালে রেকর্ড উৎপাদন ছিল ৯ কোটি ৬০ লাখ ৬৯ হাজার কেজি। এ বছরও ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে চা উৎপাদনে। চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকলে এ বছরই দেশে ১০০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনে নতুন রেকর্ডে পৌঁছবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ চা বোর্ডের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, এ বছর দেশে ১০ কোটি কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। চলতি বছরের মে পর্যন্ত দেশে মোট চা উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৪৪ হাজার ৭৯ হাজার কেজি। গত বছর একই সময়ে ছিল ১ কোটি ২০ লাখ ৬৯ হাজার কেজি। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে চা উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ ০৭ কেজি। ফেব্রুয়ারিতে ৩৩ হাজার কেজি, মার্চ মাসে ১৫ লাখ ৮৫ হাজার কেজি, এপ্রিলে ৪৯ লাখ ৩৪ হাজার কেজি এবং মে মাসে ৭৪ লাখ ২০ হাজার কেজি।
সংশ্লিষ্টদের তথ্য মতে, বাগান সম্প্রসারণ, নতুন বিনিয়োগ এবং বাগান মালিকদের বিভিন্ন ইতিবাচক পদক্ষেপের কারণে চা উৎপাদন ক্রমশ অগ্রগতি হচ্ছে। সেই সাথে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে চা উৎপাদনে। এর ফলে চা উৎপাদনে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে দেশের বাগানগুলোতে।
বাংলাদেশ চা বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে দেশের বাগানগুলো থেকে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৭ কোটি ৭৭ লাখ ৮০ হাজার কেজি। চা উপযোগী অনুকূল আবহাওয়া ও বাগান পরিচর্যাসহ কার্যকর ব্যবস্থাপনার কারণে গত অক্টোবরেই বাগানগুলো অতিক্রম করে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা। অক্টোবর পর্যন্ত উৎপাদন ছিল ৭ কোটি ৯৩ লাখ ৩৩ হাজার কেজি। আর বছর শেষে রেকর্ড উৎপাদন হয় ৯ কোটি ৬৫ লাখ ৬ হাজার কেজি।
বাগান মালিক সংশ্লিষ্টরা জানান, এখন পুরনো চারা উঠিয়ে নতুন চারা আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। এমনকি পরিত্যক্ত জমিও নিয়ে এসেছেন চা চাষের আওতায়। তবে উৎপাদন বাড়াতে বাগান মালিকদের বেশি পুঁজি বিনিয়োগসহ উৎপাদন বান্ধব কর্ম তৎপরতা চালাচ্ছেন।
বাগান উন্নয়নে অধিকাংশ বাগান মালিক নতুন করে বিনিয়োগ করছেন বলে জানিয়ে কমলগঞ্জের শ্রী গোবিন্দপুর চা বাগানের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রশান্ত কুমার সরকার বলেন, কয়েক বছর থেকেই ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে চা উৎপাদনে। চা বোর্ড থেকে করা হচ্ছে তদারকি। উন্নতমানের চা উৎপাদনে খরচ বেশি হয়। কিন্তু বাজারে নিম্নমানের চা বেশি থাকায় উন্নতমানের চায়ের মিলছে না উপযুক্ত দাম। তার অভিযোগ, ভারত থেকে অবৈধভাবে দেশে নিম্নমানের চা প্রবেশ করায় দেশি এ সম্ভাবনাময় আদি শিল্প মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
চা সংসদ সিলেট অঞ্চলের সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ শিবলী বলেন, উৎপাদন বাড়াতে চা বাগান মালিকরা পরিমাণ বাড়িয়েছেন বিনিয়োগের। বছরের শেষদিকে চা উৎপাদনের উপযোগী আবহাওয়ার কারণে উৎপাদন বাড়ে। জুন থেকে পর্যায়ক্রমে উৎপাদন বাড়তে থাকে। উৎপাদনের এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি বছর ২০২২ সালে বাংলাদেশ ১০ কোটি (১০০ মিলিয়ন) কেজি চা উৎপাদনের তালিকায় স্থান করে নেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বাংলাদেশ চা বোর্ডের তথ্যমতে, ২০২১ সালে দেশের চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৭ কোটি ৭৭ লাখ ৮০ হাজার কেজি। বছর শেষে রেকর্ড উৎপাদন হয় ৯ কোটি ৬৫ লাখ ৬ হাজার কেজি। ২০২০ সালে দেশে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ কোটি ৫৯ লাখ ৪০ হাজার কেজি, উৎপাদন হয়েছিল ৮ কোটি ৬৩ লাখ ৯৪ হাজার কেজি। ২০১৯-এ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ কোটি ৪১ লাখ ৪০ হাজার কেজি, উৎপাদন হয় ৯ কোটি ৬০ লাখ ৬৯ হাজার কেজি। ২০১৮-এ লক্ষ্যমাত্রা ৭ কোটি ২৩ লাখ ৯০ হাজার কেজি, উৎপাদন হয় ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার কেজি। ২০১৭-এ লক্ষ্যমাত্রা ৭ কোটি ৬ লাখ ৮০ হাজার কেজি, উৎপাদন ৭ কোটি ৮৯ লাখ ৪৯ হাজার কেজি।
উল্লেখ্য, ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালিনীছড়া চা বাগানের মাধ্যমে প্রথম বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চা চাষ শুরু হয়। বর্তমানে চা বোর্ডের নিবন্ধিত ১৬৭টি বাগান রয়েছে। এর মধ্যে মৌলভীবাজারে ৯১টি, হবিগঞ্জে ২৫টি, সিলেটে ১৯টি, চট্টগ্রামে ২২টি, পঞ্চগড়ে সাতটি, রাঙামাটিতে দুটি ও ঠাকুরগাঁওয়ে একটি চা বাগান রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।